চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলে কত টাকা পাবে বার্সেলোনা কিংবা অন্যরা
Published: 6th, May 2025 GMT
দেখতে দেখতে শেষ হয়ে এসেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের চলতি (২০২৪-২৫) মৌসুম। এখন টিকে আছে মাত্র চারটি দল—বার্সেলোনা, ইন্টার মিলান, পিএসজি ও আর্সেনাল।
সেমিফাইনালের প্রথম লেগ হয়ে গেছে গত সপ্তাহেই। যেখানে পিএসজি ১-০ গোলে আর্সেনালকে হারিয়ে এগিয়ে আছে। অন্যদিকে বার্সেলোনার মাঠ থেকে ৩-৩ ড্র করে এসেছে ইন্টার মিলান। সেমিফাইনালের ফিরতি লেগ আগামীকাল ও আগামী পরশু (৬ ও ৭ মে)।
খুব স্বাভাবিকভাবেই অনেকের আগ্রহ জাগতে পারে, চ্যাম্পিয়ন লিগের সেমিফাইনাল পর্যন্ত টিকে থাকা দলগুলো কত টাকা পাবে উয়েফার কাছ থেকে? ফাইনালে গেলে বা চ্যাম্পিয়ন হলেই বা কত টাকা পাওয়া যায়।
উয়েফা বেশ আগেই জানিয়ে দিয়েছিল, ২০২৪-২৫ মৌসুমে পুরস্কারের অর্থ আগের বছরের তুলনায় অনেক বাড়ছে। এবার পুরো টুর্নামেন্টের জন্য মোট ২৪৩.
এই বিশাল অঙ্কের প্রাইজমানি কীভাবে বণ্টন করা হবে, চলুন দেখি:
চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রাইজমানির তিনটি ভাগ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এবার ৩৬টি ক্লাব অংশ নিয়েছে। প্রতিটি ক্লাবের মধ্যে ৬৭ কোটি বা ৬৭০ মিলিয়ন ইউরো অর্থ সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হবে। মানে প্রতিটি ক্লাব পাবে ১৮.৬২ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ২৫৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা) করে। তবে এই অর্থের ১৭.৮৭ মিলিয়ন (২৪৬ কোটি টাকা) দেওয়া হয়েছে অগ্রিম, বাকি ৭ লাখ ৫০ হাজার ইউরো (১০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা) দেওয়া হবে পরে। শুধু অংশগ্রহণ করতে পারলেই এত টাকা! বুঝতে পারছেন তো, কেন ক্লাবগুলো চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা পেতে এত মরিয়া।
২. পারফরম্যান্সভিত্তিক আয়: মোট ৯১.৪ কোটি ইউরো (প্রায় ১২,৫৯৯ কোটি টাকা)এখানেই আসল লড়াই! যে দল যত ভালো খেলবে, তত বেশি আয়। যেভাবে ভাগ করা হবে এই পারফরম্যান্সভিত্তিক পুরস্কার:
এ ছাড়া নিজেদের লিগে র্যাঙ্কিং বোনাস হিসেবে আরও কিছু টাকা পাবে ক্লাবগুলো। এই অর্থটাকে মোট ৬৬৬টি ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগের মূল্য ২ লাখ ৭৫ হাজার ইউরো। সবচেয়ে নিচে, মানে ৩৬তম অবস্থানে যে দলটি, তারা পাবে এক ভাগ। ৩৫তম অবস্থানে থাকা দুই পাবে দুই ভাগ। এইভাবে শীর্ষে থাকা দলটা পাবে ৩৬ ভাগ, মানে ৯ কোটি ৯০ লাখ ইউরো (১৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা)।
এটি নির্ভর করে ওই ক্লাবের বাজারমূল্য (বড় বাজার = বেশি আয়) এবং ক্লাবের উয়েফা র্যাঙ্কিং ও সম্প্রচার জনপ্রিয়তার ওপর। এই অংশটি একেক ক্লাবের জন্য একেক রকম, কেউ পায় অনেক বেশি, কেউ অনেক কম।
তাহলে এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতলে একটি ক্লাব সর্বোচ্চ কত টাকা পেতে পারে, সেই হিসাবটাও করে ফেলা যাক।
মনে রাখতে হবে, এই যে ১৫০৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা সম্ভাব্য আয় চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপাজয়ী দলের, সেটা মার্কেট পুল অংশ বাদে। বড় ক্লাবগুলো মার্কেট পুল থেকেও বড় অংশ পায়। সে ক্ষেত্রে আয় বেড়ে ১২০ মিলিয়ন (প্রায় ১৬৫৪ কোটি টাকা) পর্যন্তও হতে পারে!
আরও পড়ুনকোকেন, কান্না আর হুমার হারিয়ে যাওয়া: ওয়াসিম আকরামের জীবনের অন্ধকার অধ্যায়০৪ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ কত ট ক ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান বিষয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের বিরোধ
ইরান বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের বিরোধ দেখা দিয়েছে।
ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপ বিবেচনার প্রেক্ষাপটে তুলসী গ্যাবার্ড মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পছন্দের তালিকা থেকে সরে গেছেন বলেই মনে হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এমনটাই জানিয়েছেন।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ৪৩ বছর বয়সী তুলসীকে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক পদে মনোনীত করেন ট্রাম্প। আলোচনা-সমালোচিত এই মনোনয়ন মার্কিন সিনেটে অনুমোদন পাওয়ার পর গত বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তুলসী দায়িত্ব নেন। আগে গোয়েন্দা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা না থাকলেও দুই দশকের বেশি সময় মার্কিন বাহিনীতে সেনাসদস্য হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তুলসীর।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান হলেন তুলসী গ্যাবার্ড১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫এনবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, অতীতে তুলসীকে বিদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের কড়া সমালোচনা করতে দেখা গেছে।
তুলসীর ঘনিষ্ঠরা জোর দিয়ে বলছেন, ইরান ইস্যুতে হোয়াইট হাউসে কিছুটা টানাপোড়েন আছে। তবে জনপরিসরে যে প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, তার অনেকটাই অতিরঞ্জিত।
২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ৪৩ বছর বয়সী তুলসীকে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক পদে মনোনীত করেন ট্রাম্প। আলোচিত-সমালোচিত এই মনোনয়ন মার্কিন সিনেটে অনুমোদন পাওয়ার পর গত বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি তুলসী দায়িত্ব নেন। আগে গোয়েন্দা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা না থাকলেও দুই দশকের বেশি সময় মার্কিন বাহিনীতে সেনাসদস্য হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তুলসীর।অবশ্য এনবিসি নিউজের সঙ্গে কথা বলা কেউই এটা মনে করেন না যে ট্রাম্পের ইরান নীতির কারণে তুলসী প্রশাসন ছাড়বেন, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যদি এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়েও পড়ে।
রাজনৈতিকভাবে তুলসীর নাজুক অবস্থানটি চলতি সপ্তাহে প্রকাশ্যে আসে, যখন ট্রাম্প গত মার্চ মাসে কংগ্রেসে দেওয়া তাঁর (তুলসী) সাক্ষ্য নিয়ে তাঁকে একপ্রকার আক্রমণ করেন।
কংগ্রেসে তুলসী বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মনে করে না যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, যা ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
আরও পড়ুনতুলসী গ্যাবার্ড হলেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান, ট্রাম্পের আরেক বিজয়১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘সে (তুলসী) কী বলেছে, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমি মনে করি, তারা (ইরান) পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর খুব কাছাকাছি রয়েছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এক ব্যক্তি বলেছেন, গত মার্চে কংগ্রেসে তুলসীর সাক্ষ্যের পর থেকে এ পর্যন্ত ইরান বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
কিন্তু একজন প্রেসিডেন্ট যদি প্রকাশ্যে তাঁর জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের বক্তব্য অস্বীকার করেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, এই ইস্যুতে তুলসী কি এখন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া থেকে ছিটকে পড়েছেন?
এনবিসি নিউজের সঙ্গে কথা বলা কেউই অবশ্য এটা মনে করেন না যে ট্রাম্পের ইরান নীতির কারণে তুলসী প্রশাসন ছাড়বেন, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র যদি এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়েও পড়ে।তা ছাড়া এই বিরোধের বিষয়টি ট্রাম্পের ‘মেগা’ (মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন) জোটের মধ্যকার একটি বিভাজনও প্রকাশ করে। মেগার কিছু সমর্থক ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যেকোনো সামরিক পদক্ষেপে পাশে থাকার পক্ষপাতী। আর অন্যরা বলছেন, এ ধরনের হস্তক্ষেপ ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতির পরিপন্থী হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ আলোচনা থেকে তুলসীকে কার্যত দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে।
ইসরায়েল-ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা নিয়ে আলোচনার জন্য ৮ জুন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের ক্যাম্প ডেভিডে শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়। এই বৈঠকে যোগ দেননি তুলসী। এতে করে প্রশাসনে তাঁর অবস্থান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক পদে ট্রাম্প মনোনীত তুলসী গ্যাবার্ডকে নিয়ে কেন এত বিতর্ক১৫ নভেম্বর ২০২৪তবে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা এনবিসি নিউজকে বলেছেন, ক্যাম্প ডেভিডের বৈঠকটিতে তুলসী উপস্থিত থাকতে পারেননি। কারণ, ন্যাশনাল গার্ডের সদস্য হিসেবে তখন তাঁকে পূর্বনির্ধারিত প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হচ্ছিল।
গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, তুলসী একজন সাবেক সেনাসদস্য, একজন দেশপ্রেমিক, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একনিষ্ঠ সমর্থক। ২০২৪ সালে ট্রাম্প যে জোট গড়েছেন, তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ তিনি। তুলসী যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা দলের অবিচ্ছেদ্য সদস্য। যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি হুমকি থেকে নিরাপদ রাখতে তাঁর নিরলস প্রচেষ্টার জন্য তাঁরা কৃতজ্ঞ।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক কে এই তুলসী গ্যাবার্ড১৮ মার্চ ২০২৫তবে তুলসীর সাম্প্রতিক ইরান-সংক্রান্ত মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন কিছু রিপাবলিকান। তাঁদেরই একজন লুইজিয়ানার রিপাবলিকান সিনেটর জন কেনেডি। গত সপ্তাহে তিনি তুলসীকে কটাক্ষ করে মন্তব্য দেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা বলেন, তুলসী অনেক দিন ধরেই ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছেন। পাশাপাশি তিনি পর্দার আড়ালে কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুনট্রাম্পের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসীকে নিয়ে ১০০ সাবেক মার্কিন কূটনীতিক ও কর্মকর্তার উদ্বেগ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪