এখন অভিনয়ে নেই বাংলা সিনেমার সোনালী যুগের জনপ্রিয় অভিনেতা ইলিয়াস জাভেদ। দীর্ঘদিন ধরেই ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। বেশ কয়েক বছর ধরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেকটা আড়ালেও থাকছেন এই অভিনেতা। হুট করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার দুপুরে তাঁকে উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অভিনেতার নিকটতম ড্যান্স ডিরেক্টর ইউসুফ খান সমকালকে বলেন, ‘বুধবার হাসপাতালে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তাঁর পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয়। এখন তাঁর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল। বুধবারই তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়েছে। এখন তাঁর পর্যাপ্ত বিশ্রাম দরকার। সবাই আমাদের ইলিয়াস জাভেদ ভাইয়ের জন্য জন্য দোয়া করবেন।’
জানা গেছে, ক্যান্সারে আক্রান্ত অভিনেতা এর আগে একবার ব্রেইন স্ট্রোক করেছিলেন। ২০২০ সালের ৪ এপ্রিল মূত্রনালির জটিলতায় আক্রান্ত হলে জাভেদের অস্ত্রোপচার করা হয়। তারপর থেকে এই ভালো, এই খারাপ। এভাবেই যাচ্ছে এই অভিনেতার সময়।
ষাটের দশকে নৃত্য পরিচালক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরবর্তী সময়ে অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন জাভেদ। সত্তর ও আশির দশকে পোশাকি সিনেমাতে নায়ক হিসেবে তিনি ছিলেন নির্মাতাদের চাহিদার শীর্ষে।
তাঁর অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— মালেকা বানু, অনেক দিন আগে, শাহজাদা, রাজকুমারী চন্দ্রবান, সুলতানা ডাকু, আজো ভুলিনি, কাজল রেখা, সাহেব বিবি গোলাম, নিশান, বিজয়িনী সোনাভান, রূপের রাণী, চোরের রাজা, জালিম, চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা, বাহরাম বাদশা ইত্যাদি।
জাভেদের সর্বশেষ অভিনীত সিনেমা ‘মা বাবা সন্তান’। এরপর আর কখনও ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো হয়নি তাঁর। কাজের আগ্রহ থাকলেও শারীরিক অসুস্থার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। রুপালি পর্দার তুমুল জনপ্রিয় নায়ক জাভেদ আজ বয়সের ভারে ন্যুব্জ। নানারকম অসুখবিসুখ তাঁকে রাজ্য হারানো এক রাজায় পরিণত করেছে। দিনে দিনে অনেক রঙই মুছে গেছে, ধূসর হয়ে গেছে রঙিন জীবনের নিশান!
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অভ ন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি।
লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
ঢাকা/অনিক/রফিক