ফিলিস্তিনে ঈদের দ্বিতীয় দিনেও গাজার বাসিন্দাদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। সোমবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা অনলাইন।

গাজা উপত্যকার  নুসিরাত এবং নেটজারিম করিডোরের খুব কাছাকাছি অঞ্চলে গোলা হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। দেইর এল-বালাহে বিস্ফোরণ শোনা গেছে এবং এই অঞ্চলে তিন কৃষক নিহত হয়েছেন। সিভিল প্রতিরক্ষা দল ও প্যারামেডিকসের মতে, তাদের দেহগুলো পুনরুদ্ধার করা খুব বিপজ্জনক।

জাবালিয়ার শরণার্থী শিবিরের কাছে নিহত হয়েছে তিন জন। সেন্ট্রাল গাজার আজ-জাওয়দা এবং মাগাজি শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের সামরিক হামলা কমপক্ষে দুজন নিহত হয়েছে। মাগাজি শরণার্থী শিবিরে নিহত ফিলিস্তিনির মরদেহ আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এর আগে ভোররাতে খান ইউনিসে সিরিজ হামলা চালিয়ে ৯জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

এদিকে, দক্ষিণ শহর রাফাহতে স্থানীয়দের বাস্তুচ্যুতির নির্দেশ জারি করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এখানে শিগগিরই যৌথ অভিযান শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র অ্যাভিচয়ে অ্যাড্রাই জানিয়েছেন,  রাফাহ,  নাসার এবং আশ-শাওকার নিকটবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের আল-মাওয়াসিতে পালিয়ে যাওয়া উচিত।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান

১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।

কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!

দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।

কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।

আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।

অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।

এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।

একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।

বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান

সম্পর্কিত নিবন্ধ