৫০ বছরেরও বেশি সময় পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা সোভিয়েত আমলে পাঠানো ‘কসমস ৪৮২’ মহাকাশযানের অবতরণ ক্যাপসুল নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। মহাকাশযানের অবতরণ ক্যাপসুলটি বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় সম্পূর্ণ ধ্বংস না হয়ে কোনো স্থানে আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

১৯৭২ সালে ভেনাস অভিযানের উদ্দেশ্যে ‘কসমস ৪৮২’ মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হয়। তবে উৎক্ষেপণের সময় ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় মহাকাশযানটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়। মূল মহাকাশযানটি ১৯৮১ সালে পৃথিবীতে ফিরে আসার সময় বায়ুমণ্ডলে পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও অবতরণ ক্যাপসুল কক্ষপথে রয়ে যায়। এখন এই অবতরণ ক্যাপসুলটি ধীরে ধীরে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে।

আকারে একটি গাড়ির সমান ক্যাপসুলটিতে শক্তিশালী তাপরোধক আবরণ রয়েছে, যা এটিকে পুরোপুরি পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। ফলে এটি সরাসরি মাটিতে আঘাত হানার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে জ্যোতির্বিদ জোনাথন ম্যাকডাওয়েল জানিয়েছেন, কসমস ৪৮২ মহাকাশযানের অবশিষ্ট অংশ ৭ থেকে ১৩ মের মধ্যে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে পারে। ক্যাপসুলটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের সময় সম্পূর্ণ ধ্বংস না হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়তে পারে। তবে এ বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়া পরামর্শ দিয়ে ম্যাকডাওয়েল বলেন, ‘এ ধরনের বস্তু পৃথিবীতে প্রবেশের পর সাধারণত মানুষের ওপর আঘাত হানার সম্ভাবনা কয়েক হাজারের একভাগ। এটি নিষ্ক্রিয় এবং এতে কোনো পারমাণবিক উপাদান নেই। তাই বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ নেই।’

ম্যাকডাওয়েলের তথ্যমতে, ক্যাপসুলটিতে একটি প্যারাশুট থাকলেও সেটি কাজ করবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে এটি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ২০০ মাইল গতিতে পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে, যা কার্যত একটি গাড়িকে আকাশ থেকে ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনা।

নেদারল্যান্ডসের টিইউ ডেলফট বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ মার্কো ল্যাংব্রুকের মতে, ৯ বা ১০ মে স্যাটেলাইটটির পৃথিবীতে পুনঃপ্রবেশের সম্ভাবনা বেশি। এটি পৃথিবীর ৫২ ডিগ্রি উত্তর থেকে ৫২ ডিগ্রি দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে যেকোনো স্থানে পড়তে পারে।
সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব শ র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা: কী ঘটেছিল ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট

কী ঘটেছিল সেদিন

দিনটি ছিল রোববার। তারিখের হিসাবে ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা ঘটে সেদিন। চট্টগ্রাম থেকে ৪৪ জন যাত্রী নিয়ে বিজি-৪২৬ নম্বরের ফ্লাইটটি ঢাকায় জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করে। বিমানটি ছিল ফকার ফ্রেন্ডশিপ বা সংক্ষেপে এফ-২৭ । ওই সময় আবহাওয়া ছিল দুর্যোগপূর্ণ। শ্রাবণ মাস থাকায় সকাল থেকেই বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইছিল। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন কায়েস আহমদ মজুমদার, সঙ্গে ছিলেন কো-পাইলট সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানা। প্রচুর বৃষ্টির মধ্যে বেলা আড়াইটার দিকে বিমানটি দুই দফা অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়। পরে তৃতীয় দফার চেষ্টায় ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে রানওয়ে থেকে কিছুটা দূরে অবতরণ করতে গিয়ে বাউনিয়া বিলের মধ্যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। শুধু তা–ই নয়, বিমানটি প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট পানির গভীরে ডুবে যায়। মৃত্যু হয় হতভাগ্য ৪৪ যাত্রী, দুই পাইলট, তিন ক্রুসহ ৪৯ জনের। অর্থাৎ দুর্ঘটনায় কেউ বেঁচে ছিলেন না। যাত্রীদের মধ্যে একজন ব্রিটিশ, একজন জাপানি ও বাকিরা বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। জানা যায়, যাত্রীদের বেশির ভাগ মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার জন্য একটি সংযোগ ফ্লাইট ধরতে ঢাকায় আসছিলেন। এটিই বাংলাদেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা। বিমানটির ৪৪ যাত্রীর মধ্যে ১২ জন মাসকাট, ১০ জন দুবাই ও আবুধাবি এবং একজন বাহরাইন যাওয়ার যাত্রী ছিলেন। তাঁরা ট্রানজিট প্যাসেঞ্জার হিসেবে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসছিলেন।

বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পাইলট সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা: কী ঘটেছিল ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট
  • উড়োজাহাজে থাপ্পড়ের শিকার যাত্রীর খোঁজ মিলেছে, ঘটনার সময় ভয়ে কাঁপছিলেন তিনি
  • কাপ্তাই হ্রদ: মৎস্য আহরণের প্রথম দিন রাজস্ব আয় ২০ লাখ টাকা