সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উদ্বেগ
Published: 20th, April 2025 GMT
দিনাজপুরের বিরলে ভবেশ চন্দ্র রায়ের রহস্যজনক মৃত্যু, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে স্কুলের প্রধান শিক্ষক কান্তিলাল আচার্যকে পদত্যাগে বাধ্য করা, রাঙামাটির কাউখালীতে মারমা তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
আজ রোববার এক বিবৃতিতে ঐক্য পরিষদের তিন সভাপতি ঊষাতন তালুকদার, নিম চন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মণীন্দ্র কুমার নাথ এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, সারা দেশে সাম্প্রদায়িক ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। তাঁরা অবিলম্বে দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, দিনাজপুরের বিরলে কৃষক ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যু সম্পর্কে পুলিশ বলেছে তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরিবার বলছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর ‘পান–বিড়ি খেয়ে অসুস্থতার’ খবর জানানো হয়। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ভবেশ চন্দ্র রায়ের মৃত্যুকে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর সংগঠিত নিপীড়নের ধারাবাহিকতা’ বলে মন্তব্য করে। তবে ভারতের এই দাবিকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধান উপদেষ্টার মুখপাত্র শফিকুল আলম। তিনি বাসসকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সব ধর্মের নাগরিকদের সমান অধিকার নিশ্চিত করে।
আরও পড়ুনবাড়ি থেকে ডেকে নেওয়ার পর ‘পান-বিড়ি খেয়ে অসুস্থ’ কৃষক, হাসপাতালে মৃত্যু১৮ এপ্রিল ২০২৫হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা তাঁদের বিবৃতিতে বলেন, গত মার্চ মাসে সারা দেশে প্রায় অর্ধশত সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা, ধর্ষণ, মন্দিরে হামলা, ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার, আদিবাসীদের ওপর হামলা, বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনা রয়েছে। তাঁরা বলেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও অস্থিরতার এসব ঘটনা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ ও শঙ্কা বাড়াচ্ছে।
আরও পড়ুনসীতাকুণ্ডে প্রধান শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ১৬ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ব্যবসায়ী দম্পতির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
চট্টগ্রামে এক ব্যবসায়ী দম্পতির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। তাঁরা হলেন হাসানুর রশিদ ও তাঁর স্ত্রী সৈয়দা ফাতেমা নারগিস। আজ বৃহস্পতিবার অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বিচারক মো. হেলাল উদ্দিন এ আদেশ দেন।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, ট্রেডিং ও পণ্য আমদানির নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নেন হাসানুর রশিদ। নগরের চাক্তাই এলাকায় সুতার কারখানা ছিল। ২০১৪-১৫ সালে তুরস্ক থেকে কিছু ঘি ও সানফ্লাওয়ার অয়েল আমদানি করেন। পরে এগুলো বন্ধ হয়ে যায়।
অর্থঋণ আদালত চট্টগ্রামের বেঞ্চ সহকারী মো. এরশাদ প্রথম আলোকে বলেন, সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক নগরের নাসিরাবাদ শাখার ৮ কোটি ৮২ লাখ টাকা, ঢাকা ব্যাংক নিউমার্কেট শাখার ১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা এবং আইএফআইসি ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ঋণ খেলাপের মামলায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে হাসানুর রশিদ ও তাঁর স্ত্রীর দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞার আবেদন করা হয়। ঋণের বিপরীতে ব্যাংকে পর্যাপ্ত সম্পদ বন্ধক নেই। এ অবস্থায় বিবাদীরা দেশ ত্যাগ করলে ব্যাংক ডিক্রি পেলেও টাকা আদায় সম্ভব হবে না।
এরশাদ আরও বলেন, আদালত ব্যাংকের করা আবেদন মঞ্জুর করে হাসানুর ও তাঁর স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। একই সঙ্গে পুলিশের অভিবাসন শাখার পুলিশ সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, হাসানুর রশিদ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে মোট ৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করায় অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে।