ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ নেই মোদির টুইটে
Published: 3rd, April 2025 GMT
বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন (বিমসটেক) সম্মেলনে যোগ দিতে আজ বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে টুইট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি কোন কোন দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবেন সে তথ্যও জানিয়েছেন মোদি। তবে সেখানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.
আজ সকাল ৭টা ৭ মিনিটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর এক্সে (সাবেক টুইটার) এ তথ্য জানিয়েছেন। মোদি সেখানে লেখেন, ‘আগামী তিন দিন আমি থাইল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা সফর করব। এ সময় থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা এবং বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেব।’
তিনি আরও জানান, ‘আজ ব্যাংককে আমি দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে দেখা করব এবং ভারত-থাইল্যান্ড বন্ধুত্বের পূর্ণাঙ্গ পরিসর নিয়ে আলোচনা করব। আগামীকাল আমি বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেব এবং রাজা মহা ভাজিরালংকর্নে সঙ্গেও দেখা করব।’
এর আগে গত বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বৈঠকের সম্ভাবনার কথা জানান। তিনি বলেন, বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে সরকারপ্রধানদের বৈঠক সুবিধাজনক সময়ে হয়ে থাকে। বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে বিভিন্ন দেশের নেতাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা। আশা করা যাচ্ছে, নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক হবে। আমাদের আশাবাদী হওয়ার কারণ আছে, যতক্ষণ পর্যন্ত বৈঠক না হচ্ছে, এ প্রসঙ্গে আমরা আগ বাড়িয়ে কিছু বলব না।
তিনি জানান, বিমসটেক সম্মেলনের শেষ দিনে শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রধান উপদেষ্টা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। আগামী দুই বছরের জন্য এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি চীন সফরের সময় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য প্রসঙ্গে খলিলুর রহমান বলেন, ‘কানেকটিভিটি এ অঞ্চলের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে, বিশেষ করে যাদের জন্য সমুদ্রে যোগাযোগ খুব কঠিন। আমরা কানেকটিভিটি জোর করে চাপিয়ে দেব না, সেটি করার মতো অবস্থাও আমাদের নেই। কেউ যদি নেয় খুব ভালো, না নিলে কী করব আমরা, কিছু করার নেই। প্রধান উপদেষ্টা এ কথা আগেও বলেছিলেন। অত্যন্ত সৎ-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কথাই প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। এর ব্যাখ্যা যদি অন্য রকম দেওয়া হয়, আমরা সেই ব্যাখ্যা ঠেকাতে পারছি না। আমরা শুধু সবার সমান লাভের জন্য কানেকটিভিটি দিতে আগ্রহী আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ২০১২ সালে একই ধরনের কথা বলেছিলেন। এর চেয়ে একটু এগিয়ে গিয়ে ২০২৩ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে বলেছিলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং বাংলাদেশকে একটা ভ্যালু চেইনে আবদ্ধ করা যেতে পারে। তিনি একক অর্থনৈতিক অঞ্চলের কথাও বলেছিলেন। এটিকে বিগ বে ইনিশিয়েটিভ বলে গণ্য করা হয়।’
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে খলিলুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গা নিয়ে অনেক দেশের সঙ্গে অনেক কথাই হয়। সব কথা আমরা বলতে পারি না। এ জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।’ এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স বল ছ ল ন ব মসট ক
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।