মহাকবি আল্লামা ইকবাল, তার প্রণীত মুসলিম জাতীয়তাবাদ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা একসূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।

সোমবার (২১ এপ্রিল) আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালের ৮৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলায়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ আয়োজিত মিলাদ মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, ভারতপন্থী সরকারগুলোর সময়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হরণ করার মতলবে এ দেশের স্বাধীনতার আসল ম্যান্ডেট মুসলিম জাতীয়তাবাদকে জাতীয় জীবন থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে মুসলিম জাতীয়তাবাদী মতবাদের প্রণেতা আল্লামা মুহাম্মদ ইকবালকে একাত্তরের যুদ্ধের সঙ্গে জড়ানো হয়েছে। তার নামে প্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। অথচ আল্লামা ইকবাল ১৯৩৮ সালে ইন্তেকাল করেছেন, যে সময় পাকিস্তান ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মই হয়নি।

আরো পড়ুন:

‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ইসলামবিরোধী’

চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ২ হাজার বছরের পুরনো: ঢাবি উপাচার্য

অনুষ্ঠানে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন আল্লামা ইকবাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ড.

আবদুল ওয়াহেদ ও জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শামসুদ্দীন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, নবাব সলিমুল্লাহ একাডেমির সভাপতি আবদুল জব্বার, জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সদস্য সচিব হাসান মোহাম্মদ আরিফ, সহকারী সদস্য সচিব গালীব ইহসান ও অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সহকারী সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, ঢাকা মাদ্রাসা-ই-আলীয়া শাখার আহ্বায়ক রাকিব মণ্ডল, সদস্য সচিব মো. জিনাত হোসেন, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব শরীফ খান, সহকারী সদস্য সচিব রুকুনুজ্জামান, সদস্য মো. ইব্রাহিম প্রমুখ।

ড. আবদুল ওয়াহেদ বলেন, “স্বৈরাচারী শাসনের সময়ে আল্লামা ইকবালের কথা বলতে দেওয়া হয়নি। তাকে নিয়ে দর্শন চর্চা করতে দেওয়া হয়নি। তবে এখন মুক্ত পরিবেশে আল্লামা ইকবালের কথা তরুণ প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে পড়ছে।”

মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, “১৯৩৮ সালের ২১ এপ্রিল ড. আল্লামা ইকবালের মৃত্যু হয়। তার চেতনা ও স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয় ১৯৪৭ এ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের বাংলাদেশ।”

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখতে আধিপত্যবাদী আগ্রাসন মোকাবেলা করতে হবে। এজন্য আল্লামা ইকবাল চর্চা জারি রাখতে হবে। যারা এতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে তারা দিল্লীর দালাল, তারা সার্বভৌম বাংলাদেশের শত্রু।”

এ সময় তিনি আল্লামা ইকবালের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নতুন হল নির্মাণের দাবি জানান।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ শ র স ব ধ নত ম হ ম মদ ইকব ল র আল ল ম সহক র ইসল ম আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না, মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, 'আমাদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে একটা নেতিবাচক সংবাদ দেখলেই যাচাই-বাছাই না করে শেয়ার করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত ভিত্তিহীন সংবাদও আমরা শেয়ার করে দেই।'

সিইসি বলেন, 'দয়া করে সত্য মিথ্যা যাচাই না করে শেয়ার করবেন না। এই মেসেজটা তৃণমূলে ছড়িয়ে দিন। তথ্যটা যেন আগে যাচাই করে তারপরে শেয়ার করেন।'

আজ সোমবার রাজধানীর ভাটারায় আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নে (এজিবি) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন সিইসি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ভুয়া সংবাদের প্রচার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপপ্রয়োগ রোধে করণীয় সম্পর্কে তিনি এসব কথা বলেন।

থানা আনসার কোম্পানি/প্লাটুন সদস্যদের আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের (৪র্থ ধাপ) সমাপনী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইসি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো সংবাদ দেখা মাত্রই নাগরিকদের যাচাইবাছাই করতে আহ্বান জানান সিইসি। নিশ্চিত হওয়ার আগে শেয়ার না করতে বলেন তিনি।

জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আনসার ভিডিপির ভূমিকাকে মূল শক্তি বলে উল্লেখ করেন সিইসি। তিনি বলেন, 'এনারাই অধিক সংখ্যায় নিয়োজিত থাকেন। এবং আমাদের হিসেব করতে গেলে প্রথম এদেরকেই হিসেব করতে হয় যে, কতজন আনসার ভিডিপি সদস্য আমরা মোতায়েন করতে পারব। মূল কাজটা আঞ্জাম (সম্পাদন) দিতে হয় কিন্তু আনসার এবং ভিডিপির সদস্যদের।'

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ। নির্বাচনকালীন জনগণের নিরাপত্তা, ভোট কেন্দ্রের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণে আনসার বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে কাজ করছে বলে জানান তিনি। নির্বাচনে দেশজুড়ে প্রায় ৬ লাখ আনসার ও ভিডিপি সদস্য দায়িত্বপালন করবেন বলেন মহাপরিচালক।

অনুষ্ঠানে মহড়ায় ঢাকা মহানগর আনসারের চারটি জোনের অধীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৩২০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য অংশ নেন।  আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নের সদস্যরা টহল, দায়িত্ব বণ্টন ও জরুরি প্রতিক্রিয়া অনুশীলনে অংশ নেন।

মহড়ায় ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জামাদি নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, ভোটারদের শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ভোট প্রদানে সহায়তা, জাল ভোট প্রতিরোধ, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা এবং সেনা, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের সঙ্গে দ্রুত সমন্বয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন জোনের অধিনায়ক এবং প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ