অবৈধ হ্যান্ডসেটে বছরে রাজস্ব ক্ষতি ২ হাজার কোটি টাকা
Published: 25th, April 2025 GMT
মাত্রাতিরিক্ত শুল্ক ও করের কারণে অবৈধ পথে মোবাইল হ্যান্ডসেটের আমদানি বাড়ছে বলে দাবি খাত-সংশ্লিষ্টদের। এতে দেশে ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা ১৭ মোবাইল হ্যান্ডসেট কারখানা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি বৈধভাবে আমদানিকারকরাও লোকসান গুনছেন। টেলিযোগাযোগ বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
উদ্যোক্তারা বলছেন, চাহিদার শতভাগ মোবাইল ফোন দেশেই উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু অবৈধ মোবাইল ফোনের কারণে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদন সক্ষমতার ৩০ শতাংশই অব্যবহৃত থাকছে। ১৬ হাজার কোটি টাকার মোবাইল ফোন বাজারের ৪০ শতাংশই অবৈধ হ্যান্ডসেটের দখলে। সব মিলিয়ে দেশে মোবাইল ফোন খাতের অবস্থা শোচনীয়।
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি) বলছে, অবৈধভাবে ফোন আমদানি বন্ধ না হওয়ায় বাজারের ৩৫-৪০ শতাংশ এখন অবৈধ ফোনের দখলে। এতে বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে দেশে মোবাইল ফোনের উৎপাদন বাড়তে থাকে। এ খাত থেকে বছরে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়। জানা গেছে, দেশে বছরে চার কোটি হ্যান্ডসেটের চাহিদা রয়েছে, যার মধ্যে আড়াই কোটি দেশে উৎপাদন হচ্ছে। বাকি প্রায় দেড় কোটি হ্যান্ডসেট আমদানির মাধ্যমে চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।
দেশে অবৈধ হ্যান্ডসেটের ব্যবহার কমাতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ২০২১ সালে ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) পদ্ধতি চালু করে। এ পদ্ধতিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অবৈধ সেট বন্ধ হয়। এটি চালুর পর দেশে অবৈধ মোবাইল সেটের বাজার ১০-১৫ শতাংশে নেমে আসে। কিন্তু সে বছরই অজ্ঞাত কারণে এ পদ্ধতি শিথিল করা হয়। ফলে দেশে অবৈধ সেটের ব্যবহার আরও বেড়ে যায়। এর প্রেক্ষিতে এমআইওবি এনআইআর ফের চালু করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দেয়। সেই চিঠি পর্যালোচনার পর এনআইআর ব্যবস্থা চালু করতে বিটিআরসিকে চিঠি দেয় এনবিআর। বিটিআরসি জানিয়েছে, তারা চলতি বছরই এনইআইআর চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।
প্রতিটি মোবাইল ফোনের জন্য ১৫ সংখ্যার একটি স্বতন্ত্র আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টি) নম্বর থাকে। একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তারা একটি আইএমইআই নম্বরের নিবন্ধন দিয়েই দেড় লাখের বেশি মোবাইল ফোনের খোঁজ পেয়েছেন। অর্থাৎ এসব ফোনই নকল। রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে দেদার অবৈধ মোবাইল বিক্রি হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু এ বছরই: রুশ রাষ্ট্রদূত
চলতি বছরের শেষ নাগাদ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ম্যান্টিতস্কি। রোববার রাশিয়া দিবস উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ বছর রাশিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয়ের ৮০ বছর উদযাপন করছে। একইসঙ্গে সোভিয়েত পারমাণবিক শিল্প প্রতিষ্ঠারও ৮০ বছর। এই গৌরবময় সময়ে রূপপুর প্রকল্পের অগ্রগতি আমাদের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।’ তিনি জানান, রুশ ও বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের যৌথ প্রচেষ্টায় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে এবং প্রথম ইউনিট উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রূপপুর প্রকল্প শুধু প্রযুক্তিগত নয়, রাশিয়া-বাংলাদেশ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদারত্বের একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ জ্বালানি খাতে একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা ‘রোসাটম’ এর সহায়তায় নির্মিত হচ্ছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র, যার প্রতিটি ইউনিটের উৎপাদনক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট। ২০১৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং বর্তমানে প্রকল্পের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলক চালুর প্রস্তুতিতে রয়েছে।
উল্লেখ্য, রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নে রাশিয়ার প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন রয়েছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর অন্যতম।