ঢাকার বাজারে মুরগি–গরুর মাংসের দাম কমেছে, বেড়েছে কিছু সবজি ও মাছের দাম
Published: 4th, April 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো এখনো অনেকটাই ফাঁকা। বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ; পণ্যের সরবরাহও কম। এমন ঢিলেঢালা বাজারে কমেছে মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। তবে কিছু সবজি ও মাছের দাম বেড়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেওড়াপাড়া, আগারগাঁওয়ের তালতলা বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
বিক্রেতারা জানান, ঈদের বন্ধ থাকায় এখনো অনেক মানুষ ঢাকায় ফেরেননি। এ কারণে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি ও বেচাকেনা কম।
গতকাল বেলা ১১টায় মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, তিন-চারটি ছাড়া প্রায় সব মুদিদোকান বন্ধ। মাছ ও মাংসের বাজারেও অর্ধেক দোকান বন্ধ। তবে বেশির ভাগ সবজির দোকান খোলা। টাউন হল বাজারেও একই চিত্র দেখা গেল।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, চাহিদা কম থাকায় মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কমেছে। আবার কিছু সবজির সরবরাহ কমায় সেগুলোর দাম বেড়েছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে অর্থাৎ ঈদের আগে এই মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকার মতো বেশি ছিল। আর চাঁদরাতে ব্রয়লারের দাম উঠেছিল ২৪০ টাকা পর্যন্ত। সোনালি মুরগির দামও কমেছে। গতকাল এক কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ৩১০ টাকায়। ঈদের আগে দাম ছিল ৩২০-৩৩০ টাকা কেজি।
ঈদের সময় গরুর মাংসের চাহিদা বাড়ে। এ কারণে দামেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। এবার ঈদের আগে গরুর মাংসের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছিল। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয় ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। কোনো কোনো বাজারে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত দাম নেওয়া হয়। তবে ঈদের পর কেজিতে ৫০ টাকা কমেছে। গতকাল বাজারভেদে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়।
কিছু মাছের দাম বেড়েছে
বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। এতে নদীর কিছু মাছের দাম বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চিংড়ি মাছের দাম। গতকাল প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে। এ ছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। তবে রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশ আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। গতকাল প্রতি কেজি চাষের রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের মাছ বিক্রেতা শ্যামল রাজবংশী বলেন, ঈদের বন্ধের মধ্যে ঢাকায় মাছের সরবরাহ কম। এ কারণে নদীর মাছের চাহিদা বেড়েছে; দামও বেড়েছে। তবে বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় বিক্রেতারা সীমিত লাভে মাছ বিক্রি করছেন বলে দাবি করেন তিনি।
দু-তিন দিন ধরে বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে। এ কারণে কাঁচা মরিচ, টমেটো, পেঁপেসহ কিছু সবজির দাম বেড়েছে। আগের মতোই চড়া লেবু ও শসার দাম। গতকাল প্রতি কেজি টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহ দুই আগে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ২০-৩০ টাকায়। পেঁপে ও কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ২০ টাকার মতো বেড়েছে। গতকাল প্রতি কেজি পেঁপে ৬০ টাকা এবং মরিচ ৭০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সরবর হ ক ৫০ থ ক ৫০ ট ক সবজ র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।