বৈষম্যবিরোধী তিন নেতার ওপর হামলা, প্রতিবাদে সমাবেশ
Published: 9th, May 2025 GMT
সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মুনতাসির মেহেদী হাসানসহ তিনজনের ওপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ১টার দিকে শহরের বাহিরগোলা খাদেমের পুলের কাছে হামলার শিকার হন তারা।
শুক্রবার (৯ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হামলায় আহত অন্যরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ শহীদ এম.
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে লেখা হলো ‘প্রধানমন্ত্রী’, আ. লীগ নেতার পত্রিকা অফিসে হামলা
ভারত-পাকিস্তানের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে যোগাযোগ হয়েছে: দার
সিরাজগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাসুদ রানা বলেন, “সংবাদ পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আহত মুনতাসির মেহেদী হাসান বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে একটি মোটরসাইকেলে করে আমরা তিনজন রহমতগঞ্জ কাঠেরপুল এলাকা থেকে বাহিরগোলার দিকে যাচ্ছিলাম। এসময় দুটি মোটরসাইকেল বারবার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। আমি তাদের একটি মোটরসাইকেল থামিয়ে বেপরোয়াভাবে চালাতে নিষেধ করি। তখনই দুইজন নেমে লোহার স্টিক দিয়ে আমাকে পেটাতে শুরু করে।”
তিনি আরো বলেন, “মারধরের সময় তারা (হামলাকারী) বলতে থাকে আওয়ামী লীগ হলো আকাশের মতো, তোরা কিভাবে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করবি। এসময় বাধা দিতে গেলে তারা সেখ তাজ ও ইমরানকেও মারধর করে। এরপর আশপাশের লোকজন এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।”
মেহেদী বলেন, “ঘটনার কিছুক্ষণ আগে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিল করার জন্য ঘোষণা দিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্টে করেছিলাম। ধারণা করছি, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই পোস্ট দেওয়ার জন্য ক্ষুব্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করেছে।”
এদিকে, হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহরের চৌরাস্তা মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তারা হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা আওয়ামী লীগকে ‘গণবিরোধী ও ফ্যাসিস্ট দল’ আখ্যা দিয়ে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মুনতাসীর হাসান মেহেদী, ইয়াসিন আরাফাত ঈশান, সংগঠনের মুখপত্র টিএম মুশফিক, মুখ্য সংগঠক জুবায়ের ইসলাম সেজান এবং সংগঠক ইমরান হাসান।
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ স র জগঞ জ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস