কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ত্বরান্বিত করার পেছনে রংপুরে আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ছাড়াও আরেকটি ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, সেটি হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলা।

সেদিন ক্যাম্পাসে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের বহিরাগত নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গুলি চালিয়েছিল। পরদিন এর ছবি সব কটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল। তবে তার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে ছবিগুলো সবচেয়ে বেশি মানুষকে ক্ষুব্ধ করেছিল, তা হলো ছাত্রীদের ওপর তাদের হামলে পড়া। এক ছাত্রীকে মেরে রক্তাক্ত করার ছবি এখনো মানুষ ভুলতে পারে না।

প্রায় ১০ মাসে এসে সেই রক্তাক্ত ছবি আবারও ফিরে এল, সঙ্গে আরেকটি নতুন রক্তাক্ত ছবিসহ। নতুন ছবিটি গতকাল বুধবার চট্টগ্রামে একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে হামলার ঘটনার। কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মীকে মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে, যেখানে একজন নারীর মাথা ও চেহারা রক্তে ভরে গেছে। রাজনৈতিক এই কর্মসূচি কিসের জন্য ছিল? আর সেখানেও হামলা চালানো হলো কেন?

মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আওয়ামী লীগ আমলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়েছিল।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করা অন্তর্বর্তী সরকার এ ট্রাইব্যুনালকে নতুন করে সাজিয়েছে বা গঠন করেছে। আওয়ামী লীগ আমলে ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠায় আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজহারুলের রায় রিভিউ করেন বর্তমান ট্রাইব্যুনাল। যার পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের রায়ে আজহারুল মঙ্গলবার খালাস পান এবং এক দিন পর মুক্তিও পেয়ে যান।

সংবাদমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পারছি, বিচারপ্রক্রিয়ায় ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল বা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি বলে আদালত আজহারুলকে খালাস দিয়েছেন। কিন্তু তিনি নির্দোষ কি দোষী—তা এ রায়ের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়নি; ফলে তাঁর মুক্তি নিয়ে জনমনে অসন্তোষ ও প্রশ্ন রয়ে গেছে।

গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের কর্মসূচিতে হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ছড়িয়ে পড়েছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রক ত ক ত আজহ র ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ