রাজশাহী পলিটেকনিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
Published: 27th, April 2025 GMT
ছয় দফা দাবি আদায়ে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। রোববার বেলা সোয়া ১১টা থেকে থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নিজ ক্যাম্পাসে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
সকালে ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের সপ্তম পর্বের শিক্ষার্থী সালমান আহমেদ তুষার বলেন, দীর্ঘ এক মাসের অধিক সময় ধরে ছয় দফা দাবি আদায়ে কারিগরি ছাত্ররা আন্দোলন করে আসছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে শুধু একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনও কোনো ইতিবাচক সাড়া পাইনি। আজ কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে শিক্ষামন্ত্রালয় কর্তৃক গঠিত ৮ সদস্যের কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বৈঠক থেকে ইতিবাচক সাড়া না পেলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, চলমান আন্দোলনের কারণে গত এক মাস ধরে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ও দাপ্তরিক সব কাজ বন্ধ রয়েছে। সবশেষ গত ২১ এপ্রিল ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।