পৃথিবীর দিকে ছুটে আসছে নিয়ন্ত্রণহীন পুরোনো মহাকাশযানের ক্যাপসুল
Published: 3rd, May 2025 GMT
৫০ বছরেরও বেশি সময় পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা সোভিয়েত আমলে পাঠানো ‘কসমস ৪৮২’ মহাকাশযানের অবতরণ ক্যাপসুল নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। মহাকাশযানের অবতরণ ক্যাপসুলটি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় সম্পূর্ণ ধ্বংস না হয়ে কোনো স্থানে আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
১৯৭২ সালে ভেনাস অভিযানের উদ্দেশ্যে ‘কসমস ৪৮২’ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়। তবে উৎক্ষেপণের সময় ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় মহাকাশযানটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়। মূল মহাকাশযানটি ১৯৮১ সালে পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় বায়ুমণ্ডলে পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও অবতরণ ক্যাপসুল কক্ষপথে রয়ে যায়। এখন এই অবতরণ ক্যাপসুলটি ধীরে ধীরে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে।
আকারে একটি গাড়ির সমান ক্যাপসুলটিতে শক্তিশালী তাপরোধক আবরণ রয়েছে, যা এটিকে পুরোপুরি পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। ফলে এটি সরাসরি মাটিতে আঘাত হানার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে জ্যোতির্বিদ জোনাথন ম্যাকডাওয়েল জানিয়েছেন, কসমস ৪৮২ মহাকাশযানের অবশিষ্ট অংশ ৭ থেকে ১৩ মের মধ্যে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। ক্যাপসুলটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় সম্পূর্ণ ধ্বংস না হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়তে পারে। তবে এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়া পরামর্শ দিয়ে ম্যাকডাওয়েল বলেন, ‘এ ধরনের বস্তু পৃথিবীতে প্রবেশের পর সাধারণত মানুষের ওপর আঘাত হানার সম্ভাবনা কয়েক হাজারের একভাগ। এটি নিষ্ক্রিয় এবং এতে কোনো পারমাণবিক উপাদান নেই। তাই বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ নেই।’
ম্যাকডাওয়েলের তথ্যমতে, ক্যাপসুলটিতে একটি প্যারাশুট থাকলেও সেটি কাজ করবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে এটি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ২০০ মাইল গতিতে পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে, যা কার্যত একটি গাড়িকে আকাশ থেকে ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা।
নেদারল্যান্ডসের টিইউ ডেলফট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ মার্কো ল্যাংব্রুকের মতে, ৯ বা ১০ মে স্যাটেলাইটটির পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের সম্ভাবনা বেশি। এটি পৃথিবীর ৫২ ডিগ্রি উত্তর থেকে ৫২ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে যেকোনো স্থানে পড়তে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চীনের জে-৩৫ যুদ্ধবিমান পাকিস্তান কেনায় উদ্বিগ্ন ভারত
২০২৪ সালের নভেম্বরে চীন তাদের ৫ম প্রজন্মের দ্বিতীয় স্টিলথ ফাইটার জে-৩৫ উন্মোচন করে। বহুমুখী অভিযানের জন্য দুই ইঞ্জিন, একক আসনের সুপারসনিক যুদ্ধবিমনিা জে-৩৫-এ রয়েছে ইলেকট্রনিকভাবে স্ক্যান করা অ্যারে, একটি ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল টার্গেটিং সিস্টেম এবং ইনফ্রারেড সার্চ-অ্যান্ড-ট্র্যাক।
চীন সরকারের মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি করা বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল যুদ্ধবিমান এফ-৩৫ এর তুলনায় জে-৩৫ কে বর্ণনা করেছে - আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ধ্বংস করার শ্রেষ্ঠ যুদ্ধবিমান।
ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে ৪০টি জে-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনবে। এর প্রথম চালন চলতি বছরের শেষের দিকে হাতে পাবে পাকিস্তান। আর এই বিষয়টি ভারতের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে এনডিটিভি অনলাইন।
চায়না ডেইলি জানিয়েছে, জে-৩৫ অন্যান্য অস্ত্র ব্যবস্থার সাথে ‘লক্ষ্যবস্তু শেয়ার করে নিতে’ পারে। যেমন-ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং লক্ষ্যবস্তুগুলোকে ধ্বংস করার জন্য অন্যান্য অস্ত্রকে নির্দেশ করার জন্য তার রাডার ব্যবহার করতে পারে। তবে এখানে বড় বৈশিষ্ট্য হল স্টিলথ ক্ষমতা।
জে-৩৫ এর রাডার ক্রস-সেকশন শূন্য দশমিক ০০১ বর্গমিটার বলে জানা গেছে, যা এফ-৩৫ এর সাথে তুলনীয়। এই সক্ষমতা ভারতের সাথে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের নতুন যুদ্ধবিমান সনাক্ত করা খুব কঠিন করে তুলবে। এর অর্থ সীমান্তের কাছে আসার সাথে সাথে ভারত যুদ্ধবিমানগুলো শনাক্ত করতে আরো বেশি সময় নেবে।
সাবেক ফাইটার পাইলট গ্রুপ ক্যাপ্টেন অজয় আহলাওয়াত (অবসরপ্রাপ্ত) এনডিটিভিকে বলেন, “এটি উদ্বেগজনক খবর। পাকিস্তানি রঙের জে-৩৫ এর যেকোনো সংস্করণ আমাদের পক্ষে উদ্বেগ তৈরি করবে।”
ঢাকা/শাহেদ