নির্বাচনের আগে কেউ পকেটে ৫০০ বা ১ হাজার টাকা গুঁজে দিয়ে ভোট চাইলে তা মুখের ওপর ছুড়ে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। আজ মঙ্গলবার দুপুরে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার গাইবান্ধা মোড়ে দলটির এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘একটা জিনিস মনে রাখবেন, নির্বাচনের আগে যে আপনার পকেটে ৫০০-১ হাজার টাকা দিয়ে ভোট চায়, সে হচ্ছে জনগণের সবচেয়ে বড় শত্রু। সে পাঁচ বছরের জন্য আপনার মুখ বন্ধ করে দিতে চায়। সে পাঁচ বছরে আপনার সবচেয়ে বড় নাগরিক অধিকার ভোটাধিকারকে কেড়ে নিতে চায়। ওই টাকা তার মুখের ওপর ছুড়ে ফেলবেন। না হলে পরের পাঁচ বছর বিভিন্ন প্রয়োজনে আপনার কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা লুট করে নেবে। আপনার তখন আর বলার মুখ থাকবে না। নতুন বাংলাদেশে আমরা এই পরিবর্তনগুলো চাই।’

দিনাজপুরের ছয় উপজেলায় এনসিপির পথসভা ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঘোড়াঘাট উপজেলায় এ পথসভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনসিপির ঘোড়াঘাট উপজেলা শাখার সংগঠক আবদুল মান্নান সরকার।

নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের স্বপ্নকে বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাজারের বেশি মানুষ জীবন দিয়েছেন। তিন বছরের শিশু, ছয় বছরের জাবির তাদের জীবন দিয়েছে। যারা জীবন দিয়েছে, তাদের অর্ধেকের বেশি ১৮ বছরের নিচে।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে সারজিস আলম বলেন, ‘খারাপকে যদি খারাপ বলার সৎ সাহস দেখাতে না পারেন, তাহলে মানুষটা প্রশ্রয় পেয়ে যাবে। আর প্রশ্রয় পেতে পেতে সবশেষে কী হয়, সেটা আমরা হাসিনার থেকে দেখেছি। কাউকে আর হাসিনা থেকে খুনি হাসিনা হয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। আপনাদের কাছে আমাদের জায়গা থেকে এই অনুরোধটুকু জানাই।’

এই পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, আতিক মুজাহিদ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান, সাদিয়া ফারজানা, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ, ইমামুর রশিদ, আল মেহরাজ শাহরিয়ার প্রমুখ। পথসভা শেষে জনসাধারণের মাঝে প্রচারপত্র বিলি করেন তাঁরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র জ বন দ উপজ ল আপন র বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ