দেখতে দেখতে শেষ হয়ে এসেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের চলতি (২০২৪-২৫) মৌসুম। এখন টিকে আছে মাত্র চারটি দল—বার্সেলোনা, ইন্টার মিলান, পিএসজি ও আর্সেনাল।
সেমিফাইনালের প্রথম লেগ হয়ে গেছে গত সপ্তাহেই। যেখানে পিএসজি ১-০ গোলে আর্সেনালকে হারিয়ে এগিয়ে আছে। অন্যদিকে বার্সেলোনার মাঠ থেকে ৩-৩ ড্র করে এসেছে ইন্টার মিলান। সেমিফাইনালের ফিরতি লেগ আগামীকাল ও আগামী পরশু (৬ ও ৭ মে)।

খুব স্বাভাবিকভাবেই অনেকের আগ্রহ জাগতে পারে, চ্যাম্পিয়ন লিগের সেমিফাইনাল পর্যন্ত টিকে থাকা দলগুলো কত টাকা পাবে উয়েফার কাছ থেকে? ফাইনালে গেলে বা চ্যাম্পিয়ন হলেই বা কত টাকা পাওয়া যায়।
উয়েফা বেশ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, ২০২৪-২৫ মৌসুমে পুরস্কারের অর্থ আগের বছরের তুলনায় অনেক বাড়ছে। এবার পুরো টুর্নামেন্টের জন্য মোট ২৪৩.

৭ কোটি ইউরো (প্রায় ৩৩,৬৩৪ কোটি টাকা) অর্থ পুরস্কার বরাদ্দ করেছে উয়েফা, যা আগের মৌসুমে (২০২৩-২৪) ছিল ২০৩ কোটি ইউরো ( প্রায় ২৮,০০০ কোটি টাকা)।

আরও পড়ুনপ্রেমের মাঠে নেইমার: তিন প্রেমিকা, তিন সন্তান এবং আরও একজনের অপেক্ষা২০ ঘণ্টা আগে

এই বিশাল অঙ্কের প্রাইজমানি কীভাবে বণ্টন করা হবে, চলুন দেখি:
চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রাইজমানির তিনটি ভাগ।

১. অংশগ্রহণ ফি: মোট ৬৭ কোটি ইউরো (প্রায় ৯২৩২ কোটি টাকা)

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এবার ৩৬টি ক্লাব অংশ নিয়েছে। প্রতিটি ক্লাবের মধ্যে ৬৭ কোটি বা ৬৭০ মিলিয়ন ইউরো অর্থ সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে। মানে প্রতিটি ক্লাব পাবে ১৮.৬২ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২৫৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা) করে। তবে এই অর্থের ১৭.৮৭ মিলিয়ন (২৪৬ কোটি টাকা) দেওয়া হয়েছে অগ্রিম, বাকি ৭ লাখ ৫০ হাজার ইউরো (১০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা) দেওয়া হবে পরে। শুধু অংশগ্রহণ করতে পারলেই এত টাকা! বুঝতে পারছেন তো, কেন ক্লাবগুলো চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পেতে এত মরিয়া।

২. পারফরম্যান্সভিত্তিক আয়: মোট ৯১.৪ কোটি ইউরো (প্রায় ১২,৫৯৯ কোটি টাকা)

এখানেই আসল লড়াই! যে দল যত ভালো খেলবে, তত বেশি আয়। যেভাবে ভাগ করা হবে এই পারফরম্যান্সভিত্তিক পুরস্কার:


এ ছাড়া নিজেদের লিগে র‍্যাঙ্কিং বোনাস হিসেবে আরও কিছু টাকা পাবে ক্লাবগুলো। এই অর্থটাকে মোট ৬৬৬টি ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগের মূল্য ২ লাখ ৭৫ হাজার ইউরো। সবচেয়ে নিচে, মানে ৩৬তম অবস্থানে যে দলটি, তারা পাবে এক ভাগ। ৩৫তম অবস্থানে থাকা দুই পাবে দুই ভাগ। এইভাবে শীর্ষে থাকা দলটা পাবে ৩৬ ভাগ, মানে ৯ কোটি ৯০ লাখ ইউরো (১৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা)।  

আরও পড়ুনশমিতের হাতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট, হামজার সঙ্গে খেলতে আর কত দেরি২১ ঘণ্টা আগে৩. মার্কেট পুল (ব্রডকাস্ট রেভিনিউ ভাগ): মোট ৮৫.৩ কোটি (১১,৭৩২ কোটি টাকা)

এটি নির্ভর করে ওই ক্লাবের বাজারমূল্য (বড় বাজার = বেশি আয়) এবং ক্লাবের  উয়েফা র‍্যাঙ্কিং ও সম্প্রচার জনপ্রিয়তার ওপর। এই অংশটি একেক ক্লাবের জন্য একেক রকম, কেউ পায় অনেক বেশি, কেউ অনেক কম।
তাহলে এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতলে একটি ক্লাব সর্বোচ্চ কত টাকা পেতে পারে, সেই হিসাবটাও করে ফেলা যাক।

মনে রাখতে হবে, এই যে ১৫০৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা সম্ভাব্য আয় চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপাজয়ী দলের, সেটা মার্কেট পুল অংশ বাদে। বড় ক্লাবগুলো মার্কেট পুল থেকেও বড় অংশ পায়। সে ক্ষেত্রে আয় বেড়ে ১২০ মিলিয়ন (প্রায় ১৬৫৪ কোটি টাকা) পর্যন্তও হতে পারে!

আরও পড়ুনকোকেন, কান্না আর হুমার হারিয়ে যাওয়া: ওয়াসিম আকরামের জীবনের অন্ধকার অধ্যায়০৪ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ কত ট ক ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

আরো পড়ুন:

নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা

সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন 

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।

বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।

অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • অ্যালবামের গল্প বলবে ‘পেনোয়া’
  • ১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা