কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলা চালায় ভারত। সামরিক এ পদক্ষেপের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই এ নামটি দিয়েছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

ভারত সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকটি সূত্র ইন্ডিয়া টুডে টিভিকে বলেছে, মোদি মনে করেন, পেহেলগামের হামলার ঘটনায় ভারতের মানুষকে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে।

হিন্দু বিবাহিত নারীরা তাঁদের বিয়ের প্রতীক হিসেবে সিঁথিতে সিঁদুর পরে থাকেন। আর সে সিঁদুরের নামেই এ অভিযানের নামকরণ করা হয়েছে।

গত সপ্তাহজুড়ে ভারতে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকগুলোতে মোদি একটি বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছেন। তা হলো, পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভারতীয় পুরুষদের লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় নারীরা বিধবা হয়েছেন, পরিবারগুলো ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।

কর্মকর্তাদের মোদি আরও বলেন, এই হামলার জবাব এমন হতে হবে, যেন বোঝা যায় যে ভারত এ ক্ষেত্রে ছাড় দেয় না।

অপারেশন সিঁদুর নামের এ অভিযানে ভারতের তিন বাহিনীর সমন্বিত পদক্ষেপ দেখা গেছে, যা বিরল। ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী সম্মিলিতভাবে একটি বহুমুখী অভিযান চালিয়েছে। পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে হামলা চালিয়েছে তারা।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দাবি, স্থল ও সমুদ্রভিত্তিক পথগুলো ব্যবহার করে অভিযানটি চালানো হয়েছে। মূলত জঙ্গি ঘাঁটি ও সন্ত্রাসবাদ-সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোকে হামলার নিশানা করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।

চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই  তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।

ঢাকা/এমআর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ