ট্রলার ডুবি: রাতভর সমুদ্রে ভাসছিল ৩ জেলে
Published: 17th, June 2025 GMT
আলকাচ মাঝি (২৫), খায়রুল ইসলাম (২৫), রাসেল (২৭) ও শামিম হাসান (৩৫) এই চার জেলে সোমবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় মাছ ধরতে বঙ্গোপসাগরে যান।পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকত থেকে মঙ্গলবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় একটি ছোট ট্রলার নিয়ে তারা সাগরে যান। পায়রা বন্দরের খাম্বা বয়া এলাকায় ঝড়ের কারণে তাদের ট্রলারটি ডুবে যায়।
ট্রলারটির চার জেলে ফ্লুট ও বয়া নিয়ে সাগরে ভাসতে থাকেন। একটি মাছধরা ট্রলার রাতেই আলকাচ মাঝিকে উদ্ধার করলেও অপর তিন জেলে রাতভর সাগরে ভাসতে থাকেন।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানান, মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোরে তিন জেলে ভাসতে ভাসতে চর তুফানিয়ায় গিয়ে পৌঁছান। সেখানে তারা জ্ঞান হারান। তাদের অপর একটি ট্রলারের জেলেরা উদ্ধার করে দুপুরে কুয়াকাটার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আরো পড়ুন:
জেলের জালে ২৩ কেজির কোরাল, ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার, ১৩ জেলে আটক
আলকাচ মাঝি বলেন, “প্রচণ্ড বাতাস এবং ঢেউয়ের কারণে আমাদের ট্রলারটি ডুবে যায়। এরপর আমরা সাগরে ভাসতে শুরু করি। দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর একটি ট্রলার আমাকে উদ্ধার করে। অন্যদের অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পায়নি। আজ খবর পাই, তারা তুফানিয়া নামক একটি চড়ে উঠেছেন। পরে তাদের নিয়া আসা হয়।”
জেলে শামিম বলেন, “গতকাল সন্ধ্যায় মাছ শিকারের জন্য বঙ্গোপসাগরে গেলে হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলাটি ডুবে যায়। আমরা তিন জন বয়া ও ফ্লুট নিয়ে সমুদ্রে ভেসে একটি চরে গিয়ে উঠি। সেখানে আমরা জ্ঞান হারাই। হুঁশ ফিরলে দেখি, কুয়াকাটা হাসপাতালে আছি।”
কুয়াকাটা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের কেউ অবগত করেনি। বর্তমানে সমুদ্র বেশ উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’
পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।
এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।