জয়পুরহাটে বাজারের ৭ নৈশপ্রহরীকে বেঁধে ‘ডাকাতি’, মাল নিয়ে ট্রাকে করে পলায়ন
Published: 5th, April 2025 GMT
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে একটি গ্রামীণ বাজারের অন্তত চারটি দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মালিকদের দাবি, নৈশপ্রহরীদের বেঁধে ডাকাত দল ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে মিনি ট্রাকে নিয়ে পালিয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার মোহনপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
মোহনপুর বাজারের কয়েকজন দোকানি বলেন, গতকাল রাতে সাতজন নৈশপ্রহরী নিজেদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। রাত তিনটার দিকে রফিকুল ইসলাম নামের এক প্রহরী কালো মুখোশ পরা চার ব্যক্তিকে বাজারের সড়কে ঘোরাঘুরি করতে দেখে বাঁশি বাজান। ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তখন রফিকুলের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে তাঁর মাথা ফেটে রক্ত ঝরছিল। এ অবস্থায় তাঁকে বেঁধে একটি দোকানের পাশে রাখা হয়।
এরপর ২০-২৫ জন মিলে বাজারের অন্য ছয় প্রহরীকে ধরে এনে মারধরের পর হাত-পা বেঁধে একই জায়গায় ফেলে রাখে। এ সময় ৪-৫ জন ডাকাত আহত নৈশপ্রহরীদের ঘিরে রাখে। আর অন্যরা বাজারের সড়কে একটি মিনি ট্রাক এনে রাখে। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা দুটি কীটনাশক, একটি মুদিখানা ও একটি ইলেকট্রনিক দোকানের তালা কেটে মালামাল লুট করে। পরে সেগুলো মিনি ট্রাকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায়।
প্রহরী রফিকুল ইসলামের ভাষ্য, হলুদ রঙের মিনি ট্রাকে পালিয়ে যাওয়ার আগে ডাকাতেরা তাঁর হাতের বাঁধন খুলে দেয়। এরপর তিনি অন্যদের মুক্ত করেন। তাঁরা আশপাশের লোকজনকে ঘটনাটি জানান।
স্বাদ ট্রেডার্স নামের কীটনাশকের দোকানের মালিক ছানাউল ইসলাম বলেন, ‘শুধু আমার দোকানের ৬-৭ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে। চারটি দোকান মিলিয়ে আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট হয়েছে।’
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, মোহন বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী থানায় এসেছিলেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। অভিযোগের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রহর
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ, চালু হলো ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার
সংস্কার শেষে ফেনীর দ্বিতীয় কারাগার চালু হয়েছে। আজ শনিবার সকালে বন্দীদের ফুল দিয়ে বরণ করার মধ্য দিয়ে এ কারার যাত্রা শুরু হয়। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের আটটি কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ও ফেনী জজ আদালতে বিচারাধীন মামলার আসামিদের রাখা হবে।
কারা সূত্র জানায়, দেশের পুরোনো চারটি কারাগারের মধ্যে ফেনী-২ কারাগার একটি। শত বছরের পুরোনো এ কারাগার ভবন ছিল জরাজীর্ণ। এ কারণে ২০১৯ সালে ১২ জানুয়ারি এ কারাগার থেকে বন্দীদের ফেনীর শহরতলির রানীরহাট এলাকার নতুন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে কারাগারটি অনেকটা ‘পরিত্যক্ত’ অবস্থায় ছিল।
নতুন করে চালু হওয়া কারাগারটির অবস্থান ফেনী শহরের মাস্টারপাড়ায়। এটি ১৯১৫ সালে সাবজেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৮ সালে জেলা এটিকে কারাগারে উন্নীত হয়। এ কারাগারের বর্তমান ধারণক্ষমতা ১৭২ জন। এর মধ্যে ১৭০ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। কারাগার চালু করার জন্য গতকাল কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন ও চট্টগ্রাম থেকে চারজন বন্দীকে আনা হয়েছিল। তাঁরা সবাই সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত। এ কারাগারে তাঁরা রান্নার দায়িত্বে থাকবেন।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ধাপে ধাপে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন বন্দীদের ফেনীর দ্বিতীয় কারাগারে আনা হবে। আপাতত এতে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ২৬ জন, কুমিল্লা থেকে ৭৪ জন, নোয়াখালী থেকে ১৫ জন, লক্ষ্মীপুর থেকে ৪ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ৩৩ জন বন্দী এখানে স্থানান্তর করা হবে। এতে সেল, রান্নাঘর, কিশোর ওয়ার্ড, মসজিদসহ প্রয়োজনীয় সুবিধা রয়েছে। এ কারাগার নিয়ে বর্তমানে দেশে কারার সংখ্যা ৭১।
জানতে চাইলে ফেনী-২–এর জেল সুপার মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘রাষ্ট্র চায়, কারাগার শুধু শাস্তির জায়গা নয়, সংশোধনের কেন্দ্র হোক। এরই অংশ হিসেবে সংস্কার শেষে ফেনী কারাগার-২ চালু হয়েছে।’
কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার ফেরদৌস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ কারাগারে স্থানান্তরিত বন্দীদের সব সুযোগ-সুবিধা ইতিমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও প্রশিক্ষিত নার্সও যোগদান করেছেন। বেশির ভাগ পদে কর্মচারীরাও কাজ শুরু করেছেন।’