রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
Published: 10th, April 2025 GMT
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)-এর চেয়ারম্যান থাকাকালে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন প্রকল্পে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন মো. সিদ্দিকুর রহমান সরকার। এমনকি স্ত্রী গাজী রেবেকা রওশনসহ পরিবারের নামে বেনামেও সম্পদ গড়েছেন তিনি। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে মো.
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, অভিযোগ অনুসন্ধানে দুদকের পরিচালক মো. আবুল হাসনাতকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। অন্য সদস্যরা হলেন দুদকের সহকারী পরিচালক বিষাণ ঘোষ ও উপ-সহকারী পরিচালক আফিয়া খাতুন।
দুদক জানায়, সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানের যাবতীয় নথিপত্র চেয়ে রাজউকে চিঠি দিয়েছে দুদক। ২০২২-২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজউকের বোর্ডসভার তথ্য চেয়ে বর্তমান রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এসব তথ্য আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে দুদকে পাঠাতে বলা হয়েছে। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাত এবং নিজের ও পরিবারের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে কর্মকালে সিদ্দিকুরের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তার পরিপ্রেক্ষিতে হওয়া তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিভাগীয় ব্যবস্থার নেওয়ার কোনো তথ্যাদি থাকলে তা আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে দুদকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে রাজউকের সাবেক এই চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের ব্যাংক লেনদেন যাচাইয়ে দেশের ৬৪ তফসিলি ব্যাংকে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক।
২০২৪ সালের এপ্রিলে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান সরকারকে দুই বছর মেয়াদে রাজউক চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। ক্ষমতার পালাবদলে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর তার নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পরে আবার সেই প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নিয়োগ পুনর্বহালের কথা জানানো হয় ২২ সেপ্টেম্বর। গত মার্চে তার নিয়োগ বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার।
এর আগে সিদ্দিকুর রহমান ও তার স্ত্রী গাজী রেবেকা রওশন যে কোনো মুহূর্তে দেশত্যাগ করতে পারেন- এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে দুদক।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ দ ক র রহম ন র জউক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ