বৃহস্পতিবার ভোরে সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদারদের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুরো ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন বাপ্পা। জানিয়েছেন, জীবন হাতে নিয়ে পরিবার নিয়ে বের হয়ে এসেছেন তিনি।
ভিডিও বার্তায় বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে আগুন লেগেছে। আমার ঠিক নিচের ফ্লোরেই আগুনের সূত্রপাত, সেখান থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে।’

ফায়ার সার্ভিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাপ্পা বলেন, ‘তারা সময়মতো না পৌঁছালে অন্য ধরনের কিছু হতো। পুরো ঘটনাটি একটি দুর্ঘটনা যদিও, তবে তা ভয়ংকর একটি ঘটনা। আমরা অনুধাবন করেছি, সেটা হচ্ছে সময়মতো ফায়ার ব্রিগেডের পৌঁছানো কতটা জরুরি। সম্ভবত পুরো ঘটনা ঘটেছিল ভোরবেলায়, তখন ট্রাফিক হয়তো অনেক কম ছিল, সে কারণে তারা দ্রুত আসতে পেরেছে। এ জন্যই আমরা সুস্থভাবে বের হতে পেরেছি। যদি ট্রাফিক থাকত, জ্যাম থাকত, উৎসুক মানুষ থাকত, তাহলে হয়তো সময় অনেক বেশি লাগত, তাহলে হয়তো দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যেত।’

আরও পড়ুনবাপ্পা মজুমদারদের ভবনে আগুন, স্ত্রী–সন্তানসহ প্রাণে বাঁচলেন গায়ক৪ ঘণ্টা আগে

বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘এতটুকু আমি বলতে পারি, আমরা জীবন হাতে নিয়ে বের হয়ে এসেছি। আমি এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব দেব ফায়ার সার্ভিসের সব সদস্যকে।’
দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে কিছু প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন তিনি। বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু জিনিস ইগনোর করি। এবং আজকে এ পরিস্থিতিতে পড়ার পর আমার মনে হলো এই ছোট ছোট জিনিস আমাদের জীবনে কতটা জরুরি। এর একটি হলো ফায়ার এক্সটিংগুইশার মেশিন, প্রতিটি বাসায় এক থেকে দুটি থাকা ভীষণ জরুরি। আমার মনে হয় অনেক ড্যামেজ কন্ট্রোল করা যায়, ছোট্ট একটি ইনভেস্টমেন্টে। আরও মনে করি, প্রতিটি বাসায় কিছু বিশেষ মাস্ক থাকা জরুরি। অনেক ধোঁয়াতে যেসব কাজে আসবে। সেগুলো খুব বেশি দামি নয়। প্রতিটি পরিবারের জন্য জরুরি। আজ আমার পরিবারের জন্য দুটি জিনিসই খুব জরুরি ছিল।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ