লক্ষ্মীপুরে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত ২০
Published: 7th, April 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষে একজন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের খাসেরহাট বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষ হয়। এতে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহত হন ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি হানিফ দেওয়ানের ছোট ভাই সাইজ উদ্দিন দেওয়ান। আহতদের মধ্যে বিএনপি কর্মী আবু খানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকেসহ ৪ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব শামীম গাজী ও বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ফারুক কবিরাজের মধ্যে দলে আধিপত্য, মাছঘাট, মেঘনার চর এবং কাঁচাবাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্তেজনা চলছিল। সোমবার সকাল থেকে দু’পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল। বিকেলে ফারুক কবিরাজের ভাই মেহেদী কবিরাজের নেতৃত্বে লোকজন বাজারের নতুন সেতুর পাশ থেকে শামীম গাজী পক্ষের সাইজ উদ্দিন ও আবু খানকে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর ও কুপিয়ে আহত করে। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক সাইজ উদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই আবু খানসহ চারজনকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষের পর খাসেরহাট এলাকায় কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। আতঙ্কে অনেক পরিবার এলাকা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত এল ক য় স ঘর ষ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্দিককে মারধর ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি
শোবিজের একঝাঁক একঝাঁক অভিনয়শিল্পীকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি করা হয়েছে। প্রথমে ইরেশ যাকের, তারপর সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নুসরাত ফারিয়া, নিপুণসহ ১৭ অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ্যে এসেছে। এরই মধ্যে গতকাল অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রাজধানীর রমনা থানায় সোপর্দ করা হয়। এসব বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা চলছে। এ নিয়ে অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি আজাদ আবুল কালাম নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
সিদ্দিকের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা ঘটনা নিয়ে আজাদ আবুল কালাম গণমাধ্যমে বলেন, “সিদ্দিকের সঙ্গে যা ঘটেছে, এটা তো মব। এই মব ভায়োলেন্সকে তো ঠেকাচ্ছে না। কেন যেন মনে হচ্ছে, মব ভায়োলেন্সকে নীরবে বলা হচ্ছে, করে যাও। আমাদের কিছুই করার নেই। একজনের রাজনৈতিক চিন্তাচেতনা থাকতে পারে। অভিনেতা হিসেবে সিদ্দিক সবার কাছে পরিচিত। কিছু লোক তাকে এভাবে রাস্তায় ধরে মেরে দেবে!”
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে আজাদ আবুল কালাম বলেন, “দলবদ্ধভাবে সিদ্দিককে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে, আক্রমণ করেছে, গায়ে থেকে জামাকাপড় খুলে ফেলেছে, এরপর থানায় সোপর্দ করেছে। থানায় যদি সোপর্দ করতেই হয়, তাহলে প্রথমে কেন আইন হাতে তুলে নিল? তাকে হেনস্তা করে আইনের হাতে তুলে দেবে— এই মব জাস্টিস, মব ভায়োলেন্স সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে। এটা তো একটা সময় নানা স্তরে হবে। এসব কর্মকাণ্ড সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে, যেখানে মব ভায়োলেন্স, সেখানে কঠোর হস্তে দমন করবে।”
ঢালাওভাবে অভিনয়শিল্পীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের বিষয়ে বিস্মিত আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, “ঢালাওভাবে হত্যা মামলা হচ্ছে! দেখে মনে হচ্ছে, সবাইকে মামলার মধ্যে ফেলতে হবে। ৩০০-৪০০ জন মামলার আসামি, এটা অবাস্তব একটা অবস্থা। একজন সুবর্ণা মুস্তাফার মতো শিল্পী রাস্তায় গিয়ে মানুষকে গুলি করবে? যে মানুষটি মামলা করেছেন, তিনি আন্দোলনের সময় আহত হয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন; তিনি মামলা করেছিলেন অনেক লোকের নামে। মামলার নথিতে শিল্পীদের অনেকের নাম দেখলাম, তারা রাস্তায় নেমে মানুষকে গুলি করবে!”
সরকারিভাবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা উচিত বলে মনে করেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, “সরকারিভাবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও উচিত হবে এ ধরনের মামলাকে প্রতিরোধ করা। নিরুৎসাহিত করা। যে ব্যক্তি মামলা করছেন, যদি প্রমাণিত হয়, শিল্পীরা কেউই গুলি করেনি, তখন তো এটা মিথ্যা মামলা হবে। এ রকম মিথ্যা মামলার ক্ষেত্রে, যে ব্যক্তি শিল্পীদের নামে মামলা করেছেন, তার কী শাস্তি হবে, তারও বিধান থাকতে হবে।”
“কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে, তা জানানোর একটা প্রক্রিয়া আছে। শুধু শিল্পী না, একজন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধেও যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে আপনি তার অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত তাকে অপরাধী বলতে পারেন না। তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে পারেন না। মামলা করে তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা শুরু করলেন, এই প্রক্রিয়া যদি চলতে থাকে, এটাই যদি আমাদের মনস্তত্ত্ব হয়, তাহলে বিভক্তি আরো বাড়বে।” বলেন আবুল কালাম আজাদ।