শাকিবের আইটেম কন্যা নুসরাতের ঈদটা স্পেশাল
Published: 30th, March 2025 GMT
ঢালিউড কিং শাকিব খানের আলোচিত সিনেমা ‘বরবাদ’। ঈদুল ফিতরে মুক্তি পাবে প্রতীক্ষিত এই সিনেমা। গত ২৮ মার্চ মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটির আইটেম গান ‘চাঁদ মামা’। এ গানে শাকিবের সঙ্গে কোমর দুলিয়ে নজর কেড়েছেন ওপার বাংলার অভিনেত্রী নুসরাত জাহান।
এবারের ঈদটা নুসরাত জাহানের কাছে ভীষণ স্পেশাল বলে জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। বেশ কিছু কারণে স্পেশাল বলে তার ব্যাখ্যাও করেছেন।
নুসরাত জাহান বলেন, “এ বছরের ঈদ আমার ভীষণ স্পেশাল। প্রথমত, আমাদের সিনেমা ‘আড়ি’ আসছে। দ্বিতীয়ত, আমার আর শাকিব খানের যে গানটি মুক্তি পেয়েছে, তার রেসপন্স খুব ভালো। তৃতীয়ত, আমার প্রথম হিন্দি ‘সিঙ্গেল’ মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে এই ঈদে একঝাঁক চমক।”
আরো পড়ুন:
প্রবাসীদের শাকিবের ঈদের শুভেচ্ছা
প্রকাশ্যে ‘চাঁদ মামা’, নেটিজেনরা বলছেন ‘আগুন’
ঈদের দিনের পরিকল্পনা জানিয়ে নুসরাত জাহান বলেন, “প্রতি বছরের মতো এবারো সকালে মেয়েদের সঙ্গে ঈদের নমাজ পড়ব। তারপর পরিবারের সঙ্গে সারাদিন থাকব। ঈদের দিন কোনো কাজ রাখি না। এই বছরের ঈদ আরো বেশি স্পেশাল। কারণ আমার বোন এসেছে। ও বিদেশে পড়াশোনা করেছে। এখন ওখানেই চাকরি করে। খুব সুন্দর একটা সময় কাটাব বলে মুখিয়ে রয়েছি।”
নায়ক যশের সঙ্গে সংসার বেঁধেছেন ননুসরাত জাহান। এ সংসারে তাদের ঈশান নামে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। এ বিষয়ে নুসরাত বলেন, “এই আনন্দ বোঝার জন্য ঈশান এখন অনেকটা ছোট। তবে ও দুর্গাপূজায় যতটা এক্সাইটেড থাকে, ক্রিসমাসেও তাই। আবার ঈদেও তার অন্যথা নয়। ঈশানকে শিখিয়েছি, ঈদের দিন সবাইকে ঈদ মোবারক বলতে হয়। ঠিক অন্যান্য উৎসবেও একইভাবে বোঝাই। আমি চাই সবরকম ধর্মের সঙ্গে ওর পরিচয় হোক।”
শাকিব-নুসরাতের ‘চাঁদ মামা’ গান রচনা, সুর, সংগীতায়োজন করেছেন প্রীতম হাসান, কণ্ঠ দিয়েছেন প্রীতম ও দোলা।
‘বরবাদ’ সিনেমায় শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন কলকাতার ইধিকা পাল। দ্বিতীয়বারের মতো জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হতে যাচ্ছেন এই যুগল। তা ছাড়াও সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন— যীশু সেনগুপ্ত, মিশা সওদাগর, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু প্রমুখ। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন শাহরিন আক্তার সুমি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
গন্ধগোকুলের বাঁচার লড়াই
দেশের অনেক এলাকা থেকেই গন্ধগোকুল হারিয়ে গেছে; কিন্তু পাবনার বেড়া পৌর এলাকার কয়েকটি মহল্লায় এখনো এ প্রাণীর বিচরণ চোখে পড়ে। তবে আগের মতো অত বেশি দেখা যায় না। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোটের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী এগুলো ‘বিপদাপন্ন’ প্রাণী।
প্রাণীটির আসল নাম গন্ধগোকুল হলেও বেড়া উপজেলায় এটি ‘নেল’ নামে পরিচিত। অনেকে এগুলোকে বাগডাশও বলেন। এর শরীর থেকে পোলাও চালের গন্ধের মতো মিষ্টি গন্ধ ছড়ায়। সন্ধ্যার পর অন্ধকার নামলে পৌর এলাকার বিভিন্ন বাড়ির ঘরের চাল ও গাছের ওপর দিয়ে শুরু হয় এর চলাচল। এ সময় এর শরীরের গন্ধ উৎপাদনকারী গ্রন্থি থেকে রস নিঃসৃত হতে থাকে বলে যে স্থান দিয়েই এরা যাক না কেন, বেশ কিছুক্ষণ ধরে সেখানে সেই গন্ধ নাকে আসে। তখন মহল্লার বাসিন্দারা বুঝতে পারেন, আশপাশে হয়তো গন্ধগোকুল আছে, নয়তো একটু আগেই আশপাশ দিয়ে গেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই গন্ধগোকুল বা নেল নামের প্রাণীটির সঙ্গে বেড়া পৌরবাসীর সম্পর্ক। বেশির ভাগ বাসিন্দার কাছেই প্রাণীটি বেশ পছন্দের। তবে অল্প কিছু মানুষ এগুলোকে অপছন্দ করেন গৃহপালিত হাঁস-মুরগি, কবুতর ধরে নিয়ে যাওয়ার কারণে। তবে গত ১০-১২ বছরের মধ্যে পৌরবাসী এই প্রাণীকে ফাঁদ পেতে ধরেছেন বা এগুলোর কোনো ক্ষতিসাধন করেছেন বলে শোনা যায় না।
বন্য প্রাণী ও পরিবেশবিশেষজ্ঞদের মতে, গন্ধগোকুল প্রকৃতির উপকারী একটি নিশাচর প্রাণী। গন্ধগোকুল ব্যাঙ, ইঁদুরসহ ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে উদ্ভিদের বংশবৃদ্ধিতে দারুণ ভূমিকা রাখে; কিন্তু ভুল ধারণার কারণে অনেকেই প্রাণীটির জীবন হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন। একটি সময় ছিল, যখন এগুলোকে দেশের প্রায় সর্বত্রই— বনাঞ্চল বা বনসংলগ্ন ঝোপঝাড় বা গ্রামাঞ্চলে দেখা যেত। তবে এখন এগুলো বিলুপ্তির পথে।
গন্ধগোকুল তাল ও খেজুরের রস পান করে, ইঁদুর, ছোট পাখি ও পোকামাকড় প্রভৃতি খেয়ে জীবনধারণ করে; কিন্তু কখনো কখনো গৃহপালিত হাঁস-মুরগি বা কবুতর ধরে নিয়ে যায় বলে মানুষ এগুলো ফাঁদ পেতে ধরে হত্যা করে। আবার অনেক সময় রাস্তা পারাপারের সময় গাড়িচাপায়ও মারা যায়। এতে এগুলোর অস্তিত্ব কিছুটা হুমকির মুখে পড়েছে। এগুলোকে বিপদাপন্ন বলা যেতে পারে।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গন্ধগোকুলের রয়েছে বিশেষ এক ভূমিকা। খাদ্যশৃঙ্খলের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান প্রাণীটির। এগুলো মূলত ক্ষতিকর পোকামাকড় ও ফলমূল খেয়ে এর বীজ বিস্তারের মাধ্যমে পরিবেশের প্রচুর উপকার সাধন করে। যেমন বটের ফল বা অন্যান্য ফল যখন খায়, তখন এর মলের দ্বারা নির্গত সেই বীজগুলো সফল উদ্ভিদে পরিণত হয়। অর্থাৎ এর পেটের ভেতর দিয়ে ফলের বীজগুলো গজানোর উপযুক্ত পরিবেশ (জার্মিনেশন) পায় বলে তা পরবর্তী সময়ে বীজের অঙ্কুরোদ্গমে শতভাগ কার্যকর হয়ে থাকে।
বছরে সাধারণত দুবার প্রজনন করে। গর্ভধারণকাল দুই মাসের কিছু বেশি। পুরোনো গাছের খোঁড়ল, গাছের ডালের ফাঁক, পরিত্যক্ত ঘর, ধানের গোলা বা তাল-সুপারির আগায় ছানা তোলে। সাধারণত প্রতিবারই ছানা হয় তিনটি।
বেড়ার মনজুর কাদের মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, ‘দেশের অনেক এলাকা থেকেই গন্ধগোকুল বিলুপ্ত হতে বসেছে। তবে বেড়া পৌর এলাকায় এগুলোর বিচরণ যেমন কিছুটা বেশি, তেমনি পৌরবাসীও এগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল।’
প্রাণীটির ছবি তুলে রাজশাহী বিভাগীয় বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবিরের কাছে পাঠালে তিনি সেটিকে ‘বাগডাশ’বলে শনাক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রাণীটির অস্তিত্ব এখনো দেশের বিভিন্ন জায়গায় আছে। এর মধ্যে বেড়া পৌর এলাকায় এগুলোর বিচরণ কিছুটা বেশি বলে শুনেছি।’
বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বাগডাশ বা গন্ধগোকুল মানুষের কাছাকাছি থাকে; কিন্তু মানুষ দেখলে খুবই ভয় পায়। খুবই লাজুক স্বভাবের প্রাণী এটি। আবাসভূমি ধ্বংস ও হাঁস-মুরগি বাঁচানোর জন্য ব্যাপক নিধনের কারণে এগুলো এখন বিপন্ন। তবে প্রাণীটি কিন্তু প্রকৃতির বন্ধু। তাই সবারই উচিত এগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া।