চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হবে বলেও জানিয়েছে বহুজাতিক দাতা সংস্থাটি।

আজ মঙ্গলবার রাতে প্রকাশিত আইএমএফের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক, এপ্রিল ২০২৫–এ এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক–আইএমএফের বসন্তকালীন যৌথ সভার দ্বিতীয় দিনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলো।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুকের প্রাপ্ত উপাত্ত ধরে দেশভিত্তিক তথ্যও হালনাগাদ করেছে আইএমএফ। সেখানে বাংলাদেশের জন্য চলতি অর্থবছরে জিডিপির নতুন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়ে সাড়ে ৬ শতাংশ হওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

গত জুনে চলতি অর্থবছরের বাজেট দেওয়ার সময় ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। তবে অন্তর্বর্তী সরকার কিছুদিন আগে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য সংশোধন করে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। চলমান আর্থিক সংকট, ব্যবসায় স্থবিরতা এবং সাম্প্রতিক সরকার পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা বিবেচনায় নিয়ে এ সংশোধন করা হয়।

কয়েক দিন আগে আরেক দাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছিল, বাংলাদেশের চলতি অর্থবছরে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে। আইএমএফ জিডিপির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আরও কমিয়ে দিল। 

এ দিকে আইএমএফ আরও বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হবে। আগামী অর্থবছরে তা কমে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসবে।

গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, গত মার্চে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২৬ শতাংশ।

আইএমএফের নতুন পূর্বাভাস অনুসারে, বৈশ্বিক গড় জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। আর এশিয়ার গড় জিডিপি হতে পারে সাড়ে ৪ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংক–আইএমএফের বসন্তকালীন সভা ২১ এপ্রিল শুরু হয়ে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল এ যৌথ সভায় অংশ নিচ্ছে। সভা চলাকালে বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুত আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থছাড় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। সম্প্রতি আইএমএফ মিশন বাংলাদেশে এসে ঘুরে গেছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইএমএফ র প রব দ ধ দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৪ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে ইলেকট্রনিক খাতের দেশীয় জায়ান্ট কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ওয়ালটনের ব্যবসা বেড়েছে ৩১২ কোটি টাকা বা সোয়া ৭ শতাংশের বেশি। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটি ৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল।

ব্যবসা বাড়লেও ওয়ালটনের মুনাফা কমে গেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ওয়ালটনের মুনাফা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৯৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৭৬২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ওয়ালটনের মুনাফা কমেছে ৬৬ কোটি টাকা বা সাড়ে ৮ শতাংশের বেশি।

গত রোববার ওয়ালটনের পরিচালনা পর্ষদের সভায় চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোম্পানিটির মুনাফার তথ্য গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছে কোম্পানিটি।

আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগের বছরের চেয়ে ব্যবসা বা আয় বৃদ্ধির পরও কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে মূলত দুই কারণে। প্রথমত, কোম্পানিটির উৎপাদিত পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ বাবদ খরচ আগের বছরের চেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। দ্বিতীয়ত, ব্যাংকঋণের সুদ ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়মূল্যের কারণে আর্থিক খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানিটির পণ্য বিক্রি ও সরবরাহ বাবদ খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৪১০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে কোম্পানিটির খরচ বেড়েছে ১১৪ কোটি টাকা বা ২৮ শতাংশ। এ ছাড়া গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ওয়ালটনের ব্যাংক সুদ ও বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়জনিত আর্থিক খরচের পরিমাণ ছিল ২৬৩ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে দাঁড়ায় ৩০৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে এই খাতে খরচ বেড়েছে ৫৮ কোটি টাকা বা ২৩ শতাংশের বেশি।

আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় আরও দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কোম্পানিটির ব্যবসা বা আয় ৩১২ কোটি টাকা বাড়লেও তার বিপরীতে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। একই সময়ের ব্যবধানে এই খরচ বেড়েছে ২১৮ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকার আয়ের বিপরীতে ওয়ালটনের উৎপাদন খরচ ছিল ২ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। সেখানে চলতি বছর ৪ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে উৎপাদন খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা।

এদিকে ৯ মাসের সমন্বিত আয়-ব্যয়ের হিসাবের পাশাপাশি সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকের (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিবেদনও আলাদাভাবে প্রকাশ করেছে ওয়ালটন। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে কোম্পানিটি ২ হাজার ৫১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। তার বিপরীতে মুনাফা করেছে ৩৯২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে কোম্পানিটি ১ হাজার ৯১৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। তার বিপরীতে মুনাফা করেছিল ৪২২ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে কোম্পানিটির মুনাফা কমেছে ৩০ কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিট রিজার্ভও ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
  • বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করতে হবে
  • বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ
  • আসছে ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’, এক ঠিকানায় মিলবে সব সেবা
  • পাল্টা শুল্ক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রকে চটাব না: অর্থ উপদেষ্টা
  • রবীন্দ্রজয়ন্তীতে ‘রঙ বাংলাদেশ’ এর আয়োজন
  • আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের ওপর বাংলাদেশ এখন নির্ভরশীল নয়: অর্থ উপদেষ্টা
  • আইএমএফ কিস্তি না দিলে নিজেদের মতো করে বাজেট করব: অর্থ উপদেষ্টা
  • সব শর্ত মেনে আইএমএফের ঋণ নেওয়া হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
  • ৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের