মাঠের মাঝখানে লাগানো আছে মন্ত্রসিদ্ধ কলা গাছ। এই গাছকে ঘিরে থাকে তুলা রাশির পাতারূপী কয়েকজন মানুষ। বিভিন্ন এলাকা থেকে খেলায় অংশ নিতে আসে তান্ত্রিক দল। নিজ নিজ মন্ত্র বলে যে দল তাদের মন্ত্রের মাধ্যমে পাতাকে নিজেদের দাগের মধ্যে টানতে পারবে ও বশ করতে পারবে সেই দলই পয়েন্ট পাবে। পরে পয়েন্ট হিসাব করে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই খেলা।
গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া এমন ঐতিহ্যবাহী পাতা খেলা সোমবার বিকেলে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী নওতা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খেলার জন্য তান্ত্রিকরা সঙ্গে লাঠি, জবা ও গোলাপ ফুল, মন্ত্র পড়া লোটা ভর্তি পানি, ধুলা, আগরবাতি, মোমবাতিসহ বিভিন্ন প্রকার গাছের শিকড়-বাকড় ব্যবহার করেন। তার সঙ্গে পড়তে থাকেন নানা ধরনের তন্ত্র-মন্ত্র। এই খেলা দেখতে মাঠের চারপাশে হাজারো উৎসুক নারী-পুরুষ ভিড় করে উপভোগ করেন।
তান্ত্রিক ইসমাইল হোসেন বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার মধ্যে পাতা খেলা একটা অন্যতম খেলা। আমরা তান্ত্রিকরা তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে এ খেলা করে থাকি। মাঠের মধ্যে একটি মন্ত্র পড়া কলাগাছ লাগানো থাকে। যাকে চাকোল বলে। এই চাকোলের চারপাশে মানুষরূপী পাতা থাকে। আমরা তান্ত্রিকরা পাতাগুলোকে মন্ত্র বলে টেনে আনি। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ খেলা দেখতে বেশ উপভোগ করে থাকেন।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া এই খেলা দেখে খুব আনন্দ পেয়েছি। তবে স্বপ্নে মাজার থেকে এই ধরনের নির্দেশ পেয়ে তিনি খেলাটির আয়োজন করেছেন, তার কোনও ভিত্তি আছে বলে মনে হয় না।
রায়কালীর বাসিন্দা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, পাতা খেলাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকাজুড়ে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে। এই খেলা দেখতে বিপুল উচ্ছ্বাস নিয়ে মাঠে আসেন হাজার হাজার দর্শক। এমন ভিন্নধর্মী খেলা দেখে খুশি দর্শকরা।
আয়োজক রায়কালীর নওতা গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, নিজ উদ্যোগে এই পাতা খেলার আয়োজন করেছি। গ্রাম বাংলা থেকে হারানো ঐতিহ্য ফেরাতেই এমন আয়োজন। কেউ সহায়তা না করলেও প্রতি বছর এই খেলার আয়োজন করবো।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ স ন বল ন র মন ত র এই খ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল