চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বারৈয়াঢালা বন বিভাগের অধীন থাকা ইজারা দেওয়া চারটি ঝরনায় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব ব্যবস্থার মধ্যে আছে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাঁশ দিয়ে বেড়া, সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড, মাইকিং ও নিরাপত্তাকর্মী বাড়ানো।

বন বিভাগের বারৈয়াঢালা রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিটি ঝরনায় ইউনিফর্ম পরা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। তাঁদের দেওয়া হয়েছে হ্যান্ডমাইক ও ওয়াকিটকি।

১৪ জুন বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের ছোট দারোগাহাট এলাকায় সহস্রধারা-২ ঝরনায় গোসলে নেমে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এর পরদিন ওই ঝরনা থেকে ২ কিলোমিটার উত্তরে থাকা সীতাকুণ্ড মিরসরাই সীমানায় থাকা রূপসী ঝরনায় আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। ঝরনা দুটি বারৈয়ারঢালা বন বিভাগের অধীন।

এরপর অভিযোগ ওঠে ঝরনাগুলোতে পর্যটকদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই। গত বছর সহস্রধারা-২ ঝরনায় এক পর্যটক মারা যাওয়ার পর দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় একাধিক পরামর্শ দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী সাঁতার না জানা দর্শনার্থীদের পানিতে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। বিপজ্জনক স্থানগুলো চিহ্নিত করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

সহস্রধারা-২ ঝরনার পাড়ে থাকা কর্মী জয়নাল আবেদীন হ্যান্ডমাইকে বলছিলেন, এই লেক অত্যন্ত গভীর। পানি ঠান্ডা। লেকে নামা কিংবা সাঁতার কাটা সম্পূর্ণ নিষেধ। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লেকে নামলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে।

ঝরনায় একেবারে কাছে কথা হয় পর্যটক বিথী ইসলামের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। সে জন্য ইজারাদারের লোকজন তাঁদের দ্রুত ঝরনা এলাকা ছাড়তে তাগাদা দিচ্ছেন। এটা একটা ভালো দিক। যাঁরা ঝরনাপ্রেমী, তাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে ঝরনায় থাকলেও তাঁদের যেন তৃপ্তি মেটে না। ফলে কখন সময় চলে যায়, তা তাঁদের মনে থাকে না। এখন ইজারাদারের লোক সেই দিকটা খেয়াল রাখছেন।

পর্যটকদের হ্রদে না নামার জন্য মাইকিং করছে ইউনিফর্ম পড়া নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঝরন য়

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
  • অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
  • সেন্টমার্টিনের দ্বার খোলা, ছাড়েনি জাহাজ
  • পর্যটন শিল্প বিকাশে আইকন গ্লোবাল ট্যুর অপারেটর আল মামুন
  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • কক্সবাজার সৈকতে ঘোড়া, কুকুর ও গরু, স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটুকু