ফ্যাসিস্ট কোনো রাজনীতির অংশ নয়: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
Published: 14th, April 2025 GMT
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, এবারের নববর্ষের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়। এবার শুধু ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ, ফ্যাসিস্ট কোনো রাজনীতির অংশ নয়। ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি।
আজ সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার আয়োজনে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’য় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন ফারুকী।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়। তবে ঐতিহাসিকভাবে এটিকে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গ্রুপ তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে। তারা এবার শুধু ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব ব্যবহার করেছে। কারণ, ফ্যাসিস্ট কোনো রাজনীতির অংশ নয়। ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি। তবে এখানে বাংলাদেশের রাজনীতি রয়েছে। এখানে বাংলাদেশের সব জনগোষ্ঠী, সব ঐতিহ্য—সেই আকবর আমলের ঐতিহ্য, সুলতানি আমলের ঐতিহ্য সবকিছুর মিশ্রণ এখানে আছে। তবে টিপিক্যাল রাজনীতির কিছু এখানে নেই।
চারুকলায় ১৯৮৯ সালে ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল। পরে ১৯৯৬ সালে এটিকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নাম দেওয়া হয়। এবার কর্তৃপক্ষ এটিকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা নাম দিয়েছে। এটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চারুকলার একদল শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে ফারুকী বলেন, চাপিয়ে দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। আগে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নাম ছিল ‘বর্ষবরণ শোভাযাত্রা’ যশোরে। সেখান থেকে ঢাকায় আসার পর নাম হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। এরপর চাপানো হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবার চারুকলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চারুকলায় যে নামে চালু হয়েছিল, সে নামে শুরু হবে।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা আরও বলেন, এটা আসলে বাঙালির প্রাণের উৎসব আর নয়। এটাকে অনেক দিন বাঙালির প্রাণের উৎসব বানিয়ে রাখা হয়েছিল। এটা বাংলাদেশের প্রাণের উৎসব। বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারোসহ সব জাতিগোষ্ঠী বর্ষবরণ উদ্যাপন করে। ফলে এটাকে বাংলাদেশের উৎসব হিসেবে উদ্যাপন শুরু করা হলো।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আনন দ শ ভ য ত র র জন ত ক র জন ত র উপদ ষ ট র উৎসব চ র কল হয় ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।
রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।
অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা।
বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো।
বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না।
বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’
বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা।
উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।
ঢাকা/টিপু