সরকারি–বেসরকারি উদ্যোগে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে
Published: 5th, April 2025 GMT
আমাদের সার্বিক অর্থনৈতিক কৌশলের মধ্যে রপ্তানি বাণিজ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা—তিন দিক থেকেই রপ্তানির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। সে দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের হঠাৎ শুল্ক বৃদ্ধি দেশের জন্য উদ্বেগের বিষয়। কারণ, দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রই আমাদের সবচেয়ে বড় বাজার। ফলে সঠিকভাবে পাল্টা শুল্কের বিষয়টি মোকাবিলা করা না গেলে রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
প্রথমেই একটা দুর্বলতার কথা বলি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বছর নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই বলে আসছিলেন, তিনি শুল্ক বাড়াবেন। ফলে গত নভেম্বরে ট্রাম্পের জয়ের পরেই আমাদের এ বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত ছিল। ভারত সেটি করেছে। কয়েক সপ্তাহ আগে তারা কয়েকটি মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক বিশেষভাবে কমিয়েছে। এ কারণে তাদেরও শুল্ক বাড়লেও তা আমাদের চেয়ে অনেক কম। এভাবে আরও কয়েকটি দেশ কাজ করেছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দৃশ্যমান কোনো প্রস্তুতি আমরা দেখিনি।
যাহোক, এখনো বিষয়টিকে কৌশলে ও ত্বরিতগতিতে মোকাবিলার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য সরকারি–বেসরকারি অংশীজনদের নিয়ে কার্যকর কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। আমার বিবেচনায় যৌথভাবে দুটি উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। প্রথমটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক; দ্বিতীয়টি হচ্ছে বাজারভিত্তিক সম্পৃক্ততা বাড়ানো। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এসব উদ্যোগ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
আমার বিবেচনায় যৌথভাবে দুটি উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। প্রথমটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক; দ্বিতীয়টি হচ্ছে বাজারভিত্তিক সম্পৃক্ততা বাড়ানো। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এটি করতে হবে।মাসরুর রিয়াজ, চেয়ারম্যান, পলিসি এক্সচেঞ্জউদ্ভূত পরিস্থিতিতে সমাধান হিসেবে ঢালাওভাবে বিভিন্ন মার্কিন পণ্যে শুল্ক কমানো সঠিক পন্থা হবে না। বরং তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশা ও মনোভাব বুঝে আমাদের বাস্তবতাভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আমরা দেখছি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাপানের মতো বড় বন্ধুরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও শুল্ক বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে বাংলাদেশের জন্য তারা আলাদাভাবে খুব শিগগির ছাড় না–ও দিতে পারে। এ জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলোচনার পাশাপাশি আমাদের বাজারভিত্তিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর পথে যেতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে আমরা সাধারণত নিম্ন ও মাঝারি মূল্যের পণ্য রপ্তানি করি। এসব পণ্যের দাম দেশটির খুচরা বিক্রেতারাও বাড়াতে চাইবে না। বরং তারা বাড়তি শুল্ক এককভাবে ঘাড়ে না নিয়ে তা রপ্তানিকারকদের ঘাড়ে দিতে চাইবে। এ জন্য ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে কোন প্রক্রিয়ায় শুল্কের বোঝা পরস্পর ভাগ করে নিলে সব পক্ষই লাভবান থাকতে পারে, সে অনুযায়ী কৌশল নির্ধারণ করা যেতে পারে। এটি করা গেলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার লম্বা সময় বাড়তি শুল্ক ধরে রাখলেও আমাদের তেমন সমস্যা হবে না।
মধ্যম মেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে বাণিজ্য ও রপ্তানির খরচ কমাতে হবে। কারণ, বাংলাদেশে ব্যবসার খরচ অন্য যেকোনো প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বেশি। এ ছাড়া প্রযুক্তির ব্যবহার ও দক্ষতার ঘাটতি থাকায় রপ্তানি খাতে উৎপাদনশীলতাও কম। সার্বিকভাবে ব্যবসায়ের ব্যয় কমানো গেলে আমরা অনেক মূল্য ছাড় দিতে পারব। এর মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে (এলডিসি) উত্তরণ–পরবর্তী চাপ মোকাবিলার জন্যও একধরনের প্রস্তুতি হয়ে যাবে।
মাসরুর রিয়াজ, চেয়ারম্যান, পলিসি এক্সচেঞ্জ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র স র সরক র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
৬০ হাজার ৮০২ টন গম নিয়ে দেশে এল যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় জাহাজ
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত ৬০ হাজার ৮০২ মেট্রিক টন গম নিয়ে এমভি স্পার এরিস নামের জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে।
সোমবার (২ নভেম্বর) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
আমি থাকাকালে তাইওয়ানে হামলার ‘পরিণতি কী হবে’ চীন জানে: ট্রাম্প
ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র: ট্রাম্প
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় দেশের সরকারে মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আলোকে জি টু জি ভিত্তিতে এ আমদানি প্রক্রিয়া শুরু হয়। বাংলাদেশের খাদ্য অধিদপ্তর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) চুক্তিটি সই করে। এর আওতায় মোট ৪ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করা হবে।
জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ২৫ অক্টোবর প্রথম চালান হিসেবে ৫৬ হাজার ৯৫৯ মেট্রিক টন গম বাংলাদেশে পৌঁছায়।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ