বরগুনার আমতলীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বাড়িতে অনশনে বসেন তিন সন্তানের জননী প্রেমিকা নাজমা বেগম। 

কালাম মীরের ছোট ভাই, স্ত্রী ও মা তাকে লোহার শেকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নাজমা বেগম। 

আমতলী উপজেলার পশ্চিম আঠারোগাছিয়া গ্রামের ঘটনা এটি।

আরো পড়ুন:

আশির দশকের বিয়ে ‘তেলাই থেকে ঘুরানি’

বিশ্ব ইজতেমায় ৬৩ যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত 

রবিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে অনশনে বসলে পরের দিন সোমবার (১৪ এপ্রিল) তাকে শেকলে বেঁধে মারধর করা হয়। পুলিশ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। 

নাজমা বেগমের দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী, ২০০৮ সালে উপজেলার পশ্চিম আঠারোগাছিয়া গ্রামের রিপন মোল্লার সঙ্গে নাজমা বেগমের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে। ২০২২ সালে নাজমা বেগম খালাতো দেবর আবুল কালাম মীরের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। 
এ ঘটনার জের ধরে গত ২৯ মার্চ নাজমার স্বামী তাকে তালাক দেন। গত রবিবার সন্ধ্যায় নাজমা তার প্রেমিক কালামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন। ওই সময় কালাম বাড়ি ছিলেন না। কালামের বাড়ির লোকজন ব্যাপক নির্যাতন চালায় তার ওপর।

ঘটনার বিষয়ে ইউপি সদস্য ছালাম সিকদার ও নারী ইউপি সদস্য হাসনেহেনা বেগম পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে উদ্ধার করে নাজমাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এই দুই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন।

সোমবার রাতে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.

রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান উন্নত চিকিৎসার জন্য নাজমাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।

নাজমা বেগম বলেন, “বিয়ের দাবিতে প্রেমিক আবুল কালাম মীরের বাড়ীতে অনশনে বসি। পরে তার ছোট ভাই বক্কর মীর, স্ত্রী লামিয়া, জল লাকি ও মা পরী বিবি আমাকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। এভাবে তারা আমার ওপর তিন ঘণ্টা নির্যাতন চালিয়েছে।”

“তারা আমার চোখ ও গোপনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া দিয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার দাবি করছি,” যোগ করেন নাজমা।

কালাম মীরের বড় ভাই আবুল হোসেন মীর তার ভাইয়ের সঙ্গে ওই নারীর সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন। 

তিনি বলেন, “ঘটনার সময় আমি বাড়ি ছিলাম না। বাড়ি এসে শুনেছি তাকে মারধর করেছে।” 

ডা. রোকনুজ্জামান বলেন, নাজমা বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো তাকে।

আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, “আমি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/ইমরান/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপর ধ অনশন ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে

নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।

স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।

কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।

অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে