নিষেধাজ্ঞা পিছিয়ে মাঠে নেমে ৩৭ রান করলেন হৃদয়
Published: 26th, April 2025 GMT
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলের পারফরম্যান্স ভালো হয়নি। সিলেটে প্রথম টেস্ট হেরে সমালোচনার মুখে ক্রিকেটাররা। এই সময়ে জাতীয় দলের বাজে পারফরম্যান্স নিয়ে কাটাছেঁড়া হওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট গত কয়েকদিন নতুন নতুন নাটক মঞ্চস্থ করেছে বিসিবি। যার শুরুটা হয়েছিল ডিপিএলে তাওহিদ হৃদয়ের কাণ্ড দিয়ে। আম্পায়ারের সঙ্গে বিতণ্ডা, এরপর শাস্তি এবং তা নিয়ে নানা টানাপোড়েন যেন ছাপিয়ে গেছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টেস্ট সিরিজকেও, যেখানে সিলেটে প্রথম টেস্ট হেরে সিরিজে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
শাস্তি এক বছরের জন্য পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে মোহামেডানের হয়ে মাঠে নামেন হৃদয়। তবে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা এই ব্যাটার খুব বেশি অবদান রাখতে পারেননি। তিনটি চারে ৫৪ বল খেলে ৩৭ রান করে ওয়াসি সিদ্দীকের বলে পারভেজ জীবনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরেছেন। হৃদয়ের আউটের সময় মোহামেডানকে জয় পেতে প্রয়োজন ছিল আরও ৯১ রান, হাতে ছিল ১৮ ওভার। গাজী গ্রুপের ২৩৭ রানের জবাবে ৩২ ওভারে ৩ উইকেটে ১৪৬ রান করেছিল মোহামেডান। হৃদয়ের বিদায়ের পর দ্রুতই আরিফুল ফিরলেও মাহমুদউল্লাহ ও সাইফউদ্দিনের ব্যাটে জয় পেতে বেশি বেগ পেতে হয়নি মোহামেডানের।
তাওহিদ হৃদয়ের শাস্তির শুরু মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচে আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদের সঙ্গে বিতণ্ডা থেকে। প্রথমে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয় তাকে, পরে সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করায় আরও এক ম্যাচ বাড়ানো হয় শাস্তি।
তবে মোহামেডানের চাপে বিসিবির আম্পায়ার্স বিভাগ সেই শাস্তি কমিয়ে এক ম্যাচ করে। এরপরও শাস্তি পুরোপুরি তুলে নেওয়ার দাবিতে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে কয়েকজন ক্রিকেটার বিসিবি সভাপতির সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম ও আম্পায়ার্স কমিটির প্রধান ইফতেখার রহমানও উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমে সিসিডিএমের টেকনিক্যাল কমিটি হৃদয়ের শাস্তি পুনর্বহাল করতে উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত ক্রিকেটারদের চাপে বিসিবি সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বাধ্য হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হৃদয় বাকি এক ম্যাচের বহিষ্কারাদেশ আগামী বছরের প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচে ভোগ করবেন। ফলে এই মৌসুমের বাকি দুটি ম্যাচেই খেলতে পারছেন তিনি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এক ম য চ আম প য় র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।