যশোরের অভয়নগর থেকে এক যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার নাউলী গ্রামের চান্দের বিলের একটি মাছের ঘেরের পাড় থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে।

ওই যুবকের নাম এস এম হাসান (৩০)। তিনি উপজেলার নাউলী গ্রামের হাবিবুর রহমান শেখের ছেলে। তিনি কুয়েতপ্রবাসী ছিলেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন।

নিহত এস এম হাসানের বড় ভাই খুলনা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মুন্না হোসেন বলেন, তাঁর ভাই হাসান সাত বছর ধরে কুয়েতে ছিলেন। কুয়েতে তাঁর ব্যবসা আছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর কুয়েতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। হাসান প্রতিদিন অনেক রাত পর্যন্ত চাচাতো ভাই ও বন্ধুদের সঙ্গে নাউলী বাজারে আড্ডা দিতেন। গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বাড়ি ফেরেন। এই সময় হাসান বাড়ি ফেরেননি। রাত তিনটার দিকে একজন তাঁকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে জানান, হাসান রাতে বাড়ি ফেরেননি। পরে বাড়ির কাছেই চান্দের বিলের একটি মাছের ঘেরের পাশে তাঁর গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়।

মুন্না হোসেন আরও বলেন, ‘এলাকায় আমার ভাইয়ের কোনো শক্র ছিল না। কারা এবং কেন তাকে হত্যা করা হলো বুঝতে পারছি না।’

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল আলিম বলেন, এস এম হাসানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ