শাহরিয়ারের খুনিদের গ্রেপ্তার এবং উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে অবস্থান
Published: 21st, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যায় জড়িত সব অপরাধীকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত এবং উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে দেড় ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ‘সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’।
আজ বুধবার বেলা আড়াইটায় এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে বিকেল চারটায় শেষ করেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা ‘এক দুই তিন চার, প্রক্টর তুই গদি ছাড়’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘সাম্যর রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘সাইফুদ্দিনের কত গুণ, ৯ মাসে ২ খুন’, ‘৮ দিন হয়ে গেল, খুনি অধরা রয়ে গেল’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ ঝোলে, ভিসি-প্রক্টর কী করে?’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
পরে সূর্য সেন হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আবিদুর রহমান বলেন, ‘এই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাসহ সব ক্ষেত্রে গাফিলতি করছে। আমার ভাই হত্যার পর দেখি এই প্রক্টর রাজনৈতিক প্রটোকল নিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করেন। এই প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো মামলা করার উদ্যোগ দেখতে পাইনি।’
আবিদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘যে রিপোর্ট তিন দিনে আসার কথা, কিন্তু আজকে আট দিন হয়ে যাওয়ার পরও তার কোনো সুরাহা দেখতে পাইনি।’
বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী নিযুক্ত এই ভিসি-প্রক্টরকে মনে করতাম শিক্ষার্থীদের ভরসার জায়গা। কিন্তু তাঁরা আমাদের আশাহত করেছেন।’
জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই প্রক্টরের আমলে ফ্যাসিস্টের ছবি মুছে ফেলা হয়, পিটিয়ে তোফাজ্জলকে হত্যা করা হয়, পয়লা বৈশাখে ফ্যাসিস্টের মোটিফ পুড়িয়ে ফেলা হয়, ক্যাম্পাসে লাশ ঝোলে কিন্তু তিনি তার কোনো বিচার করতে পারেন না।
অবিলম্বে প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন জাহিদুল ইসলাম।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি