পরমাণু প্রকল্প নিয়ে দ্বিতীয় দফায় ইরান-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠক
Published: 19th, April 2025 GMT
ইরানের পরমাণু প্রকল্প নিয়ে দ্বিতীয় দফায় বৈঠক করেছে ওয়াশিংটন ও তেহরান। আজ শনিবার ইতালির রাজধানী রোমে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সপ্তাহখানেক আগে ওমানের রাজধানী মাসকাটে প্রথম দফায় বৈঠক করেছিলেন দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এই আলোচনার মধ্যস্থতা করছে ওমান। ইরানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৈঠক শুরু হয়। এর আগে রোমে পৌঁছাতে দেখা যায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচিকে। আলোচনায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফেরও।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকেরি বলেন, ইতালিতে ওমান দূতাবাসের দুটি কক্ষে আলাদাভাবে বসবেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। দুই পক্ষের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদানের কাজ করবেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাইদি।
এর আগে মাসকাটে অনুষ্ঠিত বৈঠকও ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে সরাসরি হয়নি বলে জানিয়েছিল ইরান। ওই বৈঠকের পর গত শুক্রবার আব্বাস আরাগচি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা পরমাণু আলোচনা নিয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে তাঁদের মনে হচ্ছে। তবে আলোচনা ঘিরে ওয়াশিংটনের ‘উদ্দেশ্য’ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ইরানের সঙ্গে একটি পারমাণবিক চুক্তিতে অংশ নিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। চুক্তি অনুযায়ী, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ কার্যক্রম সীমিত করবে। বিনিময়ে দেশটির ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। পরে প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান ট্রাম্প।
গত জানুয়ারিতে ক্ষমতায় বসে আবারও ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগে তৎপরতা শুরু করেন ট্রাম্প। তবে গত মার্চে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে লেখা একটি চিঠিতে নতুন করে পরমাণু আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান তিনি। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বিফলে গেলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পরম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ
বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।
দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।
পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।
বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’
সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসীসম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।
এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।
সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।
রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা