নাটোরে কলেজশিক্ষক ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা প্রান্তজনের সম্পাদক সাজেদুল ইসলামের (সেলিম) ওপর হামলার ঘটনায় বিএনপির এক নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গতকাল রোববার রাতে সদর উপজেলার চন্দ্রকলা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আক্কাস আলী এবং মূল অভিযুক্ত ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী আবদুর রউফ (ওহাব)।

সদর থানা সূত্রে জানা যায়, সাজেদুল ইসলামকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গতকাল রাত ৯টার দিকে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। এর কিছুক্ষণ আগে যৌথ বাহিনী চন্দ্রকলা এলাকা থেকে আবদুর রউফ ও আক্কাস আলীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। আজ সোমবার সকালে তাঁদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব রহমান বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষকের পরিবারের পক্ষ থেকে করা মামলায় সাত আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ১০-১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে। গ্রেপ্তার দুজন এজাহারভুক্ত আসামি। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুননাটোরে পত্রিকার সম্পাদকের দুই হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে১৫ ঘণ্টা আগে

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গতকাল দুপুরে কলেজ থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন সাজেদুল ইসলাম। চন্দ্রকলা বাজার এলাকায় আসামাত্র তাঁর ওপর হামলা চালান আবদুল ওহাব ও তাঁর লোকজন। সাজেদুল কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি। নতুন কমিটি গঠন করা নিয়ে তাঁকে দোষারোপ করছিলেন আবদুল ওহাব। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না সাজেদুল। হামলার পরে তাঁকে উদ্ধার করে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই 

ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।

এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।

এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ