তেজগাঁওয়ে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
Published: 21st, April 2025 GMT
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আরমান হোসেন পাপ্পু (২২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দারাজে চাকরি করতেন। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশে এ ঘটনা ঘটে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রাত সাড়ে ৯টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রতিবেশী মো.
তিনি বলেন, রাস্তার পাশে সেই অন্ধকার জায়গায় অন্য কয়েকজনকে আক্রমণ করেছিল ছিনতাইকারীরা। সেটি দেখেই তাদের বাঁচানোর জন্য চিৎকার করেছিলেন পাপ্পু। তখনই ছিনতাইকারীরা তাঁর পায়ে ও মুখে ছুরিকাঘাত করে। তবে তাঁর কাছ থেকে কিছু ছিনিয়ে নিতে পারেনি।
নিহত পাপ্পুর বাবা একরাম হোসেন বলেন, দারাজে রাত্রিকালীন ডিউটি ছিল পাপ্পুর। রাত ৯টার দিকে তার অফিসে যাবার কথা ছিল। এ জন্য সারাদিন বাসায় থেকে সন্ধ্যায় আমার কাছ থেকে ১০ টাকা নিয়ে বের হয়। ১০ মিনিট পরই খবর আসে, ছিনতাইকারীরা পাপ্পুকে কুপিয়ে আহত করেছে। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠান।
একরাম হোসেন জানান, বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার আন্ধারমানিক গ্রামে। পরিবার নিয়ে তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ী এলাকায় থাকেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে পাপ্পু দ্বিতীয়।
ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি গাজী শামীমুর রহমান বলেন, ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।