রোহিঙ্গাদের প্রকল্পে খরচ বাড়ল ৪০০ কোটি টাকা, ভবিষ্যতে অনুদান পাওয়া নিয়ে সংশয়
Published: 20th, April 2025 GMT
রোহিঙ্গাদের জীবনমান উন্নয়নের প্রকল্পে খরচ বাড়ল আরও প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। তবে ভবিষ্যতে উন্নয়ন সহযোগীদের অনুদান পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের কাছে আরও দুই বছরের জন্য ওই প্রকল্পে অনুদান পাওয়া যাবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে নীতি, তাতে জাতিসংঘের আওতায় রোহিঙ্গা–সংক্রান্ত প্রকল্পের জন্য সহায়তা কতটা মিলবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।
আজ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এ কথাগুলো বলেন। শেরেবাংলা নগরের পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
একনেক সভায় অর্থ ও সময় বাড়িয়ে ২ হাজার ৩৮২ কোটি টাকার জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টিসেক্টর প্রকল্প পাস করা হয়। এতে সময় বাড়ানো হয় ২ বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে। খরচ বেড়েছে প্রায় ৩৯৬ কোটি টাকা, যা জোগান দেবে বিশ্বব্যাংক। এসব তথ্য জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কক্সবাজারের মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক জীবনমান উন্নতি করতে এই প্রকল্পের মেয়াদ ও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।
আজকের একনেক সভায় ৯০৪ কোটি টাকার স্ট্রেনদেনিং সোশ্যাল প্রোটেকশন ফর ইম্প্রুভড রেজিলিয়েন্স, ইনক্লশন অ্যান্ড টার্গেটিং প্রজেক্ট পাস করা হয়।
সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে আজ পাস হওয়া একটি প্রকল্প প্রসঙ্গে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকারি ভাতা যাঁদের কাছে যায়, তাঁদের ৫০ শতাংশের ভাতা পাওয়ার কথা না। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীদের কারণে তাঁরা এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হন। তাঁদের যদি বাদ দেওয়া যেত, তাহলে প্রকৃত উপকারভোগীদের ভাতা দ্বিগুণ করা যেত।
ওই প্রকল্পে বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বড় ঋণ পেতে ছোট ছোট ঋণে পরামর্শকের শর্ত মানতে হয়। উন্নয়নশীল দেশের সমস্যা হলো সহজ শর্তের ঋণ নিতে হলে পরামর্শকের বোঝা নিতে হয়।
একনেক সভায় ১৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকার বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প পাস করা হয়। এই প্রকল্পে সম্পর্কে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর নয়; এটি নদীবন্দর। কর্ণফুলী নদী বেশ সরু। এই নদীর আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিয়ে বন্দরে আসতে হয়। জাহাজগুলো থাকে গভীর সমুদ্রবন্দরে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০২৫ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০৩১ সালের জুন মাস নাগাদ এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এ প্রকল্প উত্তর হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকায় হবে। এই প্রকল্পের আওতায় সাগরের ব্রেক ওয়াটার ও নেভিগেশন চ্যানেল সুবিধা তৈরি করা হবে। এ ছাড়া রেল, সড়কসহ যাবতীয় অবকাঠামো ও পরিষেবা সুবিধাও নির্মাণ করা হবে। জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় চারটি বে টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে দুটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) করা হবে।
আজকের একনেক সভায় সব মিলিয়ে ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি টাকার ১৬টি প্রকল্প পাস করা হয়। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ১৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। সরকার দেবে ৩ হাজার ১ কোটি টাকা। বাকি অর্থ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা দেবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই প রকল প প রকল প প উপদ ষ ট প স কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা বিভিন্ন দলের
ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন দল। অবিলম্বে এই হামলা ও গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে এ বিষয়ে দুনিয়ার শান্তিকামী দেশ ও বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। গতকাল রোববার পৃথক বিবৃতিতে এসব দলের নেতারা এই দাবি জানান। তারা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ঘোষণা এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-ইহুদিবাদী ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ ও ইরানের জনগণের পাশে দাঁড়াতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ বকুল এক বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তার নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী সংকট সৃষ্টি করে রেখেছে। একতরফা যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়ে ইরানের রাজনৈতিক সামরিক অগ্রযাত্রাকে রুখতে চেষ্টা করছে। যুদ্ধবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে এখনই থামতে হবে। অন্যায়ভাবে ইরানের শিশু-নারী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর বোমা ও মিসাইল হামলা বন্ধ করতে হবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক পৃথক বিবৃতিতে বলেন, ইরানের পরমাণু স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অঞ্চল লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বেপরোয়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা রাষ্ট্রীয় ভয়ানক সন্ত্রাসী তৎপরতা। পরিকল্পিত এই হামলা আন্তর্জাতিক সব ধরনের বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর শামিল। জাতিসংঘকেও এরা পুরোপুরি ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেছে।