ছোট পর্দার আলো ছড়ানো অভিনেত্রী সাবিলা নূরের জন্য যেন সত্যিই ‘একাদশে বৃহস্পতি’ এসে গেছে। দীর্ঘ এক যুগের নাট্যজীবনে দর্শকের ভালোবাসায় জায়গা করে নেওয়া এই মেধাবী শিল্পী এবার পা রাখছেন ঢাকাই সিনেমার রুপালি জগতে। আর অভিষেকেই পেলেন এমন এক সহশিল্পী, যিনি ঢালিউডের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে মুক্তি পেতে যাচ্ছে ‘তাণ্ডব’। রায়হান রাফি পরিচালিত এই সিনেমাতেই সাবিলা নূর প্রথমবারের মতো বড় পর্দায় দেখা দেবেন, তাও আবার শাকিব খানের বিপরীতে। স্বাভাবিকভাবেই এই অভিষেক নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত সাবিলা। বলতেই হয়, শোবিজ যাত্রার এই মোড়টা তার জন্য স্বপ্নের মতোই।
প্রথম দিনই শাকিব খানের সঙ্গে শুটিং—তাতে খানিকটা নার্ভাস ছিলেন সাবিলা। কিন্তু সেই ভয় কাটিয়ে দিয়েছেন খোদ শাকিব নিজেই। সাবিলা বলেন, “শাকিব খানের সঙ্গে আমার শুটিং ছিল প্রথম দিনেই। খুব নার্ভাস ছিলাম। কিন্তু তিনি এতটা সহযোগিতা করেছেন, এত সহজ করে দিয়েছেন—সেই ভয় একদম উড়ে গেছে।”
শাকিবের প্রতি মুগ্ধতা গোপন করেননি এই নবাগত নায়িকা। তার কথায়, “তার (শাকিব খান) একটা অউরা আছে। তিনি অনেক সুদর্শন। সেটে এলেই চারপাশে একটা পরিবর্তন চলে আসে। কিন্তু তিনি কাউকে বোঝার সুযোগই দেন না, যে তিনি এত বড় একজন তারকা। বরং সবাইকে নিয়ে আনন্দে থাকেন, প্রতিটি দৃশ্য নিয়ে ভীষণ সিরিয়াস থাকেন।”
আরো পড়ুন:
ঈদ স্মৃতিতে দিলদার, শূন্যতায় ভাসে পরিবার
ঈদের দ্বিতীয় দিন ছোট পর্দার নাটক-টেলিফিল্ম
‘তাণ্ডব’ সিনেমায় সাবিলার চরিত্রের নাম ‘নিশাত’, আর শাকিব খানের চরিত্রের নাম ‘স্বাধীন’। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে সাবিলা বলেন, “যখন অ্যাকশন বলা হলো, তখন আর তাকে শাকিব খান মনে হচ্ছিলেন না। মনে হচ্ছিল, উনি স্বাধীন। আমি নিজেও তখন নিশাত হয়ে গিয়েছিলাম। তখন ক্যামেরার সামনে শুধু ক্যারেক্টার, না ছিল কোনো ভয়, না সংকোচ।”
শাকিব খানের সঙ্গে নিজের একটি মিলও খুঁজে পেয়েছেন সাবিলা। “আমি সাধারণত একটু ‘ইন্ট্রোভার্ট’। সেটে খুব শান্ত পরিবেশ পছন্দ করি। শাকিব খানও তেমন। কারও সঙ্গে অযথা কথা নয়, শুধু নিজের দৃশ্য নিয়ে ভাবনা-চিন্তায় ব্যস্ত থাকেন। এই জায়গাটা আমার খুব ভালো লেগেছে।”
সাবিলা নূরের অভিনয়-যাত্রায় ‘তাণ্ডব’ হতে যাচ্ছে এক মাইলফলক। প্রথম সিনেমাতেই দেশের সবচেয়ে বড় তারকার বিপরীতে, ঈদের মতো বাণিজ্যিক সময়ের মুক্তিতে, এমন সুযোগ খুব কম তারকাই পান। সিনেমার ট্রেলার, পোস্টার, এবং গান ইতোমধ্যে আলোচনায় এসেছে। এখন শুধু অপেক্ষা বড় পর্দায় সাবিলা-শাকিব জুটির রসায়ন দেখার।
ঢাকা/রাহাত/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দর্শণার্থীদের পদভারে মুখর রাঙামাটি
ঈদের টানা ছুটিতে রাঙামাটির বিনোদন কেন্দ্রগুলো এখন দর্শণার্থীদের পদভারে মুখর। ঈদের পরদিন থেকেই প্রকৃতির রূপ দেখতে হাজারো পর্যটক আসতে শুরু করেছেন পার্বত্য এ জেলায়। এখানকার বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক, আরণ্যতে ভ্রমণপিপাসুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
রবিবার (৮ জুন) সকাল থেকেই রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুতে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়ছে। দলে দলে পর্যটকদের ঝুলন্ত সেতুতে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। তাদের অনেকেই এসেছেন পরিবারের সঙ্গে। পর্যটকদের অনেকে কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার করছেন। হ্রদ-পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করে যান্ত্রিক জীবন একঘেয়েমি দূর করছেন তারা।
পলওয়েল পার্কেও ছিল পর্যটকদের সরব পদচারণা। তারা পার্কের ভেতরে থাকা বিভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। শিশুরা টয় ট্রেন ও দোলনাতে চড়ে আনন্দ করে।
আরো পড়ুন:
কুয়াকাটায় কাঙ্ক্ষিত পর্যটক নেই
পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি
রাজশাহী থেকে ঘুরতে আসা নূর হোসেন বলেন, “ঈদের ছুটি কাজে লাগাতে বন্ধুরা মিলে রাঙামাটি ঘুরতে আসলাম। চমৎকার জায়গা। শান্ত প্রকৃতি, হ্রদের জলও শান্ত ও স্বচ্ছ। এমন সৌন্দর্য বাংলাদেশের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে, তা নিজের চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না।”
ঢাকা থেকে আসা এক নবদম্পতি বলেন, কয়েকদিন আগেই বিয়ে হয়েছে, ঈদের ছুটিতে তাই রাঙামাটি চলে আসলাম। শান্ত প্রকৃতি দেখে ভালো লাগছে। সুবলং ঘুরতে গিয়ে হ্রদের দুই পাশের পাহাড় খুব ভালো লেগেছে।
প্রিয়াংকা দে নামে এক পর্যটক বলেন, “আরণ্যক, পলওয়েল পার্ক এই জায়গাগুলো ঘোরা শেষ, এবার কাপ্তাই হ্রদে ভ্রমণে যাচ্ছি। হ্রদের সৌন্দর্য আমাদের বিমোহিত করবে এমন আশাই করছি।”
পর্যটন নৌযান ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, “ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে পর্যটকরা রাঙামাটি আসতে শুরু করেছেন। আশা করছি, পুরো সপ্তাহ ভালো পর্যটক পাব।”
এদিকে, রাঙামাটি শহরের অধিকাংশ হোটেল-মোটেলে বুকিং বেড়েছে। হোটেল হিল পার্কের সত্ত্বাধিকারী স্বপন শীল বলেন, “ঈদের ছুটিতে পর্যটক হবে সেটি আমরা আগেই ধারণা করেছিলাম। ঈদের আগে আমাদের প্রায় ৭০ শতাংশ রুম বুকিং হয়। আগামী কয়েকদিনও ভালো পর্যটক হবে।”
রাঙামাটি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, “পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। আমাদের যে টার্গেট ছিল ঈদকে ঘিরে, আশা করছি, তা পূরণ হবে। সোমবার (৯ জুন) থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত আমাদের ৮০ শতাংশ রুম অগ্রিম বুকিং আছে। আশা করছি এই মৌসুমে আমাদের বেশ ভালো ব্যবসা হবে।”
ঢাকা/শংকর/মাসুদ