চীনের মানবাকৃতির বা হিউম্যানয়েড রোবট নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। এসব রোবট মানব কর্মীদের প্রতিস্থাপন করবে না বলে জানিয়েছে বেইজিংয়ের  এক কর্মকর্তা। কয়েক বছর ধরে শ্রমিকের বিকল্প হিসেবে রোবট স্থাপনের জন্য বিতর্ক চলছে। চীনের বিভিন্ন কারখানায় এসব রোবট মানব কর্মীদের প্রতিস্থাপন করবে কি না, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এসব রোবটের কারেণ ব্যাপক বেকারত্ব সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। বিতর্কের সামনে বেইজিংয়ের একটি প্রযুক্তিকেন্দ্রের তত্ত্বাবধানকারী এক চীনা কর্মকর্তা ভিন্ন মতামত দিয়েছেন। রোবট খাতের দ্রুত সম্প্রসারণ ও রাষ্ট্রীয় তহবিল প্রদানের বিষয়ে চীন আরও বড় আকারে কাজ করছে বলে জানা গেছে।

চীনের বৃহত্তম প্রযুক্তিকেন্দ্রের মধ্যে একটি বেইজিং অর্থনৈতিক-প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অঞ্চল। এই সংস্থার উপপরিচালক লিয়াং লিয়াং বলেন, ‘হিউম্যানয়েড রোবট তাদের মানব স্রষ্টাকে প্রতিস্থাপন করবে না। এসব রোবট আসলে কারখানার উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবে ও বিপজ্জনক পরিবেশে কাজ করতে ব্যবহার করা হবে। আমরা বিশ্বাস করি না, এসব রোবট মানুষকে বেকার করতে পারে। এসব রোবট দক্ষতা বৃদ্ধি করার কাজে বা এমন কাজ করবে, যা মানুষ করতে অনিচ্ছুক। বিশাল মহাবিশ্ব বা সমুদ্রের গভীরতা অন্বেষণ করতে এসব রোবট ব্যবহার করা হবে। যেখানে মানুষ যেতে পারবে না, মেশিন সেই অনুসন্ধানে আমাদের সহায়তা করতে পারে।’

লিয়াং আরও বলেন, ‘যখন রাত হয় ও মানুষের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়, তখন মেশিন কাজ চালিয়ে যেতে পারে। আমাদের আরও ভালো, সস্তা এবং আরও ব্যবহারকারীবান্ধব পণ্য সরবরাহ করতে পারে, এমন রোবট তৈরি করা প্রয়োজন। আমরা ভবিষ্যতের উন্নয়নের জন্য কাজ করছি।’

গত মাসে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বের প্রথম রোবট হাফ-ম্যারাথন। ম্যারাথনকে ইচ্ছাকৃতভাবে এমনভাবে সাজানো হয়, যেন সেখানে রোবট মানুষকে প্রতিস্থাপন করার পরিবর্তে সমর্থন ও সহায়তা করে। হাফ-ম্যারাথনে দুটি ট্র্যাক ছিল। একদিকে মানুষ একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করেন। আর অন্যদিকে ২০টি দল একটি রোবট পরিচালনা করে, যাদের আকার ও ক্ষমতায় অত্যন্ত ভিন্নতা ছিল। লিয়াং বলেন, ম্যারাথনে মানুষের নিজস্ব ট্র্যাক থাকে। তাঁদের শারীরিক সীমা সীমিত। মেশিনকে নিজস্ব ট্র্যাকে দৌড়ানোর জন্য দেওয়া হয়। রোবট ও মানুষ আলাদা লাইনে দৌড়ায়, ভবিষ্যতে এ রকম হবে।

চীন সরকার এক্স-হিউম্যানয়েড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রোবট তৈরি করছে। এই প্রতিষ্ঠানের রোবট তিয়ানগং রোবট হাফ-ম্যারাথন জিতেছে। ক্রীড়াকেন্দ্রিক আলট্রা মডেল ১২ কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতিতে দৌড়াতে পারে।

সূত্র: রয়টার্স

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ