শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রস্তাবে মোদি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাননি: প্রেস সচিব
Published: 5th, April 2025 GMT
বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতিক্রিয়া নেতিবাচক ছিল না।
আজ শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আমরা আশাবাদী, হাসিনাকে একদিন ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হবে এবং আমরা শতাব্দীর সবচেয়ে আলোচিত বিচার দেখতে পাব।’
চলতি মাসের ২ থেকে ৪ তারিখ পর্যন্ত থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার সম্মেলনের ফাঁকে অধ্যাপক ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি ৪০ মিনিট বৈঠক করেন।
ফেসবুকে শফিকুল আলম আরও লেখেন, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি অত্যন্ত সম্মান প্রদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি অধ্যাপক ইউনূসের কাজের প্রশংসা করেন।
বৈঠকে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘যদিও ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনার সম্পর্ক ভালো ছিল। তবে আমরা আপনার প্রতি তাঁর অসম্মানজনক আচরণ দেখেছি; কিন্তু আমরা আপনাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো অব্যাহত রেখেছিলাম।’
শফিকুল আলম লিখেছেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের একটি নতুন দিকচিহ্ন তৈরি করতে চায়, এটা স্পষ্ট। বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বারবার অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘ভারতের সম্পর্ক বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে, কোনো নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তির সঙ্গে নয়।’
প্রেস সচিব লেখেন, অধ্যাপক ইউনূস সাম্প্রতিক সময়ে কয়েক মাসে বহুবার বলেছেন, ‘আমরা চাই, ভারতের সঙ্গে সর্বোত্তম সম্পর্ক। তবে এই সম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা, সাম্য এবং পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।