Prothomalo:
2025-06-16@16:01:19 GMT

দই শজনের রেসিপি

Published: 10th, April 2025 GMT

উপকরণ

শজনে ৫০০ গ্রাম, পেঁয়াজবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা আধা চা-চামচ, আদাবাটা আধা চা-চামচ, তেজপাতা ১টি, কাঁচা মরিচবাটা আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, হলুদগুঁড়া আধা চা-চামচ

আরও পড়ুনবৈশাখে ভাজতে পারেন পাটপাতার বড়া, দেখুন রেসিপি০৯ এপ্রিল ২০২৫প্রণালি

শজনে ডাঁটার আঁশ ফেলে ৩ ইঞ্চি লম্বা করে টুকরা করে নিন। তেলে তেজপাতা ভেজে পেঁয়াজবাটা, রসুনবাটা, আদাবাটা, হলুদগুঁড়া ও লবণ দিয়ে কষিয়ে শজনে ঢালুন। ভালোভাবে নেড়ে টক দই দিন। অল্প পানি দিয়ে ঢেকে দিন।

আরও পড়ুনপাকা বেলের স্মুদি ও তরমুজের ঠান্ডাইয়ের রেসিপি১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আইএসপি: স্কেলে টিকে থাকার লড়াই

বাংলাদেশের ইন্টারনেট ইন্ডাস্ট্রি এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। প্রযুক্তির ব্যবহার যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে মানুষের চাহিদা, বিশেষ করে দ্রুত, নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত সংযোগের জন্য। কিন্তু এর পেছনের বাস্তবতা অনেক কঠিন। বিশেষ করে আইএসপি, অর্থাৎ ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের জন্য এই বাজার খুব একটা প্রফিটের নয়, বরং একটানা লড়াইয়ের। কারণ, এই ব্যবসা আসলে ভলিউম গেম। এখানে লাভবান হতে হলে খেলতে হয় বড় স্কেলে।

যদি কোনো আইএসপি ২০ হাজারের কম গ্রাহক নিয়ে সার্ভিস চালায়, তাহলে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, লাভ তো দূরের কথা। এখানে অনেক উদ্যোক্তা নিজের শ্রম, সময় ও ধৈর্যের বিনিয়োগকে আর্থিক হিসাবে বিবেচনায় আনেন না, ফলে ব্যবসার প্রকৃত লাভ-লোকসানের হিসাবও মেলে না। এই ভুল ধারণা থেকেই ব্যবসাটি অনেক সময় ক্ষতির দিকে চলে যায়। বাস্তবতা হচ্ছে, আইএসপি একটি ক্যাপিটাল ইনটেনসিভ ও কষ্টসাধ্য ইন্ডাস্ট্রি। এখানে প্রতিটা পয়সা বের করতে হয় খুব হিসাব করে।

আমার বিটিআরসিতে কাজ করার সাত বছরে শুধু দেশের বাস্তবতা দেখিনি, দেখার চেষ্টা করেছি আন্তর্জাতিক উদাহরণও। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, এমনকি ইউরোপের দেশগুলো কীভাবে ব্রডব্যান্ডকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, তা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। একটি বিষয় স্পষ্ট—ব্রডব্যান্ড এখন আর শুধু একটি সুবিধা নয়, এটি মৌলিক অধিকারের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যুৎ বা রেললাইন যেমন একটি অঞ্চলের আর্থিক সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়, তেমনি উচ্চ গতিসম্পন্ন ইন্টারনেট একটি এলাকার প্রোডাক্টিভিটি ও প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে দেয়। বিশ্বব্যাংকের গবেষণা বলছে, মাত্র ১০ শতাংশ ইন্টারনেট পেনিট্রেশন বৃদ্ধি পেলেই দেশের জিডিপি ১ শতাংশের বেশি বাড়ে। তাহলে এটার জন্য ভ্যাট প্রযোজ্য হবে?

বর্তমানে আমরা যেভাবে মোবাইলনির্ভর ‘স্মল স্ক্রিন’ ইউজারদের নিয়ে ভাবছি, তা কনজ্যুমার ইকোনমির একটি দিকমাত্র। ফেসবুক স্ক্রল করা, ভিডিও দেখা বা অনলাইন পেমেন্ট করার মতো কার্যক্রম মূলত ভোগকেন্দ্রিক। কিন্তু উৎপাদনমুখী অর্থনীতি তৈরি হয় ‘বিগ স্ক্রিন’, অর্থাৎ ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ ব্যবহারকারীদের হাত ধরে। এরা ফ্রিল্যান্সিং করে, সফটওয়্যার বানায়, ভিডিও এডিট করে, সার্ভিস রপ্তানি করে। আর এসব কার্যক্রমের জন্য দরকার নিরবচ্ছিন্ন ফিক্সড হাইস্পিড ব্রডব্যান্ড কানেকশন।

আমাদের দেশে অনেকেই ব্যান্ডউইডথের খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বাস্তবতা হচ্ছে, একটা আইএসপি মোট ব্যান্ডউইডথের মধ্যে মাত্র ৬ থেকে ৭ শতাংশ ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইডথ কেনে। বাকি ৯৩ শতাংশ কনটেন্ট আসে বিভিন্ন কনটেন্ট ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক (সিডিএন) থেকে—যেমন গুগল, ফেসবুক, অ্যামাজন, ক্লাউডফেয়ার, নেটফ্লিক্স, টিকটক ইত্যাদি। এই কনটেন্টগুলো যদি দেশেই হোস্ট করা যায়, তাহলে ব্যান্ডউইডথ খরচ ৯৩ শতাংশের অনুপাতে অনেক কমে আসবে এবং ইউজারের অভিজ্ঞতাও হবে অনেক ভালো। সরকার ইতিমধ্যে এই এজ নেটওয়ার্কগুলো দেশে আনার উদ্যোগ নিয়েছে, যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক।

একটি আইএসপি পরিচালনার ব্যান্ডউইডথ খরচ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৫৫ শতাংশ খরচই চলে যায় দেশের ভেতরের সংযোগব্যবস্থায়, যাকে আমরা বলি এনটিটিএন খরচ। বাকি ৪৫ শতাংশ যায় আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যবহারে। পুরোটা দেখলে মানবসম্পদে খরচ হয় প্রায় ২০ শতাংশ, অফিস ও লজিস্টিকসে ১২ শতাংশ, ডেটা সেন্টার ও হোস্টিংয়ে ৩ শতাংশ, ব্যান্ডউইডথে ৪০ শতাংশ, এনটিটিএনে ২০ শতাংশ এবং ভ্যাট ৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে দেখা যায়, খরচ এতটাই বেশি যে লাভের জন্য প্রয়োজন বিশাল স্কেল। এ ছাড়া ইন্টারনেট মৌলিক সার্ভিস হলে ভ্যাট মওকুফের ব্যাপারে কথা বলা যেতেই পারে।

আর স্কেলে গেলে ব্যয় কমে। যেমন যদি সাবমেরিন কেব্‌ল ব্যবহারে ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আসে, তাহলে খরচ বাড়ে মাত্র ৫ শতাংশ। অর্থাৎ ইউনিট কস্ট কমে যায়। এর মানে, যত বেশি ব্যবহার, তত কম খরচ। এই স্কেলের সুবিধা পুরোপুরি পেতে হলে আইএসপিগুলোকে একে অপরের সঙ্গে রিসোর্স শেয়ার করতে হবে—একই রাউটার, একসঙ্গে ব্যান্ডউইডথ ম্যানেজমেন্ট, এরিয়া ধরে ফুল অটোমেশন, এসএএএস মডেলে গ্রাহক পরিচালনা ইত্যাদি।

এ ধরনের সহযোগিতার মাধ্যমে একটি নতুন প্রবণতা গড়ে উঠতে পারে—মার্জার ও অ্যাকুইজিশন। আইএসপিগুলো যদি নিজেদের স্বার্থে পার্টনারশিপ করে একসঙ্গে হতে পারে, তাহলে খুব সহজেই বড় স্কেলে পৌঁছানো সম্ভব। আর তখনই বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। কারণ, তারা খোঁজে রেগুলেটরি স্থিতিশীলতা ও স্কেল। বিটিআরসির উচিত হবে এই মার্জারের প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করা—যেমন মার্জার ফি বন্ধ করা, লাইসেন্সিং সহজ করা কিংবা প্রণোদনা দেওয়া।

এভাবে যদি একটি কোম্পানি ১০ লাখ গ্রাহক অ্যাকোয়ার করতে পারে, তাহলে শুধু দেশের মধ্যেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিসরেও তারা প্রতিযোগিতা করার সক্ষমতা অর্জন করবে। তখন আমাদের আইএসপি ইন্ডাস্ট্রি সত্যিকারের গ্লোবাল লেভেলে খেলতে পারবে।

এই পুরো ব্যবস্থার পেছনে আছে একটি সহজ সত্য—আইএসপি ব্যবসায় একা একা টেকা যায় না। এটা পার্টনারশিপ করে স্কেলে খেলার জায়গা। এখানে বিজয়ী হতে হলে দরকার একসঙ্গে এগোনোর মানসিকতা, টেকনোলজির স্মার্ট ব্যবহার এবং স্কেলের সঠিক পরিকল্পনা। আমাদের এখনই বুঝতে হবে, এই বিশাল স্কেলের কানেক্টিভিটি শুধু জিডিপি বাড়াবে না, এটি আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড।

রকিবুল হাসান টেলিকম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক লেখক

সম্পর্কিত নিবন্ধ