গাড়ি চুরি হয়ে যাওয়ার পর পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন যুক্তরাজ্যের এক দম্পতি। কিন্তু পুলিশ ব্যস্ততার কথা বলে গাড়ি চুরির ঘটনা নিয়ে তদন্ত করতেই আগ্রহী ছিল না। বাধ্য হয়ে গাড়ি উদ্ধারে নিজেরাই মাঠে নামেন ওই দম্পতি। গাড়ির অবস্থান শনাক্ত করে নিজেদের গাড়ি নিজেরাই চুরি করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য টাইমসে এ দম্পতি এবং তাঁদের চুরি যাওয়া গাড়ি উদ্ধার করা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ মাসের শুরুতে মিয়া ফর্বস পিরি ও মার্ক সিম্পসন দম্পতির জাগুয়ার ই-পেস গাড়িটি তাঁদের পশ্চিম লন্ডনের ব্রুক গ্রিনের বাড়ি থেকে চুরি যায়।

চুরি ঠেকাতে তাঁদের গাড়িটিতে এমন একটি গোপন নিরাপত্তাযন্ত্র লাগানো ছিল, যেটি গাড়ির ইঞ্জিন চালু হতে বাধা দেয়। সঠিক পিন কোড, প্যাডেল কম্বিনেশন বা বোতামের সিকোয়েন্স ব্যবহার করে কেবল গাড়ির ইঞ্জিন চালু করা যায়। গাড়িতে এয়ারট্যাগ লোকেটরও সংযুক্ত ছিল। এই যন্ত্রের সাহায্যে গাড়িটি কোথায় আছে, তা–ও জানা যায়।

এত সব নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকার পরও একদিন তাঁরা আবিষ্কার করেন, গাড়িটি তাঁদের বাড়ি থেকে উধাও হয়ে গেছে। গাড়ি চুরি হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে সেটিকে অনুসরণ করে তাঁরা পশ্চিম লন্ডনের চিজউইকে পৌঁছান এবং সব তথ্য নিয়ে পুলিশকে ফোন করেন।

কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অন্যান্য মামলা নিয়ে তারা খুবই ব্যস্ত। তাই তাঁদের গাড়ি চুরি নিয়ে কবে নাগাদ তদন্ত করা সম্ভব হবে, তা পুলিশ নিশ্চিত করে বলতে পারছে না।

চুরি ঠেকাতে তাঁদের গাড়িটিতে এমন একটি গোপন নিরাপত্তাযন্ত্র লাগানো ছিল, যেটি গাড়ির ইঞ্জিন চালু করতে বাধা দেয়; সঠিক পিন কোড, প্যাডেল কম্বিনেশন বা বোতামের সিকোয়েন্স ব্যবহার করে কেবল গাড়ির ইঞ্জিন চালু করা যায়। গাড়িতে এয়ারট্যাগ লোকেটরও সংযুক্ত ছিল। এই যন্ত্রের সাহায্যে গাড়িটি কোথায় আছে, তা জানা যায়।

ওই দম্পতি ৪ জুন প্রথম গাড়ি উধাও হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। গাড়িতে সংযুক্ত এয়ারট্যাগের তথ্যানুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত ৩টা ২০ মিনিট পর্যন্ত গাড়িটি ওই দম্পতির বাড়ির বাইরে পার্ক করা ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিজউইকে সেটিকে দেখতে পাওয়া যায়। পুলিশকে না নিয়েই তাঁরা দ্রুত সেখানে চলে যান।

গাড়িটি পাওয়া যায় মূল সড়কের পেছনের দিকে একটি নিরিবিলি গলিতে। চোরের দল গাড়িটির ভেতরের দিকের কিছু অংশ ও কার্পেট ছিঁড়ে ফেলেছে। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, তারের মাধ্যমে তাঁরা গাড়িটি চালু করার চেষ্টা করেছিল।

লিংকডইনে এক পোস্টে পিরি বলেন, ‘মনে হয়েছিল, পুলিশের কোনো আগ্রহ নেই। নিজেদের গাড়ি নিজেরাই চুরি করে আনা খানিকটা মজারই।’

তবে কাজটি করা ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন বলে জানান এই নারী। তিনি বলেন, ‘কিন্তু আদৌ কি এমনটা করা উচিত হবে—আমরা এমনটা ভাবতে বাধ্য হয়েছিলাম। এটা স্বাভাবিক কি না, সেটাই শুধু নয়, বরং এটা কতটা ন্যায়সংগত।’

‘মনে হয়েছিল, পুলিশের কোনো আগ্রহ নেই। নিজেদের গাড়ি নিজেরাই চুরি করে আনা খানিকটা মজারই।’মিয়া ফর্বস পিরি, চুরি যাওয়া গাড়ির মালিক

পিরি দম্পতির ধারণা, চোরের দল একটি ‘ফ্ল্যাট বেড’ ট্রাকে তুলে তাঁদের গাড়িটি চুরি করে নিয়ে যায়।

এ দম্পতি তাঁদের গাড়ি উদ্ধার করার পর মেট্রোপলিটন পুলিশ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছে, পরে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি ফরেনসিক দল পাঠানো হবে।

দ্য টাইমসকে পিরি বলেন, ‘যখন আমরা গাড়িটি খুঁজে পেয়েছি, অনেকেই সেটি স্পর্শ করেছেন।’ পুলিশ বলেছে, তারা কার্পেটের নিচে এবং ফিউজ বক্সে ছাপ আছে কি না, দেখতে পরীক্ষা করবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

স্টিভ জবসের মডেল কন্যাকে কতটা জানেন?

মার্কিন ফ্যাশন মডেল ইভ জবস। অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবসের কন্যা তিনি। স্টিভ জবস ও লরেন পাওয়েল জবস দম্পতির কন্যা ইভ।

কয়েক দিন আগে বয়সে ছোট প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ২৭ বছরের ইভ। তার বরের নাম হ্যারি চার্লস। যুক্তরাজ্যের নাগরিক হ্যারি অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ী অশ্বারোহী। বয়সে ইভের চেয়ে এক বছরের ছোট হ্যারি। গ্রেট ব্রিটেনে এ জুটির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। 

 

ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইভের জাঁকজমকপূর্ণ বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধনাঢ্য পরিবারের লোকজন। এ তালিকায় রয়েছেন—তারকা শেফ ব্যারনেস রুথ রজার্স, বিল গেটসের মেয়ে জেসিকা, রোমান আব্রামোভিচের মেয়ে সোফিয়া প্রমুখ। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা উত্তরাধিকারীর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের বিলাসবহুল মিনিবাসের স্রোত বইছিল বিয়ের ভেন্যুতে।

 

জাকজমকপূর্ণ বিয়েতে কত টাকা খরচ হয়েছে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। সংবাদমাধ্যমটিকে প্রয়াত স্টিভ জবসের স্ত্রী লরেন পাওয়েল জবস বলেন, “ইভ-হ্যারির বিয়েতে ৫ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯০ কোটি ২৮ লাখ টাকার বেশি)। 

 

১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন স্টিভ জবস। এ সংসারে তাদের তিন সন্তান। ইভ এ দম্পতির কনিষ্ঠ কন্যা। ১৯৯৮ সালের ৯ জুলাই ক্যালিফর্নিয়ায় জন্ম। তার বড় বোন এরিন, ভাইয়ের নাম রিড। লিসা নামে তার একটি সৎবোনও রয়েছে।

 

ইভা পড়াশোনা করেছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০২১ সালে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং সমাজ (সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড সোসাইটি) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। একই বছর প্যারিসে ‘কোপের্নি’ সংস্থার হাত ধরে মডেলিং দুনিয়ায় পা রাখেন। মডেলিং জগতে পা রেখেই চমকে দেন স্টিভ-তনয়া। 

 

অনেকে নামিদামি ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেছেন ইভ। বিখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুতকারী সংস্থা লুই ভিতোঁরের মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। মডেলিংয়ের পাশাপাশি অশ্বারোহী হিসাবেও খ্যাতি রয়েছে ইভের। এক সময় বিশ্বের ২৫ বছরের কম বয়সি ১ হাজার সেরা অশ্বারোহীর মধ্যে পঞ্চম স্থানে ছিলেন তিনি।

 

মাত্র ছয় বছর বয়সে ঘোড়ার পিঠে চড়ে দৌড় শুরু করেছিলেন স্টিভ জবস তনয়া। ঘোড়ায় চড়ার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মেয়ে যাতে পড়াশোনায় মন দেয়, সে দিকে বরাবরই সজাগ দৃষ্টি ছিল ইভের বাবা-মায়ের। তবে গ্রীষ্মাবকাশ ও বসন্তের ছুটির সময়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি পেতেন ইভ। 

 

ইভ যেখানে অশ্বারোহণের প্রশিক্ষণ নেন, সেই জায়গার মূল্য দেড় কোটি ডলার। ইভ প্রশিক্ষণ শুরু করার পর তার মা ওই জায়গা কিনে নিয়েছিলেন। তবে মডেল হওয়ার কোনো পরিকল্পনা কখনো ছিল না ইভের। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “আগে কখনো মডেলিং করিনি। তবে প্রস্তাব পেয়ে ঘাবড়ে যাইনি। আমার মনে হয়েছিল, কেন নয়? এই প্রস্তাব আমাকে আকৃষ্ট করেছিল।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ