শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধের যেকোনো দিন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে স্বাগত জানাই।
রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরেই নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ বা পথনকশা ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিল। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা তাদের আশ্বস্ত করবে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফতে মজলিস প্রভৃতি প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার বিএনপি ও সমমনা দলগুলো এপ্রিলে নির্বাচনের যৌক্তিকতা ও বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এদের মধ্যে বিএনপি ওই দিন রাতেই স্থায়ী কমিটির বৈঠক করে ডিসেম্বরে নির্বাচন করার দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে আগে বলা হয়েছিল, নির্বাচন আগামী বছরের জুনের মধ্যে হবে। এখন সেই সময় এগিয়ে আনা হয়েছে এপ্রিলের প্রথমার্ধে। আগের ঘোষণার চেয়ে এটা অনেক বেশি নির্দিষ্ট। প্রধান উপদেষ্টা তাঁর ভাষণে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন।
নির্বাচন ডিসেম্বর, জুন না এপ্রিল—এই বিতর্কের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো একটি অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান, যাতে ধর্মবর্ণ–নির্বিশেষে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ স্বেচ্ছায় ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে পারেন; যার মাধ্যমে হতে পারে সত্যিকার অর্থে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর দীর্ঘ ভাষণে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করা, রাষ্ট্রীয় সংস্কার ও জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচারের ওপর জোর দিয়েছেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তারও বিবরণ দিয়েছেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে ছিল রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান ও চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল পরিচালনার ভার বিদেশি সংস্থার কাছে হস্তান্তরের বিষয়ও।
প্রধান উপদেষ্টা সরকারের তিন লক্ষ্য বা এজেন্ডার কথা বলেছেন—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। এ নিয়ে কারও দ্বিমত নেই। মাঠে সক্রিয় থাকা কোনো দল সংস্কার ও বিচারের বিরোধিতা করেনি। যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা দল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, তারা নীতিনির্ধারকদের কোনো কাজ বা পদক্ষেপের সমালোচনা করতেই পারেন। এর বিপরীতে সরকারের যেসব যুক্তি আছে, সেটাও তারা উপস্থাপন করতে পারে। কিন্তু কোনোভাবে রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বকে সরকারের প্রতিপক্ষ ভাবা ঠিক নয়।
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে বিতর্ক আছে, এটাও আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে পারে; এর প্রধান ছাড়া কেউ সরকারের অংশ নন। প্রধান উপদেষ্টা এপ্রিলের প্রথমার্ধের নির্বাচনের কথা বলেছেন। বিএনপিসহ বেশ কিছু দল ডিসেম্বরের কথা বলেছে। মাত্র তিন-চার মাসের ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে সরকার হয়তো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তাকে সামনে আনবে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন না থাকলে কোনো সংস্কারই বাস্তবায়িত হবে না।
অতএব, নির্বাচনের বিষয়ে দুই পক্ষ যখন এতটা এগিয়ে এসেছে, তখন বাকিটাও তারা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারবে বলে আশা করা যায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
সিএসই-৫০ সূচক সমন্বয়, কার্যকর ১১ নভেম্বর
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সিএসই-৫০ সূচক সমন্বয় করা হয়েছে। সিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পারফরমেন্সের ভিত্তিতে এ সূচক সমন্বয় করা হয়।
সমন্বিত সূচকে তিনটি কোম্পানি নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে। আর বাদ পড়েছে তিনটি কোম্পানি। সমন্বয় পরবর্তী সূচক আগামী ১১ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
আরো পড়ুন:
ডিএসইতে সূচক কমলেও সিএসইতে বেড়েছে
কমোডিটি এক্সচেঞ্জ পরীক্ষামূলক চালু ডিসেম্বরে, নতুন দিগন্ত উন্মোচনের অপেক্ষা
সোমবার (৩ নভেম্বর) সিএসই থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তথ্য মতে, সিএসই-৫০ সূচকে নতুন করে যুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলো হলো- বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি, মারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি।
আর ওই সূচক থেকে বাদ যাওয়া কোম্পানিগুলো হলো- এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ পিএলসি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
উল্লেখ, সিএসই-৫০ ইনডেক্স এ অর্ন্তভুক্ত কোম্পানিগুলোর মূলধন বাজারের মোট নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর মূলধনের শতকরা প্রায় ৭২.৭৪ ভাগ, ফ্রি-ফ্লোট বাজার মূলধন সব নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর ফ্রি-ফ্লোট বাজার মূলধনের শতকরা ৭০.৯৮ ভাগ এবং সব নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর বিগত ছয় মাসের (৩০ জুন, ২০২৫ পর্যন্ত) অ্যাভারেজ ডেইলি টার্নওভার ৪৯.১২ ভাগ।
ঢাকা/এনটি/মেহেদী