মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে ওমানের প্রচেষ্টা
Published: 14th, June 2025 GMT
ইরানে নজিরবিহীন বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। জবাবে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানও। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান এ সামরিক উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করছে ওমান।
শনিবার (১৪ জুন) আল-জাজিরার এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতের জানায়, ইসরায়েল-ইরান সংঘর্ষের জেরে সৃষ্ট ‘বিপজ্জনক সামরিক উত্তেজনা’ নিরসনে কূটনৈতিক সমাধান খুঁজতে চেষ্টা করা হচ্ছে। ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ বদর বিন হামাদ আল বুসাইদি একাধিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে ফোনালাপ করেছেন।
ইসরায়েলের হামলাকে “অবৈধ, অযৌক্তিক এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি” আখ্যায়িত করে তিনি টেলিফোন সংলাপগুলোতে এই আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানান।
ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এই সংঘর্ষ কেবল একটি দেশের ওপর নয়, গোটা অঞ্চলের শান্তি ও সার্বভৌম স্বার্থের ওপর হুমকি সৃষ্টি করেছে।”
তিনি বলেন, “রক্তপাত, ধ্বংস ও প্রাণহানি এড়াতে এই অঞ্চল ও জনগণের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে ইসরায়েলের সরাসরি ইরানি ভূখণ্ডে হামলার মাধ্যমে।
শুক্রবার ভোরে ইরানের সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা স্থগিত করেছে তেহরান। রবিবার ওমানের মাসকাটে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান জানিয়েছে, ‘পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত’ আলোচনায় অংশ নিচ্ছে না তারা। যদিও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানকে আবারও আলোচনায় ফিরতে আহ্বান জানিয়েছে।
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ