কানাডায় ‘লাপু লাপু’ উৎসবে জনতার ওপর তুলে দিল গাড়ি, বহু হতাহতের শঙ্কা
Published: 27th, April 2025 GMT
কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে ফিলিপিনো উৎসবে জনতার ওপর গাড়ি তুলে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেক হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় সময়ে শনিবার রাত ৮টার দিকে ইস্ট ৪১তম অ্যাভিনিউ ও ফ্রেসার স্ট্রিটে এ ঘটনা ঘটে।
ভ্যাঙ্কুভার পুলিশের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, ঘাতক চালককে আটক করা হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্যাঙ্কুভারের মেয়র কেন সিম বলেছেন, ‘লাপু লাপু উৎসবের এ ঘটনায় আমি গভীর মর্মাহত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দ্রুত আরও তথ্য জানাতে চেষ্টা করছি। তবে এখন পর্যন্ত ভ্যাঙ্কুভার পুলিশ নিশ্চিত করেছে—এই ঘটনায় একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এবং অনেকেই আহত হয়েছেন। এই কঠিন সময়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত সবার পাশে আছি। বিশেষ করে ভ্যাঙ্কুভারের ফিলিপিনো সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের সমবেদনা রইল।’
ঘটনাস্থলের বেশ কিছু ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে কানাডার নিউ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সংসদ সদস্য ডন ডেভিস ঘটনাটিকে ‘ভয়াবহ হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি টুইটে বলেন, ‘আমি সব ক্ষতিগ্রস্ত ও তাদের পরিবারের জন্য প্রার্থনা করছি।’
কী এই লাপু লাপু উৎসব?
লাপু লাপু ডে ব্লক পার্টি একটি স্ট্রিট ফেস্টিভাল। এটি ফিলিপিনো সংস্কৃতি উদযাপন ও লাপু লাপু নামে পরিচিত দাতু লাপু লাপুর স্মরণে আয়োজিত হয়।
দাতু লাপু লাপু ছিলেন ফিলিপাইনের প্রথম জাতীয় বীর। ১৫২১ সালে স্প্যানিশ উপনিবেশবাদীদের বিরুদ্ধে ম্যাকটান যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।
২০২৩ সাল থেকে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় ২৭ এপ্রিল দিনটি ‘লাপু লাপু ডে’ হিসেবে স্বীকৃত। উৎসবটি আয়োজিত হয় দক্ষিণ ভ্যাঙ্কুভারের সানসেট এলাকায়।
মূলত জন অলিভার সেকেন্ডারি স্কুল থেকে ইস্ট ৪৯তম অ্যাভিনিউ পর্যন্ত এলাকায় এবং ফ্রেসার স্ট্রিটের পশ্চিম পাশের পার্কিং লটে লাপু লাপু উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’