পল্লী বিদ্যুৎ: সংস্কারের নামে প্রহসনের ২০ বছর
Published: 31st, May 2025 GMT
ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এখন প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিবাদমুখর মানুষকে তাঁদের দাবি জানিয়ে স্লোগান দিতে বা মিছিল করতে দেখা যাচ্ছে। বিষয়টা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে যাওয়ায় অনেকেই গুরুত্ব দিয়ে তাঁদের কথা শুনছেন না। কারও কারও ধারণা, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই হুট করে এই দাবিদাওয়া তোলা হচ্ছে, আগে এসব ছিল না। যা তাঁরা দেখতে পাচ্ছেন না তা হলো, এ রকম বেশ কিছু দাবির পেছনে রয়েছে দীর্ঘ প্রাতিষ্ঠানিক জড়তা বা ‘লক-ইন’, যার সংস্কার প্রয়োজন।
প্রাতিষ্ঠানিক ‘লক-ইন’ কীপ্রাতিষ্ঠানিক ‘লক-ইন’ বলতে এমন একটি পরিস্থিতি বোঝায়, যেখানে প্রতিষ্ঠান বা পুরো সেক্টরের মধ্যে কায়েমি–ব্যবস্থা, প্রচলিত রীতিনীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা এত গভীরভাবে প্রোথিত হয়ে পড়ে, যা দরকারি পরিবর্তন বা নতুন প্রযুক্তি গ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করে। ১৯৯৩ সালে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী ডগলাস নর্থ দেখিয়েছিলেন, প্রাতিষ্ঠানের সঙ্গে উন্নয়নের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাঁর তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেই নব্বইয়ের দশক থেকে সারা বিশ্বে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারকে নীতিনির্ধারকেরা আগের চেয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখা শুরু করেন।
পল্লী বিদ্যুতের ‘লক-ইন’সাধারণ চোখে দেখলে মনে হবে, সাম্প্রতিক অনেক আন্দোলনের দাবিগুলো নেহাতই কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষার উদ্দেশ্যে হচ্ছে। কিন্তু ভালোভাবে লক্ষ করলে দেখা যাবে, এর পেছনে দীর্ঘ প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ইতিহাস রয়েছে। এমন একটি উদাহরণ হচ্ছে বাংলাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ খাত।
ন্যাশনাল রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন কো–অপারেশন অ্যাসোসিয়েশনের (এনআরইসিএ) কারিগরি ও ইউএসএআইডির আর্থিক সহায়তায় ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি/আরইবি) প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে আরইবির অধীন ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পিবিএস) বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকার ১৪ কোটি গ্রাহককে সেবা প্রদান করে আসছে।
বাংলাদেশের মোট সরবরাহ করা বিদ্যুতের ৫৭ শতাংশ সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুৎ। পল্লী বিদ্যুৎ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে, বিশেষ করে শিল্প, কৃষিসহ অন্যান্য সেবা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে ২০ বছর ধরে সংস্কার নিয়ে আলোচনা চলছে, অথচ এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এভাবে প্রাতিষ্ঠানিক জড়তার (লক-ইন) একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পল্লী বিদ্যুতের সংস্কারের প্রশ্নটি।
আরও পড়ুনপল্লী বিদ্যুতের দ্বৈতব্যবস্থার সংকট নিরসন কেন প্রয়োজন১৫ নভেম্বর ২০২৪পল্লী বিদ্যুতের দ্বৈত ব্যবস্থার সংকট২০২০ সালে আরইবিতে বিদ্যুৎ–বিভ্রাটসংক্রান্ত একটি কর্মশালার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উৎপাদনঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও শুধু পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনায় নিম্নমানের মালামালের কারণে শতকরা ৬৮% বিদ্যুৎ–বিভ্রাট ঘটে। আরইবি আবহাওয়া বা ভৌগোলিক অবস্থার কথা বিবেচনা না করে একই ‘ডিজাইন ক্রাইটেরিয়া’ ব্যবহার করে সারা দেশে বিতরণব্যবস্থা সম্প্রসারণ করেছে।
পঞ্চগড় ও বরিশালের বিতরণ লাইনের খুঁটির গভীরতা একই হওয়া উচিত কি না, সংস্থাটি তা বিবেচনায় নেয়নি। স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান থেকে বোঝা যায়, লবণাক্ত এলাকা ও স্বাভাবিক এলাকার গ্রাউন্ডিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে আলাদা গ্রেডের মালামাল ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু আরইবি সারা দেশে একই ‘ডিজাইন ক্রাইটেরিয়া’ ব্যবহার করায় অবকাঠামো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোকে মালামাল কিনতে হয় আরইবি থেকে। নীতি প্রণয়নসহ সমিতির জনবলের নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি, বেতন-ভাতা, তদন্ত-শাস্তি—এ সবই আরইবির সিদ্ধান্তক্রমে বাস্তবায়িত হয়। যে আরইবি এই সিস্টেমের নীতিনির্ধারণ, মালামাল সরবরাহ, গুণগত মান যাচাইসহ সবকিছু করে, তাদের জবাবদিহির জন্য পাওয়া যায় না। অথচ কোনো দুর্ঘটনা বা ত্রুটি হলে আরইবিই আবার তদন্ত করে। তখন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরই শাস্তি হয়। এরপরও আরইবির দেওয়া ত্রুটিপূর্ণ ডিজাইন বা মালামাল সরবরাহ বন্ধ হয়নি।
২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মাধ্যমে বিষয়গুলো প্রথমবারের মতো দেশবাসীর নজরে আসে। বিতরণব্যবস্থায় ব্যবহৃত মালামাল যে নিম্নমানের, সেটি প্রকাশ্যে আনেন খোদ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। তাঁদের অভিযোগ, ঝড়-বৃষ্টি হলে পল্লী বিদ্যুতের লাইন বন্ধ হয়ে যায়, লাইন পুনরুদ্ধারে সময় বেশি লাগে। এ কারণে অনেক সময় গ্রাহকের সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের বচসা হয়। এমনকি পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত বা মারধরের শিকার হতে হয়। কিন্তু দেশের প্রায় ১৪ কোটি মানুষের বিদ্যুৎসেবা যাঁরা নিশ্চিত করছেন, তাঁরা এই যৌক্তিক বিষয়টি সামনে নিয়ে আসায় কর্তৃপক্ষ তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট হতে পারেনি।
■ বাংলাদেশের মোট সরবরাহকৃত বিদ্যুতের ৫৭ শতাংশ সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুৎ। পল্লী বিদ্যুৎ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে, বিশেষ করে শিল্প, কৃষিসহ অন্যান্য সেবা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ■ এত দিন ধরে বদলি নিয়ে কর্মীরা সেভাবে অভিযোগ না তুললেও শেষের দিকে লাইনম্যানদের বদলিগুলো ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে প্রচণ্ড অস্থিরতা তৈরি করেছে।২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎসেবা বন্ধ রাখায় পুরো বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে। তখন ১৭ জন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাঁদের কাউকে কাউকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। লক্ষণীয় হলো, হাসিনা সরকারের আমলে যাঁদের ‘দেশদ্রোহী’ বা ‘উন্নয়নবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তাঁদেরই ‘স্বৈরাচারের দোসর’ বলা হয়েছে। অর্থাৎ পল্লী বিদ্যুতের কর্মীদের ন্যায্য দাবিকে উপেক্ষা করতে উভয় সরকারের আমলেই রাজনৈতিক রং দেওয়া হয়েছে।
এরপর আরইবি-পিবিএস বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো পর্যালোচনার জন্য ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর সরকার একটি জাতীয় কমিটি গঠন করে। কমিটি গঠনের পর সরকারের প্রতি আস্থা রেখে আন্দোলনকারীরা তাঁদের সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। এতেও বরখাস্ত, স্ট্যান্ড রিলিজ এ রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থামেনি। জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে আরইবি।
আরও পড়ুনবিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভারতনির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসা কেন জরুরি১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫সর্বশেষ আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয় ২০ মে, যখন সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বিচারে চাকরিচ্যুতি, সাময়িক বরখাস্ত, স্ট্যান্ড রিলিজ, হয়রানিমূলক বদলি এক মাসে আড়াই হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতের ‘অপরিহার্য’ কর্মী লাইনম্যানদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। বদলিগুলো এতই নির্বিচারে হয়েছে যে এর মধ্যে একজন মৃত ব্যক্তিকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। আরইবি যদিও যুক্তি দিয়েছে, সংস্কারের অংশ হিসেবে কর্মীদের বদলি করা হয়েছে, কিন্তু বদলিগুলো যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রয়োজনে করা হয়নি, তা স্পষ্ট।
এত দিন ধরে বদলি নিয়ে কর্মীরা সেভাবে অভিযোগ না তুললেও শেষের দিকে লাইনম্যানদের বদলিগুলো ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে প্রচণ্ড অস্থিরতা তৈরি করেছে। পল্লী বিদ্যুতের সেবা যাঁরা দিয়ে থাকেন, বিশেষ করে লাইনম্যান; তাঁদের গ্রামের প্রতিটি রাস্তাঘাট, বিদ্যুতের খুঁটি, সরঞ্জাম, মিটার ও বাড়ি চেনার দরকার হয়; কোনো বিপর্যয়ের সময় কোথায় সমস্যা এবং দ্রুত কীভাবে সমাধান করা যায়, সেই বিষয়ে তাঁদের জানতে হয়। এর ফলে নতুন জায়গায় বদলি হলে প্রথম দিকে তাঁদের ভুলভ্রান্তি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এতে অপরিচিত এলাকায় গিয়ে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া ও চাকরিচ্যুতির আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
পল্লী বিদ্যুতের এসব লাইনম্যান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন, কিন্তু দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ পান না। তাহলে তাঁরা এখন কেন এই ‘ঝুঁকি’ নেবেন? এ বর্ষা মৌসুমে লাইনম্যানদের বদলি করায় পল্লী বিদ্যুতের পুরো সেবা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
এত বেশি কর্মীকে একসঙ্গে বদলি করায় পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা ঢাকামুখী মার্চ শুরু করে কঠোর অবস্থান নিতে বাধ্য হন। ২৭ মে থেকে দেশজুড়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। সংস্কারের দাবির পাশাপাশি তাঁদের দাবি, চেয়ারম্যানের অপসারণ ও নানান হয়রানিমূলক আচরণ বন্ধ করে চাকরিচ্যুত কর্মীদের আবার বহাল করা।
২০২৪ সালের মে মাসে ইউএসএইডের এক প্রতিবেদনে গাজীপুরের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি–১ নিয়ে বলা হয়েছিল, পিবিএস থেকে অভিযোগ এলে পুরস্কার বা পদোন্নতির প্রভাব খাটিয়ে আরইবি ভয়ের প্রেক্ষাপট তৈরি করে। এতে পিবিএসগুলো পর্যাপ্ত যুক্তি বা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো উত্থাপন করার সুযোগ পায় না।
বাংলাদেশের ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিত্র গাজীপুরের মতোই ছিল। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের পর তারা ভয় কাটিয়ে নিজেদের দাবিগুলো জোরালোভাবে তুলে ধরেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের উদ্যোগপল্লী বিদ্যুতের কাঠামো মূল্যায়ন করতে যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেই কমিটি এ বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদনের ওপর একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে। এতে আরইবি, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রতিনিধিসহ বিদ্যুৎ বিভাগ–সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন। প্রেজেন্টেশনে আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দ্বৈত ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে পুনর্গঠনের তিনটি উপায় আলোচিত হয় এবং তার ভিত্তিতে মতামত গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে একটি ছিল একীভূতকরণের। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে মতামত নেওয়া হলেও আরইবি মতামত দেওয়ায় বিলম্ব করায় প্রতিবেদনটি এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
কমিটি গঠনের প্রায় সাত মাস এবং প্রতিবেদন প্রস্তুতের তিন মাস অতিবাহিত হলেও সেই প্রতিবেদন এখনো জমা হয়নি। তা সত্ত্বেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি অপেক্ষা করতে রাজি ছিল। কিন্তু আরইবির হয়রানিমূলক বদলি ও কর্তৃত্ববাদী আচরণে কর্মীরা এখানে আর অপেক্ষা করার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। এদিকে ২৭ মার্চ জেলা প্রশাসক সম্মেলন ২০২৫–এ গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরইবি ও পিবিএস একীভূতকরণ ও অভিন্ন সার্ভিস কোড প্রণয়ন বাস্তবায়নে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু পুনর্বিবেচনার জন্য এ চিঠি বিদ্যুৎ বিভাগ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ফেরত দিয়েছে। ফলে দাবি একবার মেনে নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়নে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
সংস্কারের নামে প্রহসনের ২০ বছর২০০৫ সালে এনআরইসিএ প্রথম বিদ্যুৎ বিভাগে একটি সংস্কারের প্রস্তাব দেয়। ‘বাংলাদেশ রুরাল ইলেট্রিফিকেশন প্রোগ্রাম অ্যাট দ্য ক্রসরোড: অ্যান অ্যানালাইসিস অব ব্যারিয়ারস, থ্রেটস অ্যান্ড অপরচুনিটিস টু এনহান্স প্রোগ্রাম সাসটেইনেবিলিটি’ শিরোনামে সেই প্রতিবেদনে এনআরইসিএ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোকে কোম্পানি আইনে পরিচালনা করার সুপারিশ করে। এতে উদাহরণ হিসেবে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশকে (পিজিসিবি) সফলভাবে পরিচালনার উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়, কিন্তু সেই প্রতিবেদনের সুপারিশমালা বাস্তবায়িত হয়নি।
২০০৯ সালে বিদ্যুৎ বিভাগ ‘স্টাডি টু এসেস ইফেকটিভনেস অব কারেন্ট অর্গানাইজেশনাল অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট স্ট্রাকচার অব আরইবি অব বাংলাদেশ’ শিরোনামের একটি প্রতিবেদনেও আরইবিকে কোম্পানি আইনে পরিচালনা করার সুপারিশ করে। আরইবি-পিবিএস দ্বৈত ব্যবস্থাপনা বিলুপ্ত করে এই প্রতিবেদন এক ব্যবস্থাপনার আওতায় এলাকাভিত্তিক কিছু সমিতিকে একত্র করে জোনাল ইলেকট্রিসিটি কোম্পানি গঠন করার সুপারিশ করেছিল।
২০১০ সালের আরেকটি সংশোধিত প্রতিবেদনে আরইবির জবাবদিহির বিষয়ে বলা হয়েছিল, ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আরইবির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে কোনো আর্থিক দায় ও অকার্যকারিতার জন্য কোনো জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হয় না। আইন অনুযায়ী, আরইবির প্রধান দায়িত্ব ছিল সমিতিগুলোকে আর্থিক ও কারিগরিভাবে সক্ষম করে স্বাধীনভাবে পরিচালনার জন্য উপযুক্ত করে তোলা। আরইবি তার এই দায়িত্ব কার্যত অস্বীকার করে এবং পিবিএসের প্রয়োজনীয়তা পূরণে বিলম্বের কারণে ভোক্তা পরিষেবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২০১১ সালে ‘আরইডিপি (রুরাল ইলেট্রিফিকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম) ফাইনাল রিপোর্ট’ শিরোনামে এনআরইসিএর আরেকটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আরইবি সদর দপ্তরের পরিবর্তিত চাহিদা নির্ণয়ের জন্য মূল্যায়ন হয়নি। কারণ, আরইবি কখনো এ ধরনের মূল্যায়নপ্রক্রিয়া অনুমোদন করে না এবং কোনো সহযোগিতা করে না। এই প্রতিবেদনে আরইবির কাঠামো পরিবর্তন করে পাওয়ার সেক্টরের অন্যান্য ইউটিলিটির মতো গঠন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
গত ২০ বছরে তিনটি প্রতিবেদনেই পল্লী বিদ্যুতের বর্তমান কাঠামো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত যত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, তার সব কটিতেই বিদ্যমান দ্বৈত ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমকে একক ব্যবস্থাপনায় পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো সুপারিশ শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি।
শেষ কথাপল্লী বিদ্যুৎ খাতকে সংস্কার করতে কোনো সাংবিধানিক বা আইনি জটিলতা নেই। ২০ বছর ধরে যে সংস্কারের আলাপ চলছে, সেগুলোর একটি নির্মোহ পর্যালোচনা করলেই কী কী সংস্কার প্রয়োজন, তা সহজেই অনুধাবন করা সম্ভব। এতগুলো প্রকল্প এল-গেল, প্রতিবেদন দেওয়া হলো, সুপারিশ করা হলো, জনগণের টাকা গচ্চা গেল, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা জেল পর্যন্ত খাটলেন—এত কিছুর পরও এই ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হওয়া হতাশাজনক।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা বিদ্যুৎসেবা চালু রেখে ঢাকায় মার্চ কর্মসূচি পালন করেছেন, দেশজুড়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন; এত কিছুর পরও সরকারের দিক থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের ম্যান্ডেট নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংস্কার নিয়ে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
● মোশাহিদা সুলতানা সহযোগী অধ্যাপক, অ্যাকাউন্টিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
* মতামত লেখকের নিজস্ব
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ য ত র কর ম দ ব ত ব যবস থ র স প র শ কর ২০২৪ স ল র ত র কর ম র ল ইনম য ন ব যবস থ প কর ম দ র দ র বদল সরক র র বদল গ ল সরবর হ ২০ বছর গঠন কর আরইব র হয় ছ ল ম লক ব হ র কর কর র স প ব এস র জন য পর চ ল মত মত ব যবহ র একট
এছাড়াও পড়ুন:
২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না
চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরে সামগ্রিকভাবে পণ্যমূল্য ৭ শতাংশ কমবে। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে পণ্যমূল্য আরও ৭ শতাংশ কমবে। এ দাম হবে ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব নেই। দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখনো ৮ শতাংশের ঘরে। যদিও একসময় তা দুই অঙ্ক ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে। দেশের মানুষকে এখনো বাড়তি দামেই পণ্য ও সেবা কিনতে হচ্ছে। আগামী বছর নিত্যপণ্যের দাম কমবে কি না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও দেশে এর প্রভাব কম।
বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক অক্টোবর ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। যার মূল কারণ হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছে জ্বালানির দাম কমে যাওয়া। সেই সঙ্গে আরও কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে তারা। সেগুলো হলো চীনে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া এবং বিশ্ববাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় তেলের দামে বড় ধরনের পতন ঘটা। খাদ্যপণ্যের দাম বছরের শুরু থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে, কিন্তু বছরের প্রথমার্ধে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পানীয় পণ্যের দাম হঠাৎ অনেকটা বেড়ে যায়। এ ছাড়া বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। মূলত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে মানুষ সোনার দিকে ছুটেছেন।
বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে জ্বালানির দাম আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও ১০ শতাংশ কমবে। ২০২৭ সালে তা আবার প্রায় ৬ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস ২০২৬ সালে কৃষিপণ্য, খাদ্য ও কাঁচামালের দাম কমবে। চলতি বছরেও এসব পণ্যের দাম কমেছে।
জ্বালানি তেলবিশ্বব্যাংকের ২০২৬ সালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়ায় গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়লেও তেলের দাম কমে যাবে এবং সেই প্রভাবকে ছাপিয়ে যাবে। ২০২৫ সালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম হতে পারে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬৮ ডলার; ২০২৪ সালের ৮১ ডলারের তুলনায় যা বেশ কম। ২০২৬ সালে এই দাম আরও কমে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬০ ডলারে নামতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।
এই পূর্বাভাস অনুযায়ী, তেলের ব্যবহার বৃদ্ধির হার আরও কমবে—মূলত চীনের চাহিদা কমে যাওয়া, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির দ্রুত প্রসার ও বৈশ্বিক তেল সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।
২০২৫ সালে বৈশ্বিক তেলের বাজারে সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৬ সালে তা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২০ সালের সর্বোচ্চ মাত্রার তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি হবে এ সরবরাহ।
কৃষিপণ্যবিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কৃষিপণ্যের মূল্যসূচক ২০২৫ সালে স্থিতিশীল আছে। ২০২৬ সালে তা সামান্য ২ শতাংশ ও ২০২৭ সালে আরও ১ শতাংশ কমবে।
খাদ্যপণ্যের দাম, যেমন শস্য, তেল, প্রোটিনজাত খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম সাম্প্রতিক সীমার কাছাকাছি থাকবে। তবে মাঝেমধ্যে সামান্য কিছুটা ওঠানামা থাকবে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রধান ফসলগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির হার আবার দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতায় ফিরে আসছে।
২০২৫ সালের বাকি সময়ে সয়াবিনের দাম কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যে সয়াবিন সাধারণত চীনে রপ্তানি হয়, তা এবার কম দামে অন্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হতে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্রে হচ্ছে এই সয়াবিন। চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সয়াবিন কিনছে না। ফলে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে এই পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্ববাজারে দাম কমে গেলে যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিন চাষের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে, তবে ব্রাজিল তার সয়াবিন আবাদ আরও বাড়ানোর পথে রয়েছে। পানীয় পণ্যের দাম ২০২৬ সালে ৭ শতাংশ ও ২০২৭ সালে প্রায় ৫ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে চলতি বছর সারের দাম সামগ্রিকভাবে ২১ শতাংশ বাড়তি। চাহিদা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা ও কিছু অঞ্চলে সরবরাহ–ঘাটতির কারণে এ দাম বেড়ে যাওয়া। ২০২৬ ও ২০২৭ সালে দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমতে পারে। তবু ২০১৫-১৯ সালের গড় দামের তুলনায় তা অনেক বেশি থাকবে। এর কারণ হলো উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, রপ্তানি সীমাবদ্ধতা ও চলমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা।
চীন ইতিমধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট সার রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। অন্যদিকে পটাশ সরবরাহকারী বড় দেশ বেলারুশ এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে। রাশিয়া ও বেলারুশ—উভয় দেশই সারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরোপিত নতুন শুল্কের সম্মুখীন।
দেশে কেন দাম বেশিবিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজার দাম না কমার অন্যতম প্রধান কারণ ডলারের দামের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। গত তিন বছরে ডলার দাম অনেকটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে দেশের অনেক আমদানি পণ্যে শুল্ক বেশি বলে মনে করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে দাম কমছে না। বাজারে চাহিদা কত বা কখন কোন পণ্য আমদানি করতে হবে, সে বিষয়ে যথাযথ তথ্যের ঘাটতি আছে। ফলে সময়মতো পণ্য আমদানি হয় না।
আরেকটি বিষয় হলো দেশে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, তার অনেক কিছু উৎপাদিতও হয়। কিন্তু বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এসব পণ্যের সরবরাহে টান পড়েছে। বাজারের পণ্যমূল্যে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন মোস্তাফিজুর রহমান।
তিন বছর আগে দেশে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। এখন তা বেড়ে ১২২ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক মাস ধরে আমদানির ঋণপত্র খোলাও কমেছে। এতে আমসদানিতে চাপ পড়ছে।
দেশের বাজার উচ্চ মূল্যের কারণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সেলিম রায়হান বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয়, শুল্ক ও করের চাপ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে দাম কমছে না। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যন্ত অতি মুনাফা ও অস্বচ্ছ বাণিজ্যিক শৃঙ্খলের কারণেও বাজারে কৃত্রিমভাবে উচ্চমূল্য বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার অবমূল্যায়ন। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাসের সুফল ভোক্তাপর্যায়ে পড়ছে না।
সেলিম রায়হান আরও বলেন, এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণ ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা নতুন ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। পণ্য পরিবহন ও আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সরবরাহ শৃঙ্খল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
দেশে তিন বছর ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। সম্প্রতি তা কিছুটা কমলেও সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত আগস্ট মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।