প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ভ্যাটিকান সিটিতে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় কালো কুর্তা কেন পরেছিলেন, তার কারণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শফিকুল আলম লেখেন, ‘আমরা তখন কাতারে ছিলাম, যেখানে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস “আর্থনা সামিট”-এ অংশ নিয়েছিলেন। কাতারে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর খবর পেলাম।’

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের সফরের দ্বিতীয় দিনে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার তারিখ ঘোষণা করা হয় এবং প্রধান উপদেষ্টা তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের পক্ষে প্রবলভাবে দাঁড়ানো একজন মহান ব্যক্তিকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে সেই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।’

শফিকুল আলম বলেন, সমস্যাটা হলো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে কালো পোশাক, বিশেষ করে কালো স্যুট পরা প্রয়োজন হয়। কিন্তু অধ্যাপক ইউনূস বহু বছর আগে স্যুট পরা বন্ধ করে দিয়েছেন।

প্রেস সচিব বলেন, ‘তিনি যেখানেই যান, বাংলাদেশে তৈরি গ্রামীণ চেকের কুর্তা পরেন। আমরা দেখলাম, তাঁর কাছে একটি কালো কোটি আছে, কিন্তু কালো কুর্তা নেই।’

শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সহকারীরা দোহায় বিভিন্ন মার্কেটে কালো কুর্তা খুঁজেছেন, কিন্তু যা পান, তা ছিল অত্যন্ত দামি।

এরপর তাঁরা সাধারণ মার্কেটের দিকে যান এমন একজন দরজি খুঁজে বের করতে, যিনি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কালো কুর্তা সেলাই করতে পারবেন। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হলো না।

শফিকুল আলম বলেন, ‘পরে আমরা এমন একটি দোকান পাই, যেখানে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আসা একজন দরজি অধ্যাপক ইউনূসকে চিনতেন। তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কালো কুর্তা তৈরি করতে রাজি হন।’

শফিকুল আলম বলেন, এর খরচ হয়েছিল বাংলাদেশি টাকায় পাঁচ হাজার টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে দেওয়া ‘হুমকি’র প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি

নরসিংদী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে দেওয়া ‘হুমকি’র আইনগত প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী, আইনজীবী ও বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিরা।

শুক্রবার ১৪৭ জনের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন মাধ্যমে আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তাকে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে তিনটি সংগঠন- তানযীমুল মাদারিসিল কাওমিয়া নরসিংদী এবং নরসিংদী জেলা খেলাফত মজলিস ও হেফাজতে ইসলাম। এ বিবৃতিগুলোতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নাদিরা ইয়াসমিনকে অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়ে ‘দুঃখজনক পরিস্থিতির দায়’ কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন ব্যক্তি ফেসবুকে নাদিরা ইয়াসমিনকে নিয়ে অপমানজনক, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পোস্ট দিচ্ছেন। মিথ্যা প্রচার এবং হুমকির মাধ্যমে তাকে মানসিক এবং সামাজিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। যা একজন শিক্ষক ও নারী নাগরিকের জন্য শুধু অসম্মানজনকই নয়, সম্পূর্ণ বেআইনি।

তারা আরও বলেন, নাদিরা ইয়াসমিন দীর্ঘদিন ধরে নারী অধিকার, সমতা ও মানবিক মর্যাদার পক্ষে কাজ করে আসছেন। তার নেতৃত্বে গড়ে ওঠা ‘নারী অঙ্গন’ সংগঠনটি বহু নারী শিক্ষার্থীর আত্মপ্রত্যয় গঠনে ভূমিকা রেখেছে। যেখানে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা বিবেচনায় রেখে কার্যক্রম পরিচালিত হয়। নারীর উন্নয়ন এবং বিকাশকে ‘ইসলামবিরোধী’ হিসেবে উপস্থাপন করা প্রকৃতপক্ষে একটি অপপ্রচার, যা মুক্তচিন্তা, একাডেমিক স্বাধীনতা এবং সংবিধান স্বীকৃত নাগরিক অধিকারবিরোধী।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ধর্মীয় সংগঠনের নামে এ ধরনের চাপ সৃষ্টি, হুমকি এবং সামাজিক ঘৃণার উসকানি আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য এক অশুভ দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। একজন শিক্ষকের জীবন ও কাজের পরিবেশ ধ্বংস করার এ প্রচেষ্টা শুধু একটি ব্যক্তিকে নয়, পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। আমরা শিক্ষকের একাডেমিক স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠন করার অধিকারের ওপর এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

এতে বলা হয়, বারবার নারীর প্রতি অপমান ও হয়রানির কারণ বর্তমান সরকারের নীরবতা। ধর্মের নামে যখন কোনো মহল এমন দমন ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে রাজনৈতিক এবং সামাজিক সুবিধা নিতে চায়, তখন পরিস্থিতির এ রকম অবনতি ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রকে কঠোর ভূমিকা নেওয়া উচিত।

বিজ্ঞপ্তিতে কয়েকটি দাবি জানানো হয়েছে। সেগুলো হলো-

১. অধ্যাপক নাদিরা ইয়াসমিনের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
২. যেসব ব্যক্তি ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে ও হুমকি দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

৩. প্রশাসনকে মিথ্যা প্রচার ও অনলাইন হয়রানি বন্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।

৪. কলেজ কর্তৃপক্ষকে তার একাডেমিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষায় যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আন্তঃকলেজ দ্বন্দ্ব নিরসনে করণীয়
  • মা ও আমি
  • সাতক্ষীরায় প্রতিবন্ধী ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার
  • বগুড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ১
  • বন্দরে ব্যবসায়ীর বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনায় বিক্ষোভ
  • কেরানীগঞ্জে ছিনতাইয়ের শিকার জবি শিক্ষার্থী হৃদয়, তিন লাখ টাকার ক্ষতি
  • অধ্যাপক ইউনূসের কালো কুর্তার রহস্য জানালেন প্রেস সচিব
  • শিক্ষকা নাদিরা ইয়াসমিনকে দেওয়া ‘হুমকি’র প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি
  • শিক্ষক নাদিরা ইয়াসমিনকে দেওয়া ‘হুমকি’র প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি