চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের স্থায়ী সমাধান চায় ভারত
Published: 27th, June 2025 GMT
চীনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের স্থায়ী সমাধান চায় ভারত। বৃহস্পতিবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং তার চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডং জুনকে এ কথা বলেছেন।
শুক্রবার ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,বৃহস্পতিবার কিংডাওতে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকের ফাঁকে সিং চীনের ডং জুনের সাথে দেখা করেন এবং একটি কাঠামোগত রোডম্যাপের মাধ্যমে দেশগুলোর মধ্যে সমস্যা সমাধানের উপর জোর দেন।
এতে বলা হয়েছে, “সিং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এবং এই বিষয়ে প্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত করে সীমান্ত সীমানা নির্ধারণের স্থায়ী সমাধানের উপরও জোর দেন।”
অতীতে ভারত সাধারণত বিরোধের দ্রুত সমাধান চাওয়ার মতো বাক্যাংশ ব্যবহার করতো। তাই নতুন করে স্থায়ী সমাধানের উপর নয়াদিল্লিরে এই জোর দেওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
বেইজিং জানিয়েছে, সীমান্ত বিরোধ বৃহত্তর সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে না এবং সংলাপের মাধ্যমে পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত পার্থক্যগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করা উচিত।
এই বৈঠক সম্পর্কে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো বিবৃতি এনো আসেনি এবং ভারতের বিবৃতি সম্পর্কে মন্তব্যের অনুরোধের তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিশ্বের দুটি সর্বাধিক জনবহুল দেশ-যারা উভয়েই পারমাণবিক শক্তিধর - হিমালয় পর্বতমালায় ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার অনির্ধারিত এবং বিতর্কিত সীমান্ত ভাগ করে নিয়েছে এবং এটি নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক দশকগুলোতে সীমান্তটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শান্তিপূর্ণ ছিল। তবে ২০২০ সালে তাদের সেনাদের মধ্যে এক মারাত্মক সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় এবং চারজন চীনা সেনা নিহত হয়। এই সংঘর্ষের ফলে চার বছরের সামরিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয় এবং উভয় সেনাবাহিনী পাহাড়ে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করে। গত বছরের অক্টোবরে পিছু হটার জন্য দুই দেশটি একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টাকা ও ক্ষমতা ব্যবহার করে দল গড়া মানুষ দেখতে চায় না: জোনায়েদ সাকি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছে, ‘গণ–অভ্যুত্থানের পর মানুষ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সত্যিকার নেতৃত্ব দেখতে চায়। টাকা ও ক্ষমতা ব্যবহার করে দল গড়া মানুষ দেখতে চায় না। এমনকি যাঁরা আজকের তুর্কি–তরুণ, তাঁরাও অনেকে এই গড্ডালিকায় গা ভাসাবেন, এমনটা আশা করেনি কেউ। মানুষ ভরসা রাখতে চায়।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জুলাই স্মৃতি হলে শ্রমিকনেতা ‘প্রয়াত মির্জা আবুল বশর স্মরণসভায়’ প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন।
সভায় তিনি সংবিধানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কার বিষয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নিয়ে সবাই এখনো ঐকমত্য হতে না পারলেও অগ্রগতির জায়গা রয়েছে। আবার কিছু মতপার্থক্যও আছে। অগ্রগতির দিকটা ছোট করার কিছু নেই। আবার যেসব বিষয়ে পার্থক্য আছে, যেসব বিষয়কে এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি এবং অপরিহার্য মনে করি, সেসব বিষয় বাস্তবায়নের জন্য লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে। মানুষ সে লড়াই চায়। মানুষ চায়, তাদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক।’
গণ–অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, গণ-অভ্যুত্থান শেষ হয়ে যায়নি। এ দেশে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার হবে, এমনটা কেউ ভাবেনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একজীবনে ১০ বছরের বেশি কেউ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, সংসদের উচ্চকক্ষের গঠনপ্রকৃতি কী হবে, বিচার বিভাগ স্বাধীন কীভাবে হবে, এমন নানা বিষয়ে ঐকমত্য হচ্ছে।
মির্জা আবুল বশর স্মৃতি পরিষদ এ স্মরণসভার আয়োজন করে। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ৬৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন চট্টগ্রাম জেলা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রাম জেলার যুগ্ম নির্বাহী সমন্বয়কারী মির্জা আবুল বশর। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে মির্জা আবুল বশরের রাজনৈতিক দর্শন ও কর্মপ্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, মির্জা আবুল বশর অত্যন্ত সৎ ও প্রজ্ঞাবান নেতা ছিলেন। মেহনতি মানুষের জন্য আমৃত্যু লড়াই করেছেন তিনি। অনেকে অনেক পেশা নেন, জীবনের ব্রত নেন, কর্তব্য ঠিক করেন। পরিবর্তনের জন্য কাজ করেন। এই কর্তব্য পালনের ডাকে আজকের তরুণেরা সাড়া দেবেন। তাঁরা টাকা কিংবা ক্ষমতার দাপটের কাছে পরাজিত হবেন না, বরং সেটাকে মোকাবিলা করে টিকে থাকবেন।
স্মরণসভায় ছাত্র, পেশাজীবী, শ্রমিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন মির্জা আবুল বশরের আত্মীয়স্বজন। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হওয়া এ সভা শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। সভার সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রামের আহ্বায়ক হাসান মারুফ রুমি।