১৪০০ কোটি টাকা বাজেট: আল্লু অর্জুনকে নিয়ে অ্যাটলির এলাহি কাণ্ড
Published: 10th, April 2025 GMT
‘পুষ্পা’ তারকা আল্লু অর্জুনকে নিয়ে পরিচালক অ্যাটলি কুমারের বড় বাজেটের সিনেমা নির্মাণের ফিসফাস দীর্ঘ দিন ধরে উড়ছে। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নতুন যাত্রার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন আল্লু অর্জুন। আপাতত সিনেমাটির নাম রাখা হয়েছে— ‘এএ২২×এ৬’।
আল্লু অর্জুনকে নিয়ে এলাহি আয়োজন করছেন অ্যাটলি কুমার। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, সাইন্স ফিকশন-অ্যাকশন ঘরানার সিনেমা হবে এটি। আল্লু অর্জুন তার ইনস্টাগ্রামে ভিডিও শেয়ার করে বেশ কিছু দিকে ইঙ্গিতও দিয়েছেন। এটি প্রযোজনা করছে সান পিকচার্স। প্রতিষ্ঠানটিও তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।
এ ভিডিওতে দেখা যায়, চেন্নাইয়ে অবস্থিত সান পিকচার্সের অফিসে উপস্থিত হন আল্লু অর্জুন ও অ্যাটলি কুমার। সেখানে প্রযোজক কালানিথি মারনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং আলোচনা করেন তারা।
ভিডিওর এক অংশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থিত একটি ভিএফএক্স স্টুডিওতে হাজির হন আল্লু অর্জুন-অ্যাটলি। স্টুডিওতে রাখা মাস্ক, গিয়ার ট্রাই করতে দেখা যায় আল্লু অর্জুনকে। নিজের ব্যক্তিত্বের থ্রি-ডি ক্যারেক্টারকে পর্দায় দেখানোর প্রক্রিয়াও পরীক্ষা করেন।
এসময় সেখানে হলিউডের কয়েকজন বিখ্যাত টেকনিশিয়ানের সঙ্গে আলোচনা করেন আল্লু-অ্যাটলি। তাদের মধ্যে রয়েছেন আয়রনহেড স্টুডিওর সিইও এবং আর্ট ডিরেক্টর জোস ফার্নান্দেজ। ‘স্পাইডার-ম্যান: হোমকামিং’, ‘ক্যাপ্টেন আমেরিকা: সিভিল ওয়ার’, ‘অ্যাভেঞ্জার্স: এজ অব আল্ট্রোন’-এর মতো সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি।
তা ছাড়াও দেখা যায় ‘আয়রন ম্যান টু’, ‘ট্রান্সফরমারস: রাইজ অব দ্য বিটস’-এর মতো সিনেমার ভিএফএক্স গুরু জেমস ম্যাডিগানকে! ‘এএ২২×এ৬’ সিনেমার চিত্রনাট্য পড়ে বিস্মিত তিনি। জেমস বলেন— “চিত্রনাট্য পড়ে এখনো মাথা ঘুরছে।” স্পেকট্রাল মোশনের আর্ট ডিরেক্টর মাইক এলিজালদের সিনেমাটির গল্প প্রসঙ্গে বলেন— “এরকম কিছু কখনো পড়িনি। এটা আমার স্বপ্নের প্রজেক্ট।” এলাহি আয়োজনের জন্য প্রয়োজন অর্থ। তা হলে কত টাকা বাজেট নিয়ে মাঠে নেমেছেন নির্মাতারা? চলুন তা জেনে নিই—
আল্লু অর্জুন-অ্যাটলির সিনেমার বাজেট ধরা হয়েছে ৮০০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা)। এ বাজেট থেকে শুটিংয়ের জন্য ব্যয় হবে ২০০ কোটি রুপি, ভিএফএক্সে (ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট) খরচ হবে ২৫০ কোটি রুপি।
সিনেমাটিতে অভিনয়ের জন্য আল্লু অর্জুন পারিশ্রমিক নেবেন ১৭৫ কোটি রুপি। পাশাপাশি সিনেমাটির ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ পাবেন এই তারকা। পরিচালক অ্যাটলি কুমার পারিশ্রমিক নেবেন ১০০ কোটি রুপি। যার মাধ্যমে ভারতীয় পরিচালকদের পারিশ্রমিকের রেকর্ড ভেঙে দিলেন তিনি।
আল্লু অর্জুন ছাড়াও সিনেমাটিতে আর কে কে অভিনয় করবেন সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে প্রথম সারির তারকারা এতে অভিনয় করবেন। তা ছাড়া বিশ্বের সেরা টেকনিশিয়ানরা সিনেমাটিতে কাজ করবেন। আগামী আগস্ট মাসে শুটিং শুরুর পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, সিয়াসাত ডটকম
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ, চলবে মঙ্গলবারও
ঈদের ছুটির পর সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আবারও আন্দোলন শুরু করেছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
সোমবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। দাবি আদায়ে একজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি শেষে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সচিবালয়ে বিক্ষোভ কর্মসুচী ঘোষণা করেছেন তারা।
এদিকে, আন্দোলন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানিয়েছেন এ সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
আরো পড়ুন:
গুম বিষয়ে আইন প্রণয়ন ও কমিশন গঠন করবে সরকার: আইন উপদেষ্টা
সচিবালয় ও যমুনার পার্শ্ববর্তী এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ
অন্যদিকে নেতারা অভিযোগ করেছেন, আধ্যাদেশ বাতিল না করে সরকার তাদের সঙ্গে সাপ লুডু খেলা খেলছে। দাবি মানা না হলে আন্দোলন কর্মসূচি আরো কঠোর হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবে।
ঈদের ছুটির পর সোমবার (১৬ জুন) বেলা ১১টার পর সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনের সামনে বাদাম তলায় কর্মচারীরা জড়ো হন। সেখান থেকে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবির ও মো. নুরুল ইসলাম।
তারা এ সময় ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, সচিবালয় জেগেছে’, ‘মানি না মানব না’, ‘ফ্যাসিবাদী কালো আইন’, ‘মানি না মানব না, অবৈধ কালো আইন’, ‘ফ্যাসিবাদের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ স্লোগান ধরেন।
এরপর তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনের নিচে এসে সমাবেশ করেন।
ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিলের দাবিতে আমরা মাঠে ময়দানে ঘুরতেছি। অনেক ক্যাডার সার্ভিস থেকে অনেকেই আন্দোলনে নেমে গেছে। আমরা একটা জিনিস বুঝে গেছি সরকার আমাদের সঙ্গে সাপ-লুডু খেলা খেলছে। আমরা চাইলাম মহার্ঘ ভাতা, পদ-পদবি পরিবর্তন, সচিবালয় ভাতা। সেটা ঠেকানোর জন্য সরকার করল অভিন্ন নিয়োগবিধি। তারপর এটা নিয়ে সচিবালয়ে বিশাল হুলুস্থুল শুরু হলে সেটা আমরা থামিয়ে দিলাম।”
তিনি বলেন, “যদি আমাদের কথায় কান না দেন তাহলে আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন ডাকতে বাধ্য হব। প্রজ্ঞাপনে বলা আছে, অধ্যাদেশ জারির আগে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এ পর্যন্ত আমরা কেউ কোনো আলোচনার প্রস্তাব পাইনি। তাহলে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্যেও লুকোচুরি আছে। আজ আমরা রোদে পুড়ে আন্দোলন করছি, আপনারা এসিতে বসে আছেন। আমার এক বন্ধু বলেছে উপদেষ্টার দপ্তর, সচিবের দপ্তর, প্রশাসনের শাখায় খবর নেবেন তারা আমাদের মিটিংয়ে আসে কিনা। যদি না আসে আমরা তাদের আসতে বাধ্য করব। আমরা ধরে নেবে তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আইন প্রণেতাদের সহযোগী।”
নুরুল ইসলাম বলেন, “আমরা এগুলো দেখতে, শুনতে ও বুঝতে চাই না। আমরা শুধু দেখতে চাই এই অধ্যাদেশ বাতিল হয়েছে। আমরা সংশোধন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন বুঝি না। আমরা শুধু বুঝি এই অধ্যাদেশ বাতিল করতে হবে। আমাদের পিছু হঠার কোনো সুযোগ নেই।”
তিনি বলেন, “মঙ্গলবার সচিবালয়ের বাদাম তলায় বেলা ১১টায় জমায়েত হব। প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে আসবেন। যদি না আসেন তাহলে ধরে নেব তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। এরপর যদি আমরা আলোচনার আমন্ত্রণ না পাই, তাহলে আমাদের দাবির সঙ্গে নতুন নতুন দাবি যুক্ত হবে।”
নুরুল ইসলাম বলেন, “এই অধ্যাদেশ বাতিল করলে আমরা নীরবে ঘরে ফিরে যাব। যদি আমাদের আগুনে জ্বালিয়ে আপনারা খেলা করতে চান, তাহলে আমরা এমন খেলা খেলব আপনারা ঘরে ঢুকতে পারবেন না। আপনারা সে কাজ করতে বাধ্য করবেন না।”
এ সময় ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদিউল কবির, কো-মহাসচিব নজরুল ইসলাম, নিজাম উদ্দিন আহমেদসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এরপর নেতারা আধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে দুপুর পৌঁনে ১টার দিকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানকে স্মারকলিপি দেন।
সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
আন্দোলন চলাকালে গত ৪ জুন ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ পর্যালোচনা করে সুপারিশ দিতে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটি সোমবার বিকেলে প্রথম বৈঠকে বসছে। কমিটির সুপারিশ দেওয়া পর্যন্ত কর্মচারীদের আন্দোলন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা।
এর আগে কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সর্বশেষ ঈদের ছুটির আগে তিন জুন পর্যন্ত সচিবালয়ে বিক্ষোভ করেন কর্মচারীরা। চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সরকারের সাতজন উপদেষ্টাকে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। ১৫ জুনের মধ্যে চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল না করলে ১৬ জুন থেকে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুমকিও দিয়েছিলেন কর্মচারী নেতারা।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ