ঈদের আগে এক সপ্তাহ অনেকটা পর্যটক শূন্য ছিল কুয়াকাটা। ঈদের দিনও তেমন পর্যটকের আগমন ঘটেনি দেশের অন্যতম এই পর্যটনকেন্দ্রে। তবে, দ্বিতীয় দিনের শুরুতে কিছুটা বেড়েছে পর্যটকের উপস্থিতি। সেটিও কাঙ্ক্ষিত নয় বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। 

রবিবার (৮ জুন) সকালে দেখা যায়, অল্প সংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতি রয়েছে সৈকতের জিরো পয়েন্টে। আগত পর্যটকরা সমুদ্রের ঢেউয়ে গা ভাসিয়ে আনন্দ করছিলেন। অনেককে ফুটবল খেলে এবং প্রিয়জনের হাত ধরে ঘুরে দেখছিলেন সৈকতের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত। অনেককেই ঘোড়া, ওয়াটারবাইক, মোটরসাইকেলে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে। 

এদিকে, পর্যটক আসায় বিগত দিনের তুলনায় বিক্রি বেড়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠাগুলোতে। পর্যটকদের নিরপত্তায় সৈকত এলাকায় ট্যুরিষ্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

আরো পড়ুন:

পর্যটক বরণে প্রস্তুত রাঙামাটি

তিন শর্তে খুলল রুমা ও থানচির পর্যটন

ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে আসা পর্যটক ইসমাইল হোসেন বলেন, “আজ সকালে কুয়াকাটা এসে পৌঁছেছি। হোটেলে জিনিসপত্র রেখে সোজা সৈকতে এসেছি। দখিনা বাতাস বইছে। ইচ্ছে করছে, ছাতা বেঞ্চিতেই ঘুমিয়ে যাই। এ এক দারুণ অনুভূতি।” 

টাঙ্গাইল থেকে আসা মেহেরাব হোসেন বলেন, “আমরা পাঁচ বন্ধু কুয়াকাটায় এসেছি। কিছুক্ষণ আগে সমুদ্রে গোসল শেষ করেছি। অনেক আনন্দ করেছি। এখন বালু নিয়ে খেলা করছি। আমাদের এই ঈদের সময়টা বেশ দারুন কাটছে। কুয়াকাটার হোটেল ভাড়া তুলনামূলকভাবে একটু বেশি মনে হয়েছে।”

ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটার (টোয়াক) সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, “বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবছর কুয়াকাটা পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। ঈদের আগের এক সপ্তাহ অনেকটা পর্যটক শূন্য ছিল কুয়াকাটা। আশা করছি, সোমবার থেকে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বাড়বে। আমরা আগত পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি।”

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের ইন্সপেক্টর তাপস চন্দ্র বলেন, “কোনো ধরণের হয়রানি কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেজন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সদস্যরা টহল দিচ্ছেন। থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশের সদস্যরাও মোতায়েন আছেন।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর যটক

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • পর্যটন শিল্প বিকাশে আইকন গ্লোবাল ট্যুর অপারেটর আল মামুন
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া, কুকুর ও গরু, স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু