সুদের টাকার জন্য গাছে বেঁধে নির্যাতন
Published: 16th, June 2025 GMT
শেরপুরের শ্রীবরদীতে সুদের টাকার জন্য নুর আমিন (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের ভাটিলংগরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নুর আমিন ভাটিলংগরপাড়ার নুর ইসলামের ছেলে। নির্যাতনের খবর পেয়ে শ্রীবরদী থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু, তার আগেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সমাধান হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের জলিল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে মাসিক ১০ শতাংশ হারে সুদে এক লাখ টাকা নেন নুর আমিন। সুদের টাকা কয়েকমাস নিয়মিত দিয়েছিলেন তিনি। পরে সুদের টাকা অনিয়মিত হওয়ায় তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও কয়েক দফা সালিশ বৈঠকও হয়। একপর্যায়ে টাকা না পেয়ে রাস্তা থেকে নুর আমিনের একটি মোটরসাইকেল আটকে রাখেন জলিল। গত এক বছর ধরে মোটরসাইকেলটি জলিলের বাড়িতেই আছে। সম্প্রতি সুদের টাকার জন্য নুর আমিনকে আবার চাপ দেন জলিল। এর জেরে রবিবার তাকে বাজার থেকে তুলে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ।
এ বিষয়ে নুর আলম বলেন, ‘‘সুদের টাকার জন্য আমার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি জলিল নিয়ে গেছে। সে সময় বলেছিল, তার আর কোনো দাবি নাই। কিন্তু, এখন আবার টাকা দাবি করছে।’’
আব্দুল জলিল মিয়া বলেন, ‘‘নুর আলমের কাছে অনেকদিন ধরে টাকা পাই। তাই তাকে বাজার থেকে ধরে এনেছি। তবে, কোনো মারধর করিনি; স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়িতে রেখে দিয়েছিলাম। যখন আটকাতে পারছিলাম না, তখন বেঁধে রেখেছিলাম। পরে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের আশ্বাসে তাকে ছেড়ে দিয়েছি।’’
খড়িয়া কাজেরচর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা বলেন, ‘‘খবর পেয়ে আব্দুল জলিলের বাড়িতে গিয়ে দেখি, নুর আমিনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে দুপক্ষকে সম্মত করি। আর বেঁধে রাখার ঘটনায় জলিলকে সামাজিকভাবে তিরস্কার করা হয়েছে।’’
শ্রীবরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার জাহিদ বলেন, ‘‘গাছে বেঁধে রাখার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু, ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়নি। তার আগেই স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে বিষয়টি সমঝোতা হয়েছে বলে জেনেছি। এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিত দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/তারিকুল/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ র ট ক র জন য ন র আম ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।