জীববিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষার আগে তুমি সময় পেয়েছ। ভালো করে রিভিশন দেবে, কারণ তুমি পরীক্ষার আগে সময় পেয়েছ। এ বিষয়ে মোট ১৪টি অধ্যায় রয়েছে। বহুনির্বাচনি অংশে ২৫ নম্বর, সৃজনশীল অংশে ৫০, ব্যবহারিক অংশে ২৫ নম্বরসহ মোট ১০০ নম্বরে পরীক্ষা হবে।

বহুনির্বাচনি অংশ—

বহুনির্বাচনি অংশে প্রতিটি অধ্যায় থেকে কমপক্ষে একটি করে প্রশ্ন থাকবে। কোনো অধ্যায় থেকে একের বেশিও প্রশ্ন থাকতে পারে। সুতরাং বহুনির্বাচনি অংশে ভালো নম্বরের জন্য পুরো বইয়ের সব অধ্যায়ের বিষয়বস্তুর সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য, উদাহরণ ও চিত্রের বিভিন্ন অংশ ভালোভাবে পড়তে হবে।

সৃজনশীল অংশ—

সৃজনশীল অংশে ৮টি প্রশ্ন থেকে ৫টির উত্তর দিতে হবে। সময় বরাদ্দ থাকবে ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। সৃজনশীল অংশে ভালো নম্বরের জন্য জীবনপাঠ, জীবকোষ ও টিস্যু, জীবনীশক্তি, খাদ্য, পুষ্টি ও পরিপাক; জীবে পরিবহন; রেচনপ্রক্রিয়া; জীবের প্রজনন; জীবের বংশগতি ও বিবর্তন অধ্যায় মনোযোগসহকারে পড়তে হবে। সৃজনশীল অংশের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর বুঝে লেখবে, প্রয়োজনে ছবি আঁকবে।

সৃজনশীল প্রশ্ন কীভাবে লিখবে—

.

নম্বর প্রশ্নটি সৃজনশীল অংশের জ্ঞানমূলক। এখানে পাঠ্যপুস্তকে উল্লেখি করা কোনো সংজ্ঞা জানতে চাওয়া হয়।

উদাহরণস্বরূপ প্রশ্ন করা হলো, ক্লোরোসিস কাকে বলে? সংজ্ঞাটি সঠিকভাবে লিখতে পারলে শিক্ষার্থী বরাদ্দকৃত পূর্ণ ১ নম্বর পাবে।

. নম্বর প্রশ্নটি অনুধাবনমূলক। এখানে পাঠ্যপুস্তকের জ্ঞানের আলোকে কোনো বিষয়কে ব্যাখ্যা করতে হয়; যেমন প্রশ্ন করা হলো, পিটুইটারিকে কেন অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি বলা হয়? উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির সংজ্ঞার আলোকে পিটুইটারিকে ব্যাখ্যা করতে পারলেই বরাদ্দ করা পূর্ণ ২ নম্বর পাবে।

গ. নম্বর প্রশ্নটি প্রয়োগমূলক। ধরা যাক, উদ্দীপকের চারটি চিত্রের মধ্যে অগ্ন্যাশয়কে P দ্বারা চিহ্নিত করা হলো। প্রশ্ন করা হলো, P চিহ্নিত অঙ্গটির গঠন বর্ণনা করো। উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে P চিহ্নিত অংশটি চিনতে পারলে ১ নম্বর পাবে। অঙ্গটির অবস্থান চিহ্নিত করলে বা অঙ্গটি সম্পর্কে কোনো সঠিক ধারণা দিতে পারলে ২ নম্বর এবং অঙ্গটি চিনে অবস্থান উল্লেখ করে এর গঠন বর্ণনা করতে পারলেই বরাদ্দ করা পূর্ণ ৩ নম্বর পাবে।

ঘ. নম্বর প্রশ্নটি উচ্চতর দক্ষতাভিত্তিক। ধরা যাক, উদ্দীপকের চারটি চিত্রের মধ্যে ডিম, রুটি ও ঘি—এ তিনটি খাদ্যকে Q, R ও S দ্বারা চিহ্নিত করা হলো।

প্রশ্ন হলো Q, R, S তিনটি খাদ্যের পরিপাকে কোনটিতে সবচেয়ে কম এনজাইম প্রয়োজন? পরিপাক পদ্ধতি বর্ণনা করে মতামত দাও।

উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে কোনটি কোন ধরনের খাদ্য, তা লিখতে পারলে ১ নম্বর পাবে। কোন খাদ্যের পরিপাকনালির কোন অঞ্চলে হয়, তা লিখলে ২ নম্বর পাবে। খাদ্য তিনটির ধরন, পরিপাক কোন অংশে সম্পন্ন হয়, খাদ্য তিনটির পরিপাক পদ্ধতি লিখতে পারলে ৩ নম্বর পাবে। খাদ্য তিনটির ধরন, পরিপাক কোন অংশে সম্পন্ন হয়, তিনটি খাদ্যের পরিপাক পদ্ধতি উল্লেখ করে কোন খাদ্যে সবচেয়ে কম এনজাইম প্রয়োজন, সে সম্পর্কে সুচিন্তিত মতামত প্রদান করতে পারলেই বরাদ্দ করা পূর্ণ ৪ নম্বর পাবে।

চিত্র আঁকবে সঠিকভাবে—

১. প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরের সঙ্গে সম্পকি৴ত চিত্র সঠিকভাবে আঁকা গুরুত্বপূর্ণ। এতে বেশি নম্বর পাওয়া সহজ হবে।

. পরীক্ষার হলে চিত্র আঁকার ব্যাপারটি সহজ ও দ্রুত করতে হলে এখন পরীক্ষার আগে তুমি বাসায় চিত্র আঁকাবে।

. প্রতিটি চিত্রের অবশ্যই ‘নাম’ সঠিকভাবে লিখবে।

. প্রতিটি চিত্রের বিভিন্ন অংশের নাম বা নামের লেবেলিং করবে।

জীববিজ্ঞানে ভালো করতে—

. বিজ্ঞানবিষয়ক অনেক নাম রয়েছে, তার বানান সঠিকভাবে লিখবে।

. বৈজ্ঞানিক নাম লেখার সময় সব সময় ইটালিক অক্ষরে লিখবে।

. সাল, নাম, তথ্য সঠিক করে লিখতে হবে।

. ভুল কোনো তথ্য লিখবে না।

. মনে না থাকলে বানিয়ে কোনো তথ্য লিখবে না। এতে পরীক্ষকের মনে তোমার সম্পর্কে ভুল ধারণা পোষণ করবে।

আরও পড়ুনথাইল্যান্ডের এআইটি স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, জেনে নিন সব তথ্য০৪ মে ২০২৫মনে রাখা জরুরি—

. উদ্ভিদের নামের স্বীকৃতির নিয়ম দেওয়ার প্রতিষ্ঠান—ICBN।

. প্রাণীর নামের স্বীকৃতির নিয়ম দেওয়ার প্রতিষ্ঠান—ICZN।

. একটি আদর্শ নিউরনের—৩টি অংশ থাকে।

. প্রোফেজ হলো মাইটোসিসের—প্রথম পর্যায়।

. এটিপিকে বলা হয়—শক্তি মুদ্রা।

. উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন—১৬টি পুষ্টি উপাদান।

৭. আমিষে শতকরা—১৬ শতাংশ নাইট্রোজেন থাকে।

. একজন সুস্থ–সবল মানুষের জন্য দিনে—৫০ থেকে ৬০ গ্রাম চর্বির প্রয়োজন।

আরও পড়ুনপ্রাথমিকে বৃত্তিও চালু করতে যাচ্ছি: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা০৩ মে ২০২৫

৯. মানবদেহে সবচেয়ে শক্ত অংশ হলো—দাঁত।

১০. পানি শোষণের একটি হাতিয়ার—ইমবাইবিশন।

১১.অণুচক্রিকার প্রধান কাজ রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করা আর রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয়—বেসোফিল হেপারিন।

১২. সর্বজনীন রক্তদাতা হলো—‘O’।

১৩. রক্ত বহন তন্ত্রের প্রধান অঙ্গ—হৃৎপিণ্ড।

১৪. একটি আদর্শ ফুলের স্তবক থাকে—৫টি।

১৫. মাঠের সবুজ ঘাস হলো—উৎপাদক।

লেখক: মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান, প্রভাষক, রূপনগর সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা

আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষার দুই মাস বাকি, পরীক্ষার্থীদের করণীয় ১০ পরামর্শ০১ মে ২০২৫আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর রুটিন, কোন পরীক্ষা কবে২০ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স জনশ ল অ শ র পর প ক পর ক ষ র বর দ দ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন

সরকারি নথিপত্রে যেকোনো ঐতিহাসিক ঘটনার ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্যের ইচ্ছাকৃত অন্তর্ভুক্তি সন্দেহাতীতভাবে ইতিহাস বিকৃতির সবচেয়ে খারাপ ধাপ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারগুলোর প্রায় প্রত্যেকে এই গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি করা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাজাকারদের, আর রাজাকারের তালিকায় সুবিদিত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের অন্তর্ভুক্তি দেখা গেছে। কিন্তু হাজারো তরুণের রক্তস্নাত জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেওয়া অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে, তা অকল্পনীয় ছিল।

কিন্তু বাস্তবতা দেখিয়েছে, আগের সেই রেশ থামেনি। দেখা যাচ্ছে, সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শহীদদের যে তালিকা করেছে, তাতে এমন অর্ধশতাধিক লোকের নাম এসেছে, যাঁরা জুলাই শহীদ নন।

জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে: শুধু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী অথবা আওয়ামী শাসক দলের লোকদের হাতে নিহত ব্যক্তিরাই জুলাই শহীদ বলে গণ্য হবেন। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, সরকারের তৈরি করা জুলাই শহীদদের তালিকায় কমপক্ষে ৫২ জনের নাম আছে, যাঁরা জমিসংক্রান্ত বিরোধ বা অন্য কারণে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন কিংবা নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ছাড়া তালিকায় তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন ছাত্রলীগ নেতা আছেন। এমনকি তালিকায় এমন একজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যিনি প্রতিবাদীদের ওপর হামলায় যুক্ত ছিলেন।

প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এককালীন মোট ৩০ লাখ টাকা দেবে সরকার। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরে দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক শহীদ পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছে। ঢাকায় তাদের ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।

জনমানসের যৌক্তিক ধারণা, এই অর্থনৈতিক সুবিধার প্রলোভন তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় প্রতারণা, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অপকৌশলের সুযোগ তৈরি করেছে। শুধু জালিয়াতি করে শহীদ দেখিয়ে শুধু সহায়তা নেওয়া নয়; সংশ্লিষ্ট নিহতের ঘটনায় মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার নজিরও মিলেছে।

এই পরিস্থিতি প্রমাণ করছে, তালিকাভুক্তকরণের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক ও আর্থিক স্বার্থ কাজ করে থাকতে পারে। ঘটনাটিকে দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মকর্তার মিলিত কৌশল এবং সুযোগসন্ধানীদের চক্রান্ত হিসেবে বিবেচনা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা। তবে প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি সরকার আমলে নিয়েছে, এ জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাতে চাই।

বহু শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার এক মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। তাদের মনে রাখতে হবে, শহীদের মর্যাদাকে সরকারি পরিসরে আর্থিক প্রলোভন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সুবিধা বা স্বার্থপর উদ্দেশ্যে বিকৃত করা হলে সেটি ইতিহাস, নৈতিকতা ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব লঙ্ঘনের অমার্জনীয় অন্যায় হয়ে ওঠে।

এ অন্যায় থেকে বাঁচতে ও মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনে অবিলম্বে বিতর্কিত সব নামের সব সরকারি সুবিধা অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে। স্বাধীন ও অরাজনৈতিক কমিটি গঠন করে প্রতিটি নামের পুনঃ যাচাই নিশ্চিত করা জরুরি। বাদ পড়া শহীদদের নামও তালিকায় যুক্ত করতে হবে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে যাদের গাফিলতি বা দুর্নীতির কারণে এই অনিয়ম হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অমর মাইলফলক। এর শহীদদের তালিকায় নকল বা অপ্রাসঙ্গিক নাম সংযোজন করা হলে ‘বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা’ সব ‘ধরার ধুলায় হবে হারা’। সরকারকে এ সত্য উপলব্ধি করতে হবে।

আশার কথা হলো, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কথা ও কাজের সম্মিলিত প্রয়াস আমরা দেখব, সেটিই কাম্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • নোবিপ্রবি উপাচার্যের সঙ্গে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতবিনিময়
  • জনবল নিয়োগ দিচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পদ ৪৩০
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • জানুয়ারি থেকে বিশেষ বৃত্তি পাবেন জবি শিক্ষার্থীরা
  • আইএইচটি ও ম্যাটসের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে রাশিয়া-বেলারুশ সামরিক মহড়ায় কেন অংশ নিল ভারত
  • তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে আবেদন আজ বিকেলে, ক্লাস ১৩ নভেম্বর
  • বাংলাদেশ বিমানে ইন্টার্নশিপ, দৈনিক হাজিরায় সম্মানী ৬০০ টাকা