কলেজছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবার বলছে হত্যাকাণ্ড
Published: 23rd, May 2025 GMT
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মোদাহরপুর গ্রামের একটি বসতঘরের বারান্দা থেকে মিজানুর রহমান (১৯) নামের এক তরুণের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মিজানুর উপজেলার বাদশাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
পুলিশ বলছে, কলেজছাত্র মিজানুর আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে। তবে তাঁর পরিবার বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে মোদাহরপুর গ্রামের মিজানুর রহমান রাতের খাবার খান। পরে আজ ভোর ৪টার দিকে তাঁর বোনের স্বামী নবী নূরের (৩৫) সঙ্গে কথা বলে বসতঘরের পূর্ব পাশে বৈঠকঘরে ঘুমাতে যান। পরে সকাল ৬টার দিকে অপর এক স্বজনের বসতঘরের বারান্দার আড়ার সঙ্গে গলায় শাড়ি প্যাঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় মিজানুরকে দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন তাঁর ফুফু ঝুমঝুমা বেগম (৩০)। খবর পেয়ে সকাল সোয়া নয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।
ঘটনার পর থেকে মিজানুরের ওই স্বজন ও তাঁর পরিবারের লোকজন পলাতক থাকায় তাঁদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মিজানুর রহমানের বড় ভাই কৃষক অপু মিয়া বলেন, ‘মামার বাড়ির লোকজন মিজানুরকে মারধর করে হত্যার পর বসতঘরের বারান্দার আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছেন বলে আমাদের মনে হচ্ছে। আমার ছোট ভাই ও মামাতো বোনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে গ্রামে সালিসও হয়েছে। তার মৃত্যুর জন্য কে কে দায়ী, সে তার ডায়েরিতে তা লিখে গেছে। ডায়েরিটা ও মিজানুরের মোবাইল থানা-পুলিশ নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনায় থানায় মামলা করব।’
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক বলেন, কলেজছাত্রের লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, এটি আত্মহত্যার ঘটনা। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১৪ দেশে ফের শুল্ক আরোপ, বাণিজ্যে অস্থিরতার শঙ্কা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিত্র দেশ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরও ১৪ দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এসব দেশকে আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করবে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এর খারাপ প্রভাব পড়বে।
শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এমন অন্য দেশগুলো হলো– বাংলাদেশ, মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, কাজাখস্তান, তিউনিসিয়া ও মালয়েশিয়া।
মিয়ানমার ও লাওসের ওপর সবচেয়ে বেশি ৪০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। মিয়ানমার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও সামুদ্রিক খাবার এবং লাওস ট্রেক্সটাইল পণ্যসহ জুতা, কাঠের আসবাব, ইলেকট্রনিক উপাদান ও অপটিক্যাল ফাইবার রপ্তানি করে। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া ৩৬ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছে। কম্বোডিয়া যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল, পোশাক, জুতা ও সাইকেল এবং থাইল্যান্ড কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, রাবার পণ্য ও রত্নপাথর রপ্তানি করে। সার্বিয়ার ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবা এবং গাড়ির টায়ার রপ্তানি করে থাকে।
ইন্দোনেশিয়া ৩২ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হয়েছে। দেশটি পাম অয়েল, কোকো মাখন ও সেমিকন্ডাক্টর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বসনিয়ার প্রধান রপ্তানি অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা প্লাটিনাম, হীরা, যানবাহন এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ রপ্তানি করে।
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কাজাখস্তান, তিউনিসিয়া ও মালয়েশিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। জাপান যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রাংশ ও ইলেকট্রনিকস পণ্য; দক্ষিণ কোরিয়া যানবাহন, যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিকস পণ্য; কাজাখস্তান তেল, ইউরেনিয়াম, ফেরোঅ্যালয় ও রুপা এবং মালয়েশিয়া ইলেকট্রনিকস ও বৈদ্যুতিক পণ্য রপ্তানি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিউনিসিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো, প্রাণী ও উদ্ভিজ্জ চর্বি, পোশাক, ফল ও বাদাম। বাংলাদেশের ওপর শুল্ক আরোপ হয়েছে ৩৫ শতাংশ। দেশটি বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে।
শুল্ক আরোপের চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই দেশগুলোর সঙ্গে তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়। তবে তা হতে হবে ন্যায্য ও সুষম বাণিজ্যের মাধ্যমে। তিনি হুমকি দিয়েছেন, কোনো দেশ প্রতিশোধমূলক পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিলে, তাদের ওপর আরও উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে। আর বাণিজ্য বাধা দূর করতে আলোচনা চাইলে সেই পথ খোলা আছে। সোমবার শুল্ক আরোপের সময়সীমা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, সময়সীমার ঘোষণাটি শতভাগ মানা হবে তা নয়। কেউ আলোচনা চাইলে পথ খোলা।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করবেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসবে। খবর রয়টার্স ও বিবিসির।