প্রাইভেট পড়তে যাওয়া শিশুর রক্তাক্ত দেহ মিলল গোয়ালঘরে
Published: 16th, June 2025 GMT
নেত্রকোনার মদন উপজেলায় প্রতিদিনের মতো ছয় বছরের শিশু শোয়াইব প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল বাড়ির পাশে শিক্ষকের কাছে। তবে সময়মতো ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। একপর্যায়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির গোয়ালে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাকে। এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়।
সোমবার উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের দেওসহিলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটি গ্রামের সবুল্লাহ’র ছেলে। তিনি জানান, ‘ছেলে প্রাইভেট পড়তে পাশের বাড়ি শিক্ষকের কাছে গিয়েছিল। সাড়ে ৯টার দিকে খবর আসে, তার রক্তাক্ত দেহ পাশের বনার চৌধুরীর গোয়ালে পড়ে আছে। তার দেহে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমার নিষ্পাপ ছেলেকে কেন হত্যা করা হয়েছে জানি না। আমার সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই। আমি এর বিচার চাই।’
নারী শিক্ষক পলাশী আক্তারের ভাষ্য, ‘প্রতিদিনের মতো শোয়াইব আমার কাছে সোমবার ভোরে প্রাইভেট পড়তে আসে। সে বইগুলো রেখে পাশের জাহাঙ্গীরের দোকানে মজা আনতে চলে যায়। দেরি হওয়ায় আমি কেজি স্কুলে চলে গিয়েছিলাম। পরে তার হত্যার খবর পাই।’
ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর বলেন, ‘শোয়াইব আমার কাছ থেকে সকালে সিগারেট কিনে নেয়। কার জন্য নিয়েছে, আমি তা জানি না।’
সোমবার সকালে গোয়াল পরিষ্কার করতে গিয়ে শোয়াইবকে শুয়ে থাকা অবস্থায় পান বলে দাবি করেন বনার চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমি তাকে ধরলে কোনও সাড়া দেয়নি। ফলে চিৎকার শুরু করি। এ সময় পরিবারের লোকজন এসে তাকে নিয়ে যায়।’
এ বিষয়ে মদন থানার ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, দেওসহিলা গ্রামে শিশু শোয়াইবের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নেত্রকোনায় মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন ত রক ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।